বিদেশ ডেস্ক।।
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে রাওয়ালপিন্ডির এক আদালত। শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) আদিয়ালা কারাগারের এক অস্থায়ী আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারক কুদরতুল্লাহ এই রায় ঘোষণা করেন। এছাড়া তাদের প্রত্যেককে ৫ লাখ রুপি জরিমানাও করা হয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। ২০১৮ সালে শরিয়াহ আইন লঙ্ঘন করে বিয়ে করার অভিযোগে এ রায় দিয়েছেন আদালত। বুশরার সাবেক স্বামী খাওয়ার ফরিদ মানেকারের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে এই রায় দেওয়া হয়েছে।
ফরিদ মানেকারের অভিযোগ, তার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর নির্দিষ্ট সময় (ইদ্দত) পার না হতেই ইমরান খানকে বিয়ে করেন বুশরা বিবি, যা স্পষ্টতই শরিয়াহ আইনের লঙ্ঘন। রায় ঘোষণার সময় বিশেষ ওই আদালতে উপস্থিত ছিলেন ইমরান খান ও বুশরা বিবি। এসময় ইমরান সাংবাদিকদের বলেন, তাকে ও তার স্ত্রীকে হেনস্তা করার জন্যই এমন মামলা করা হয়েছে।
৭১ বছর বয়সী ইমরান খানের বিরুদ্ধে এটি তৃতীয় রায়। বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনের আগে এই রায় ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগে এই সপ্তাহেই, অর্থাৎ গত ৩১ জানুয়ারি রাষ্ট্রীয় উপহারসামগ্রী কম মূল্যে কিনে নেওয়ার অভিযোগে করা (তোশাখানা) মামলায় ইমরান ও বুশরাকে ১৪ বছর করে কারাদণ্ড দেয় বিশেষ একটি আদালত।
তার এক দিন আগে ৩০ জানুয়ারি রাষ্ট্রীয় গোপন নথি ফাঁসের মামলায় ইমরান খানকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই মামলায় ইমরান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশিকেও ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত। তবে এখন পর্যন্ত এটা স্পষ্ট নয় যে, ইমরান খানকে দেওয়া কারাদণ্ডাদেশগুলো একসঙ্গে চলবে কিনা। রাওয়ালপিন্ডির গ্যারিসন কারাগারে রয়েছেন ইমরান। আর তার স্ত্রী রয়েছেন ইসলামাবাদে তাদের নিজস্ব বাড়িতে। তবে ওই বাড়িকেই কারাগার ঘোষণা করা হয়েছে। এসব রয়ের কারণে সরকারি দায়িত্ব পালনে ১০ বছরের জন্য অযোগ্য ঘোষিত হয়েছেন ইমরান খান।
এ ঘটনার পর পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) এক বিবৃতিতে একে প্রহসনের বিচার বলেছে। পিটিআইয়ের দাবি, আদালতে তাড়াহুড়ো করে কয়েক ঘণ্টার শুনানির পর রায় দেওয়া হয়েছে। সাক্ষীদের জেরা করা হয়নি, যথাযথ কোনও প্রক্রিয়াও মানা হয়নি।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যেভাবে এই বিচারগুলো পরিচালিত হচ্ছে, তাতে ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাবে। ইমরান খানের মিডিয়া উপদেষ্টা জুলফি বুখারি রয়টার্সকে বলেছেন, এটি স্পষ্টতই আরেকটি মিথ্যা মামলা। এখানে কোনও সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়নি।ইদ্দতকালীন সময় পূর্ণ হওয়ার আগেই তাদের বিয়ে হয়েছিল কিনা তা নিয়ে আগে থেকেই বিতর্ক ছিল। যদিও শুরু থেকেই নিয়ম মেনেই বিয়ে হয়েছে বলে দাবি করে আসছেন ইমরান খান ও বুশরা বিবি।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা লঙ্ঘন: ইমরান খানের ১০ বছরের কারাদণ্ড