মোত্তাকিন মুন।।
ইসরায়েলের হামলায় ফিলিস্তিনি কবি রেফাত আলিরের নিহত
ইসরায়েলের বিমান হামলায় পরিবারসহ নিহত হয়েছেন ফিলিস্তিনি কবি রেফাত আলারির । তিনি গাজার তরুণ প্রজন্মের জনপ্রিয় লেখকদের একজন ছিলেন। তিনি গাজার দুঃখকষ্ট বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে ইংরেজিতে লেখালেখি করতেন। তার স্বজন ও বন্ধুরা মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
রেফাত আলারির গাজার ইসলামিক ইউনিভার্সিটির ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক ছিলেন। সেখানে তিনি অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে শেক্সপিয়রও পড়াতেন।
বৃহস্পতিবার রাতে গাজা উপত্যকার উত্তরে ইসরাইলি বোমায় তিনি নিহত হন। গাজার আরেক কবি ও রেফাতের বন্ধু মোসাব আবু তোহা ফেসবুকে লিখেছেন, আমার হৃদয় বিষাদাক্রান্ত, আমার প্রাণের বন্ধু এবং সহকর্মী রেফাত আলারেরকে তার পরিবারের সাথে কয়েক মিনিট আগে হিংস্রাত্ম হামলায় হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা দু’জনেই স্ট্রবেরি পছন্দ করতাম।
অক্টোবরে ইসরাইল স্থল অভিযান শুরু করার পর আলারের বলেছিলেন, যুদ্ধের কেন্দ্রস্থল গাজা ছেড়ে তিনি কোথাও যাবেন না। তার ভাষ্যমতে “যেখানে আরব্য রজনীর পুনর্জন্ম ইসরায়েলের হিংস্রতায় মাথা নোয়াবে না। তিনি আরও বলেছিলেন আমাকে যদি মরতেই হয়, তাহলে সেটাকে কবিতা হতে দাও। এছাড়াও তিনি “ফিলিস্তিনিদের লাশ শুধু সংখ্যা নয়” প্রোজেক্টেরও অংশ ছিলেন তিনি। কবি আলারির মৃত্যুর আগে প্রতিদিনই গাজার ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতি নিয়ে আপডেট দিতেন।
ইসরায়েলি সেনাকে উদ্ধারে বিশেষ বাহিনীর অভিযান, ঠেকিয়ে দিল হামাস
হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসেম ব্রিগেডস জানিয়েছে, এক ‘জিম্মি’ সেনাকে উদ্ধারে গাজায় অভিযান চালিয়েছিল ইসরায়েলের বিশেষ বাহিনী। তবে তাদের অভিযান ব্যর্থ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া যে সেনাকে ছাড়াতে অভিযান চালানো হয়েছিল; সেই সেনাও প্রাণ হারিয়েছেন। এমনকি অভিযানে অংশ নেওয়া কয়েকজন সেনারাও আহত ও নিহত হয়েছে।
একটি বিবৃতিতে গাজা থেকে জানানো হয় ইসরায়েলি বিশেষ বাহিনীর সেনারা একটি উদ্ধার অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তখন তাদের শনাক্ত করে হামলা চালায় হামাসের যোদ্ধারা। এতে কয়েকজন সেনা আহত ও নিহত হন।
নিহত ওই জিম্মি সেনার নাম সা’র বারুচ (২৫)। ইসরায়েল যে জিম্মি তালিকা প্রকাশ করেছে সেখানে সা’র বারুচ নামে একজনের নাম আছে। যাকে গত ৭ অক্টোবর হামলা চালিয়ে ধরে নিয়ে যায় হামাস বলে দাবি করে ইসরায়েল।
ফিলিস্তিন বাসিন্দাদের চোখ বেঁধে অর্ধনগ্ন করে বসিয়ে রাখছে ইসরায়েল
গাজা উপত্যকার ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করতে দেখ গেছে ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে। আল-জাজিরা প্রকাশিত ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, এসব বন্দিদের অন্তর্বাস পড়া অবস্থায় চোখ বেঁধে উত্তর গাজার রাস্তায় হাঁটুতে ভর দিয়ে বসিয়ে রাখা হয়েছে।
দেখা গেছে, বন্দি ফিলিস্তিনিদের মাথা অবনত অবস্থায় রাস্তায় হাঁটুতে ভর দিয়ে বসে আছেন। তাদের পাহারা দিচ্ছে ও অবজ্ঞা সুরে কথা বলছে ইসরায়েলি সেনারা। ভিডিওটি প্রকাশের পরে
দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেম থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক অ্যালান ফিশার বলেন, অর্ধনগ্ন ব্যক্তিদের অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এসব বন্দিদের অনেককে শনাক্ত করেছেন স্থানীয় সমাজ ও পরিবারের সদস্যরা।
এদের কেউ একজন শিক্ষার্থী ছিলেন, একজন একটি দোকান পরিচালনা করতেন, কারোরই ‘সন্ত্রাসবাদের’ সঙ্গে কোনও যোগসূত্র নেই। একজন সাংবাদিককেও ওই অর্ধনগ্ম অবস্থায় শনাক্ত করা গিয়েছে।
আল-হক নামের মানবাধিকার সংস্থার পরিচালক শাওয়ান জাবারিন বলেছেন, ছবিগুলো দেখে তিনি বিমূঢ় হয়ে পড়েছেন। এগুলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বন্দি ও আটকদের সঙ্গে করা হতো। সমগ্র পৃথিবী যেন অন্ধকারে তলিয়ে গেছে। এটি অমানবিক। এটি নির্যাতন ও হিংস্রতার চেয়েও বেশি কিছু।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি ‘গণহত্যায়’ নির্লজ্জ সমর্থন দিচ্ছে পশ্চিমারা