খেলা ডেস্ক।।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: শ্রীলঙ্কা ৪৯.৩ ওভারে ২৭৯/১০ ( মাদুশাঙ্কা ০*; দুষ্মন্ত চামিরা ৪, রাজিথা ০, আসালাঙ্কা ১০৮, থিকশানা ২১, ধনাঞ্জয়া ৩৪, ম্যাথুজ ০, সাদিরা ৪১, নিসাঙ্কা ৪১, মেন্ডিস ১৯, পেরেরা ৪)
সেঞ্চুরির পর আউট আসালাঙ্কা, ফিরলেন রাজিথাও
টপ অর্ডারের ব্যাটাররা ইনিংস বড় করতে পারেননি। চাপের সময় হাল ধরেছিলেন আসালাঙ্কা। জুটি গড়ে পুঁজি বাড়িয়ে নেন দলের। তুলে নেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। তিনি সেঞ্চুরে পেয়েছেন ১০১ বলে। সেঞ্চুরি করে পরের ওভারেই তানজিম সাকিবের বলে ছক্কা মেরে আরও চড়াও হয়েছিলেন তিনি। ছক্কা মেরে পরের বলে উঠিয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ আউট হয়েছেন ১০৮ রানে। তার ১০৫ বলের ইনিংসে ছিল ৬টি চার ও ৫টি ছয়। আসালাঙ্কা ফেরার পর নতুন নামা রাজিথাকেও আউট করেন তানজিম সাকিব। আসালাঙ্কার বিদায়েই মূলত লড়াই শেষ হয়ে যায় শ্রীলঙ্কার। চামিরা শেষ ব্যাটার হিসেবে রান আউট হলে শ্রীলঙ্কার ইনিংস শেষ হয় ২৭৯ রানে।
থিকশানাকে ফেরালেও ক্রিজে আছেন আসালাঙ্কা
ধনাঞ্জয়াকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙলেও লঙ্কানদের চাপে ফেলতে পারেনি বাংলাদেশ। বরং প্রান্ত আগলে লঙ্কানদের রান বাড়িয়ে নিতে থাকেন আসালাঙ্কা। থিকশানাকে নিয়েও উপহার দেন ৪৫ রানের জুটি। ৪৬তম ওভারে থিকশানাকে (২১) ক্যাচ আউট করে জুটি ভেঙেছেন শরিফুল। ততক্ষণে অবশ্য স্কোর ২৫৮ হয়ে গেছে।
৭৮ রানের জুটি ভাঙলেন মিরাজ
১৩৫ রানে দুটি উইকেট তুলে শ্রীলঙ্কাকে চেপে ধরার সুযোগ তৈরি করেছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে দারুণ ভাবে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে ধনাঞ্জয়া-আসালাঙ্কা জুটি। ৭৮ রানের জুটিতে স্কোর ছাড়ায় দুইশ। আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগে এই জুটি ভেঙেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। উইকেট ছেড়ে এসে খেলতে গিয়ে স্টাম্পড হয়েছেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। ফেরার আগে ৩৬ বলে করেছেন ৩৪।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথমবার টাইমড আউট ম্যাথুজ
সাদিরা সামারাবিক্রমা আউট হওয়ার পরও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ মাঠে ঢুকলেন। কিন্তু ক্রিজে পৌঁছাতে দেরি করলেন, হেলমেট বদলাতে গিয়ে নষ্ট করলেন সময়। নিয়ম অনুযায়ী উইকেট পড়ার কিংবা অন্য ব্যাটারের রিটায়ারের পর তিন মিনিটের মধ্যে নতুন ব্যাটারকে কিংবা অন্যপ্রান্তের ব্যাটারকে বল মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়। কিন্তু হেলমেট স্ট্র্যাপে সমস্যা বুঝতে পেরে সেটি বদলের জন্য নষ্ট করেন সময়। ম্যাথুজকে আউটের সিদ্ধান্ত জানান আম্পায়াররা। সমস্যার কথা তুলে ধরে তাদেরকে লঙ্কান ব্যাটার বুঝালেও মন গলেনি। আপিল তুলে নিতে সম্ভবত সাকিবদের কাছেও শরণাপন্ন হন ম্যাথুজ। বাংলাদেশ তাদের সিদ্ধান্তে অটল ছিল। কোনও বলের মুখোমুখি না হয়ে হতাশায় প্যাভিলিয়নে ফেরেন ম্যাথুজ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এই প্রথমবার এমন আউটের ঘটনা ঘটলো।
চার মারার পরের বলে সাকিবের শিকার সাদিরা
সাদিরা সামারাবিক্রমা ও চারিথ আসালাঙ্কার জুটি বাংলাদেশের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত ৬৩ রানে তাদের বিচ্ছিন্ন করা গেছে। ২৪তম ওভারে সাকিব আল হাসানের প্রথম বলে সুইপ করে শর্ট ফাইন লেগ দিয়ে বাউন্ডারি মারেন সাদিরা। পরের বলে ডিপ স্কয়ার লেগে মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ হন লঙ্কান ব্যাটার। ৪২ বলে চারটি চারে ৪১ রান করেন সাদিরা। ১৩৫ রানে চতুর্থ উইকেট হারালো শ্রীলঙ্কা।
সাদিরা-আসালাঙ্কা জুটিতে শ্রীলঙ্কার প্রতিরোধ
৭২ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর শ্রীলঙ্কা ঘুরে দাঁড়িয়েছে সাদিরা সামারাবিক্রমা ও চারিথ আসালাঙ্কার জুটিতে। ২০ ওভার শেষে আর কোনও উইকেট না হারিয়ে তাদের স্কোর ১১৩ রান।
প্রথম ওভারেই সাফল্য পেলো বাংলাদেশ। কুশল পেরেরাকে ইনিংসের ষষ্ঠ বলে মুশফিকুর রহিমের ক্যাচ বানান শরিফুল ইসলাম। তৃতীয় বলে চার মেরেছিলেন শ্রীলঙ্কার ওপেনার। বাংলাদেশি পেসারের এক্সট্রা বাউন্সের বল ড্রাইভ করেছিলেন পেরেরা। বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে ফার্স্ট স্লিপে দাঁড়ানো ফিল্ডারের সামনে দিয়ে বাঁহাতে দুর্দান্ত ক্যাচ ধরেন উইকেটকিপার। ৫ রানে প্রথম উইকেট হারালো শ্রীলঙ্কা।
টসে জিতে শ্রীলঙ্কাকে ব্যাটিংয়ে পাঠালো বাংলাদেশ
শিশিরের কারণে রাতে বল করা কঠিন হবে ভেবেই সাকিব আল হাসান আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তানজিম হাসান সাকিব মোস্তাফিজুর রহমানের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন। শ্রীলঙ্কা দলে দুটি পরিবর্তন, ধনঞ্জয়া ও কুশল পেরেরা ঢুকেছেন করুণারত্নে ও হেমন্তের বদলে।
এশিয়ার দুই প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা দিল্লিতে মুখোমুখি হচ্ছে। বায়ুদূষণের কারণে অনুশীলনে ভোগান্তির পর অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে নামছে তারা। গাণিতিকভাবে এখনও বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার আশা টিকে আছে লঙ্কানদের। অন্যদিকে সবার আগে সেমিফাইনালের স্বপ্ন ভাঙা বাংলাদেশের চোখ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। ২০২৫ সালে পাকিস্তানে হতে যাওয়া টুর্নামেন্টের টিকিট পেতে সাকিব আল হাসানদের শীর্ষ আটে থেকে বিশ্বকাপ শেষ করতে হবে। এখন তারা ৯ নম্বরে। টানা ছয় ম্যাচ হারের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসারও মিশন তাদের।
বাংলাদেশ: লিটন দাস, তানজিদ হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম (উইকেটকিপার), মাহমুদউল্লাহ, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), মেহেদী হাসান মিরাজ, তাওহীদ হৃদয়, তাসকিন আহমেদ, তানজিম হাসান, শরিফুল ইসলাম।
শ্রীলঙ্কা: পাথুম নিসাঙ্কা, কুশল পেরেরা, কুশল মেন্ডিস (অধিনায়ক, উইকেটকিপার), সাদিরা সামারাবিক্রমা, চারিথ আসালাঙ্কা, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, মাহিশ ঠিকশানা, কাসুন রাজিথা, দুষ্মন্ত চামিরা, দিলশান মাদুশাঙ্কা।
আরও পড়ুন: কোহলির রেকর্ড ছোঁয়া সেঞ্চুরির পর লজ্জার হার দক্ষিণ আফ্রিকার