বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৭, ২০২৫

অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগ, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় পুঁজিবাজারে ‘আতঙ্ক’

by ঢাকাবার্তা ডেস্ক
অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগ, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় পুঁজিবাজারে ‘আতঙ্ক’

রিজার্ভের টানা পতনে আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি পরিশোধে অনিশ্চয়তা, রেমিট্যান্স প্রবাহে ঘাটতি, মূল্যস্ফীতি আর রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে উঠার মধ্যে পুঁজিবাজারে বড় দরপতন দেখল বিনিয়োগকারীরা।

ফ্লোর প্রাইসের বেশি দর থাকা কোম্পানির শেয়ারগুলো ফ্লোরমুখি হওয়ার ইঙ্গিতের মধ্যে নতুন করে বিনিয়োগ করতে চাইছেন না বিনিয়োগকারীরা। ফলে লেনদেন কমে নেমেছে সাত সপ্তাহের সর্বনিম্ন অবস্থানে।

সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে যেগুলোর শেয়ারদর ফ্লোর প্রাইসের চেয়ে বেশি, তার ১৩৫টিই দর হারিয়েছে, বেড়েছে কেবল ১২টির।

ডিএসইতে দিনভর হাতবদল হয়েছে কেবল ৩৬৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকার শেয়ার। এই লেনদেন গত ১৬ অগাস্টের পর সর্বনিম্ন। সেদিন লেনদেন হয়েছিল ৩৫১ কোটি ৫৩ লাখ ৮৯ হাজার টাকা।

এই লেনদেনের ৪০ শতাংশই হয়েছে ৪০টি কোম্পানিতে। দুইশরও বেশি কোম্পানির কার্যত কোনো ক্রেতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকার মধ্যেও ২৪ পয়েন্টের দরপতনে ডিএসইর সাধারণ সূচক ডিএসইএক্সকে নামিয়ে এনেছে ৬ হাজার ২৩৭ পয়েন্টে।

লেনদেনের মতোই সূচকের এই অবস্থানও গত ১৬ অগাস্টের পর সর্বনিম্ন। সেদিন ডিএসইর সার্বিক সূচক ছিল ৬ হাজার ২২০ পয়েন্টে।

আতঙ্কের নানা কারণ

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক সহসভাপতি আহমেদ রশিদ লালী এই দরপতনের জন্য একটি জাতীয় দৈনিকের একটি লেখাকে দায়ী করেছেন। তার দৃষ্টিতে ‘বাংলাদেশকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের বড় ধরনের পদক্ষেপ আসছে’, এমন লেখা ভাইরাল হওয়ার কারণে বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়েছেন। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা।

গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, “কয়েকটি কারণে আমাদের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে। আমাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির একটি বিষয় আছে। এর মধ্যে একটি পত্রিকায় লেখা হয়েছে এক সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বড় পদক্ষেপ আসছে। এই দুইয়ে মিলে জনমনে যে অস্থিরতা, তা বাজারেও আতঙ্ক তৈরি করেছে।

“দ্বিতীয়ত আমাদের অর্থনীতির যেসব সূচক আছে, যেমন রিজার্ভ, রেমিট্যান্স, সেগুলোর নিম্নমুখী। এর কারণেও আতঙ্ক বাড়ছে। বিনিয়োগকারীরা ভাবছেন, ‘একটু দেখি, কী হয়’।”

ফ্লোর প্রাইসের কারণে আড়াইশটির মতো কোম্পানির শেয়ারের দর কমতে না পারার কারণে লেনদেন আটকে যাওয়াও লেনদেন খরার কারণ বলে মনে করেন তিনি।

লালী বলেন, “বাজারের মধ্যে ১৫০-৬০টা ইনস্ট্রুমেন্টের লেনদেন হচ্ছে। এখানে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, ব্যক্তি খাতের বড় বিনিয়োগকারীদের ২০ থেকে ২২ হাজার কোটি টাকা আটকে আছে। তারা বিক্রিও করতে পারছে না, না পারলে সুইচিং করতে। এসব কারণে বাজারে আস্থার ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। কারণে বিনিয়োগকারীরা বসে আছে।“

নির্বাচনের আগে পুঁজিবাজারে গতি ফেরার আশাও দেখছেন না এই বিশ্লেষক। তিনি বলেন, “ভোট শেষে যখন একটি স্থিতিশীল সরকার আসবে, তখন মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি দূর হবে, আবার তখন ফ্লোর প্রাইস নিয়েও হয়ত বিএসইসি সিদ্ধান্তে আসবে, তখন বাজারে অংশগ্রহণ বাড়বে।”

ধাক্কা সবচেয়ে বেশি বীমা খাতে

মন্দা পুঁজিবাজারেও গত মাসে সাধারণ বীমা কোম্পানির শেয়ারদর অস্বাভাবিক হারে লাফাচ্ছিল। অন্যান্য খাতের দরপতনের মধ্যেও এসব কোম্পানির শেয়ারদর টানা বেড়ে চলেছিল। লেনদেনেও সবাইকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল খাতটি।

লেনদেনের দিক দিয়ে এদিনও সবার ওপরে সাধারণ বীমা। তবে ৪২টি কোম্পানির মধ্যে ৪০টিই দর হারিয়েছে। একটি আগের দিনের দরে এবং একটি দর বেড়ে লেনদেন শেষ করেছে।

আরও পড়ুনঃ ৩৫ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি করবে টিসিবি

You may also like

প্রকাশক : মানজুর এলাহী

সম্পাদক : হামীম কেফায়েত

ব‌ইচিত্র পাবলিশার্স
প্যারিদাস রোড, বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০
যোগাযোগ : +8801712813999
ইমেইল : news@dhakabarta.net