নির্বাচন ডেস্ক।।
আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে তিন শতাধিক প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা নির্বাচন কমিশনের (ইসি) শোকজের মুখে পড়েছেন। এদের মধ্যে শতাধিক হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী। প্রায় সমান সংখ্যক রয়েছেন প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থক। কোনও কোনও প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা একাধিকবার শোকজের মুখোমুখি হয়েছেন। প্রার্থিতা বাতিল হওয়া বা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোদের মধ্যেও কেউ কেউ ইসির শোকজ পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের সমন্বিত তালিকা ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির মাধ্যমে সিংহভাগ শোকজের ঘটনা ঘটেছে। এর বাইরে আচরণবিধি লঙ্ঘনের মাত্রা কিছুটা বেশি এমন ডজন খানের প্রার্থীকে নির্বাচন কমিশন সরাসরি তলব করেছে।
শোকজের মুখে পড়া বেশিরভাগ প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা দুঃখ প্রকাশের মধ্য দিয়ে পার পেয়েছেন। এর বাইরে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী ঝিনাইদহ-২ আব্দুল হাই ও চট্টগ্রাম-১৬ মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পাশাপাশি একই দলের বরগুনা-১ ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু ও কুমিল্লা-৬ আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারকে অর্থদণ্ড করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী
আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীদের মধ্যে যারা শোকজের মুখে পড়েছেন তারা হলেন- মাগুরা-১ আসনের সাকিব আল হাসান, খুলনা-৩ এস এম কামাল, বরিশাল-৫ আসনের জাহিদ ফারুক শামীম, ফরিদপুর-৩ আসনের শামীম হক, মাদারীপুর-৩ আসনের আব্দুস সোবহান গোলাপ, ফরিদপুর-১ আসনের আবদুর রহমান, নাটোর-২ আসনের মো: শফিকুল ইসলাম শিমুল, নাটোর-৩ আসনের জুনাইদ আহমেদ পলক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের র, আ, ম, উবায়দুল মোকতাদির, কুমিল্লা-৪ আসনে রাজী মোহাম্মদ ফখরুল, নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের গোলাম দস্তগীর গাজী, মেহেরপুর-১ ফরহাদ হোসেন, সিলেট-৫ আসনের মাসুক উদ্দিন আহমদ, সুনামগঞ্জ-১ রনজিত চন্দ্র সরকার, কক্সবাজার-৩ সাইমুম সরওয়ার কমল, চট্টগ্রাম-১৫ আবু রেজা মুহম্মদ নেজামুদ্দিন।
ঢাকা-১৯ ডা. মো. এনামুর রহমান, মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের মৃণাল কান্তি দাস, চট্টগ্রাম-১৬ মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, পটুয়াখালী-৪ মো. মহিবুর রহমান, গাজীপুর-২ জাহিদ আহসান রাসেল, লক্ষ্মীপুর-৩ মোহাম্মদ গোলাম ফারুক, রাজশাহী-১ ওমর ফারুক চৌধুরী, ঝালকাঠী-২ আমির হোসেন আুম, লক্ষ্মীপুর-২ নুর উদ্দিন নয়ন, নেত্রকোণা-১ মোশতাক আহমেদ রুহী, নরসিংদী-৫ রাজি উদ্দিন আহমেদ, ময়মনসিংহ-১১ কাজিম উদ্দিন আহমেদ, দিনাজপুর-৬ শিবলী সাদিক, নারায়ণগঞ্জ-৪ শামীম ওসমান, যশোর-৬ শাহীন চাকলাদার, নোয়াখালী-১ এইচ এম ইব্রাহিম, গাজীপুর-৫ মেহের আফরোজ চুমকি, ফেনী-২ নিজাম উদ্দিন হাজারী, রাজশাহী-৪ আবুল কালাম আজাদ, বরগুনা-২ সুলতানা নাদিরা, চাঁদপুর-২ মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া (২), ঝালকাঠী-১ ব্যারিস্টার মুহাম্মদ শাহজাহান ওমর, ভোলা-৩ নুরুন্নবী চৌধুরী, রংপুর-২ আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী, ময়মনসিংহ-৭ হাফেজ মো: রুহুল আমিন মাদানী, কুমিল্লা-২ সেলিমা আহমাদ, কক্সবাজার-৪ শাহীন আক্তার, শেরপুর-৩ এ মি এম শহিদুল ইসলাম।
চট্টগ্রাম-১১ এম এ লতিফ, সুনামগঞ্জ-৪ ড. মুহম্মদ সাদিক, মোলভীবাজার-৪ আব্দুস শহীদ, ঢাকা-৭ সোলায়মান সেলিম, যশোর-৫ স্বপন ভট্টাচার্য্য, কুমিল্লা-১ মো: আব্দুস সবুর, লক্ষ্মীপুর-১ আনোয়ার হোসেন খান, চট্টগ্রাম-৩ মাহফুজুর রহমান মিতা, ফেনী-১ আলাউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী, সিলেট-২ শফিকুর রহমান চৌধুরী, শেরপুর-১ আতিউর রহমান আতিক, সাতক্ষীরা-১ ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন, গাইবান্ধা-৫ মাহমুদ হাসান, নেত্রকোণা-৩ অসীম কুমার উকিল, ঢাকা-৮ আ হ ম বাহাউদ্দিন, সুনামগঞ্জ-৫ মহিবুর রহমান মানিক, রংপুর-৫ রাশেক রহমান, মুন্সীগঞ্জ-১ মহিউদ্দিন আহমেদ, ফরিদপুর-৩ শামীম হক।
নওগাঁ-১ সাধন চন্দ্র মজুমদার, ফরিদপুর-৪ কাজী জাফর উল্ল্যাহ, মানিকগঞ্জ-২ মমতাজ বেগম, ঢাকা-৯ সাবের হোসেন চৌধুরী, নওগাঁ-৩ সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তি, রাজবাড়ী-২ জিল্লুল হাকিম, পঞ্চগড়-১ নাঈমুজ্জামান ভূইয়াঁ, নওগাঁ-২ শহীদুজ্জামান সরকার, জয়পুরহাট-২ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, কুমিল্লা-৩ ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন, বরগুনা-১ ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু (২),নেত্রকোণা-২ আশরাফ আলী খান খসরু, বাগেরহাট-৩ হাবিবুন নাহার, কুমিল্লা-৬ আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার, পাবনা-১ শামসুল হক টুকু, শরীয়তপুর-২ এ কে এম এনামুল হক শামীম, সিরাজগঞ্জ-৫ আব্দুল মমিন মন্ডল, দিনাজপুর-৩ ইকবালুর রহিম, ঢাকা-১৪ মাইনুল হোসেন খান, ফরিদপুর-২ শাহাদাব আকবর, পটুয়াখালী-২ এস এম শাহজাদা।
নারায়ণগঞ্জ-৩ আবদুল্লাহ আল কায়দার হাসনাত, ঠাকুরগাঁও-২ মাজহারুল ইসলাম, ঝিনাইদহ-৪ আনোয়ারুল আজীম আনার, বগুড়া-১ শাহদারা মান্নান, টাঙ্গাইল-৬ আহসানুল ইসলাম টিটু, সিরাজগঞ্জ-৬ চয়ন ইসলাম, চট্টগ্রাম-১২ মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, ঝিনাইদহ-২ আব্দুল হাই, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ বদরুদ্দোজা মো: ফরহাদ হোসেন, চট্টগ্রাম-৭ হাছান মাহমুদ, টাঙ্গাইল-৭ খান আহমেদ শুভ, চট্টগ্রাম-১০ মহিউদ্দিন বাচ্চু, ঝিনাইদহ-২ তাহজীব আলম সিদ্দিকী, ঝিনাইদহ-৩ সালাউদ্দিন মিয়াজী, নাটোর-৪ সিদ্দিকুর রহমান পাটেয়ারী ও পঞ্চগড়-২ নুরুল ইসলাম সুজন।
এছাড়া দল থেকে মনোনয়ন পেলেও আসন সমঝোতার কারণে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেওয়া রংপুর-৩ তুষার কান্তি মন্ডল, লক্ষ্মীপুর-৪ ফরিদুন্নাহার লাইলী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ শাহজাহান আলম সাজু ও ময়মনসিংহ-৯ আব্দুস সালাম শোকজ খেয়েছেন। শোকজে পড়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তে প্রার্থিতা বাতিল হওয়া আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কক্সবাজার-১ সালাহ উদ্দিন আহমদও।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী
জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের লিয়াকত হোসেন খোকা, ঢাকা-২০ আসনের খান মোহাম্মদ ইসরাফিল, সুনামগঞ্জ-৪ আসনের পীর ফজলুর রহমান, জামালপুর-২ মোস্তফা আল মাহমুদ, সাতক্ষীরা-১ সৈয়দ দিদার বখত, ঢাকা-৪ সৈয়দ আবু হোসেন, নওগাঁ-২ অ্যাডভোকেট তোফায়েল হোসেন, মাগুরা-২ মুরাদ আলী, রংপুর-১ মকবুল হোসেন শাহরিয়ার ও মৌলভীবাজার-৩ আলতাফুর রহমান আচরণবিধি লঙ্ঘনে ইসির অনুসন্ধান কমিটির শোকজের মুখে পড়েছেন।
আসন সমঝোতার মাধ্যমে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা ঢাকা-৬ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী কাজী ফিরোজ রশীদও শোকজ খেয়েছেন।
অন্যান্য দল
এদিকে এনডিএমের খুলনা-৬ আসনের এস এম নেওয়াজ মোর্শেদ, ফরিদপুর-১ শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর ও কক্সবাজার-২ মোহাম্মদ শরিফ বাদশা, সুপ্রিম পার্টি গাজীপুর-২ এস এম জাহাংগীর আলম (২) এবং ওয়ার্কার্স পার্টি রাজশাহী-২ ফজলে হোসেন বাদশাও পড়েছেন শোকজের মুখে।
স্বতন্ত্র
স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে গাইবান্ধা-১ আসনের আফরুজা বারী, ফরিদপুর-২ আসনের জামাল হোসেন মিয়া, চাঁদপুর-৫ আসনের গাজী মঈনুদ্দিন, কক্সবাজার-৪ আসরে নুরুল আমিন সিকদার, ফরিদপুর-৪ আসনের মুজিবুর রহমান চৌধুরী, ময়মনসিংহ-৭ এ বি এম আনিসুজ্জামান, চট্টগ্রাম-১৫ আব্দুল মোতালেব, শেরপুর-৩ এস এম আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাঈম, মাদারীপুর-৩ মোসা. তাহমিনা বেগম, নেত্রকোণা-১ জান্নাতুল ফেরদৌস আরা, হবিগঞ্জ-৪ সৈয়দ সায়েদুল হক, সাতক্ষীরা-১ শেখ মুজিবুর রহমান, গাজীপুর-৫ আখতার উজ্জামান (২), নরসিংদী-৩ সিরাজুল ইসলাম মোল্লা, সুনামগঞ্জ-৫ শামীম আহমদ চৌধুরী, সুনামগঞ্জ-১ মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, রাজশাহী-২ অধ্যক্ষ মো. শফিকুর রহমান।
গাজীপুর-২ কাজী আলিম উদ্দিন (২), রংপুর-৫ জাকির হোসেন সরকার, ঢাকা-৫ কামরুল হাসান রিপন (২), রাজশাহী-৬ রাহেনুল হক, রংপুর-২ বিশ্বনাথ সরকার বিটু, পিরোজপুর-১ এ কে এম আউয়াল (সাইদুর রহমান), নওগাঁ-৩ ছলিম উদ্দিন তরফদার, নেত্রকোণা-৩ মঞ্জুর কাদের কোরাইশী, নেত্রকোণা-২ আরিফ খান জয়, টাঙ্গাইল-৭ মীর এনায়েত হোসেন মন্টু (৩), বরগুনা-১ খলিলুর রহমান, রবগুনা-১ মোহাম্মদ মতিয়ার রহমান, বরগুনা-১ রেজবি-উল-কবির, বরগুনা-১ মোহাম্মদ আব্দুল বারেক মাঝি, ময়মনসিংহ-৬ মো: আব্দুল মালেক সরকার, ময়মনসিংহ-১ মাহমুদুল হক সায়েম, চট্টগ্রাম-১২ সামশুল হক চৌধুরী, সিরাজগঞ্জ-৫ আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, বগুড়া-১ মোস্তাফিজুর রহমান শ্যামল (২), মানিকগঞ্জ-২ দেওয়ান জাহিদ আহমেদ, টাঙ্গাইল- ২ ইউনুছ ইসলাম তালুকদার, শেরপুর-১ ছানুয়ার হোসেন ছানু ও শরীয়তপুর-২ খালেদ শওকত আলী অনুসন্ধান কমিটির শোকজ পেয়েছেন।
আরও পড়ুন: ১৯৯১ সালেই আমার এমপি হওয়ার কথা ছিলো : হাজী মিলন