খেলা ডেস্ক।।
হারতে হারতে শ্রান্তক্লান্ত ইংল্যান্ডকে সেমিফাইনালে দেখার আশা সম্ভবত অনেক আগেই ছেড়ে দিয়েছিলেন ক্রিকেট ভক্তরা। কিন্তু কাগজে কলমে শেষ চারে যাওয়ার ক্ষীণ সম্ভাবনা ছিল অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হওয়ার আগেও। সেটাও শেষ হয়ে গেলো কিছুক্ষণ আগে। আহমেদাবাদেই শুরু হয়েছিল ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ শিরোপা ধরে রাখার মিশন। সেখানেই চলতি বিশ্বকাপে ষষ্ঠ পরাজয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তারা হারালো চ্যাম্পিয়নের মর্যাদা। শনিবার নিজেদের সপ্তম ম্যাচ খেলতে নেমে তারা হেরে গেলো চিরশত্রু অস্ট্রেলিয়ার কাছে।
চলতি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড ব্যাটিংয়ে ভুগছে। ব্যাট হাতে তাদের এতটাই খারাপ অবস্থা যে, অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হওয়ার আগের পাঁচ ম্যাচে সর্বোচ্চ রান ছিল ২২৭, তিনটিতে দুইশও হয়নি। তবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে কিছুটা লড়াই করলো তাদের ব্যাটাররা। কিন্তু হারের বৃত্ত থেকে বের হতে পারলো না বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। অস্ট্রেলিয়া তাদের ৩৩ রানে হারিয়ে নিউজিল্যান্ডকে দুই পযেন্টে পেছনে ফেললো। তাতে সেমিফাইনালে তাদের খেলার স্বপ্ন আরও উজ্জ্বল হলো।
শনিবার আহমেদাবাদে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে মার্নাস লাবুশেনের হাফ সেঞ্চুরিতে ২৮৬ রান করে অস্ট্রেলিয়া। গত ম্যাচ বিবেচনায় প্রত্যাশিত স্কোর করতে পারেনি তারা। কিন্তু অ্যাডাম জাম্পার স্পিন জাদুতে এই রানই জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল। ইংল্যান্ডকে ৪৮.১ ওভারে ২৫৩ রানে অলআউট করে তারা।
ইংল্যান্ডকে প্রথম ধাক্কা দেন অবশ্য মিচেল স্টার্ক। প্রথম বলেই জনি বেয়ারস্টোকে খালি হাতে ফেরান জশ ইংলিসের ক্যাচ বানিয়ে। নিজের তৃতীয় ওভারে জো রুটকে (১৩) আবার উইকেটকিপারের গ্লাভসে বন্দি করান।
১৯ রানে ২ উইকেট হারিয়ে এবার চোখে সর্ষেফুল দেখেনি ইংলিশরা। ডেভিড মালান ও বেন স্টোকসের ব্যাটে সংগ্রহ একশ পার করে। মালান ফিফটি করার পরই থেমে যান। প্যাট কামিন্স তাকে ৫০ রানে আউট করেন, ভেঙে যায় ৮৪ রানের জুটি।
তিন রানের ব্যবধানে জস বাটলারকে (১) নিজের প্রথম শিকার বানান জাম্পা। এই ধাক্কা মঈন আলীকে সঙ্গে নিয়ে সামাল দেন স্টোকস। ৬৩ রানের এই জুটিও ভেঙে দেন জাম্পা। স্টোকস ইনিংস সেরা ৬৪ রান করে মার্কাস স্টয়নিসের ক্যাচ হন।
দুইশ রানের আগে লিয়াম লিভিংস্টোন (২) ও মঈন (৪২) ফিরে গেলে ইংল্যান্ডের বিপদ বাড়ে। ২১৬ রানে ৮ উইকেট হারানোর পর আদিল রশিদ ও ক্রিস ওকসের ৩৭ রানের জুটি কেবল হারের ব্যবধান কমায়। দুজনই প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন টানা দুই বলে।
স্টয়নিস ৩২ রানে থামান ওকসকে। পরের ওভারে বল হাতে নিয়ে রশিদকে (২০) ইংলিসের ক্যাচ বানিয়ে অস্ট্রেলিয়ার জয় নিশ্চিত করেন জশ হ্যাজেলউড।
২১ রান দিয়ে সবচেয়ে বেশি তিন উইকেট নেন জাম্পা, এছাড়া ব্যাট হাতে ১৯ বলে ২৯ রান করেছেন। তাতে ম্যাচসেরা হয়েছেন তিনি। টানা পাঁচ ম্যাচে তিন বা তার বেশি উইকেট শিকার করলেন অজি স্পিনার। দুটি করে উইকেট নেন স্টার্ক, হ্যাজেলউড, কামিন্স।
সাত ম্যাচে পঞ্চম জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে শক্ত অবস্থান নিলো অস্ট্রেলিয়া। এক ম্যাচ বেশি খেলে ৮ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে নিউজিল্যান্ড। আর ৭ ম্যাচ খেলে মাত্র ২ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশের নিচে দশম স্থানে ইংল্যান্ড। শেষ দুটি ম্যাচ না জিতলে ২০২৪ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিও তাদের খেলা হবে না।
আরও পড়ুন: মাস্ক পড়ে সাকিবদের অনুশীলন, ঘাটতির জায়গা নিয়ে কাজ