জীবনধারা ডেস্ক ।।
পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বজুড়ে ৫০ থেকে ৫৫ শতাংশ নারী নিয়মিত লিপস্টিক ব্যবহার করেন। আর ঠোঁটে প্রতিদিন লিপস্টিক লাগান—এমন একজন নারী সারা জীবনে দুই থেকে চার কেজি লিপস্টিক খেয়ে ফেলেন।
‘নারীর রূপচর্চার উপকরণের মধ্যে সবচেয়ে মূল্যবান অস্ত্র হচ্ছে লিপস্টিক’—কথাটা বলেছেন ইতালীয় অভিনেত্রী মনিকা বেলুচ্চি। হ্যাঁ, অস্ত্রই বটে। নারীর ঠোঁটের লিপস্টিকের আঁচড় এফোঁড়-ওফোঁড় করে দিতে পারে পুরুষের হৃদয়। আর প্রিয় মানুষের ঠোঁটে লিপস্টিক! সেই ভালো লাগা ঠিকঠাক তরজমা করা পুরুষের অসাধ্য। কবি শামসুর রাহমানের ‘রূপান্তর’ কবিতা থেকে কয়েকটি পঙ্ক্তি ধার করা যাক, ‘যখন আয়নার সামনে লিপস্টিক মাখো ঠোঁটে, হাই-হিল জুতো/ পায়ে সিঁড়ি বেয়ে নামো, হাতে বই, বুকের ওপর/ কালো বেণী, চিবুকে ঘামের ফোটা, কী-যে ভালো লাগে।’

লিপস্টিক
বহু নারীর কাছেই সৌন্দর্য প্রকাশের এক অনিবার্য উপকরণ লিপস্টিক। ঠোঁটে লিপস্টিক না লাগিয়ে তাঁরা বাইরে বের হন না। অথচ একসময় লিপস্টিক ব্যবহার রীতিমতো বিতর্কিত ছিল। গত শতাব্দীর শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের কানসাসে ৪৪ বছর বয়সের আগে লিপস্টিক ব্যবহারের বিষয়ে আইনগত বাধা ছিল। ১৬৫০ সালে তো লিপস্টিকের ব্যবহার বন্ধের জন্য ব্রিটিশ সংসদে আবেদন পর্যন্ত করা হয়েছিল। শেষ অবধি অবশ্য এর ব্যবহার বন্ধ করা যায়নি। এখানে একটি মজার তথ্য উল্লেখ করা যেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটন মাঝেমধ্যে লিপস্টিক ব্যবহার করতেন। যাহোক, লিপস্টিকের উৎপত্তি কিন্তু বহু প্রাচীন। সুমেরীয় সভ্যতায় (খ্রিষ্টপূর্ব ৪৫০০ থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ১৯০০) এর প্রথম ব্যবহারের নিদর্শন পাওয়া যায়।
কেবল সৌন্দর্যচর্চা বা ফ্যাশনই নয়, লিপস্টিকের সঙ্গে ব্যক্তিত্ব ও আত্মবিশ্বাসেরও গভীর সংযোগ রয়েছে বলে মনে করেন অনেকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যুক্তরাজ্যে বিভিন্ন বিলাসসামগ্রীর উৎপাদন সাময়িক বন্ধ রাখা হলেও লিপস্টিকের উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়নি। কেননা, তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল মনে করতেন, লিপস্টিক মানুষের মনোবল বাড়ায়।