বিদেশ ডেস্ক।।
করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরনের নতুন উপধরন জেএন.১-এর সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে থাকায় নতুন করে আতঙ্ক ঘিরে ধরছে। বিশ্বে ভারত, চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ বহু দেশেই কোভিড জেএন.১ এর প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। নতুন এই উপধরনটির ঝুঁকি কেমন, অন্যান্য ভাইরাল সংক্রমণের ক্ষেত্রে এটি জটিলতা বাড়াতে পারে কিনা এবং এই উপধরনের সংক্রমণ প্রতিরোধে টিকা সুরক্ষা দেবে কিনা সেসব নিয়ে এবার মুখ খুলেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
জেন.১ সংক্রমণ খুব দ্রুতই ছড়িয়ে পড়তে থাকায় এই উপধরন কে আলাদাভাবে ‘ভ্যারিয়্যান্ট অফ ইন্টারেস্ট’ (ভিওআই) শ্রেণিভুক্ত করেছে ডব্লিউএইচও। সংস্থাটি বলছে, আপাতত এই উপধরনটি জনস্বাস্থ্যের জন্য কম ঝুঁকিপূর্ণ বলেই প্রমাণ পাওয়া গেছে। আগের উপধরনের চেয়ে এটি বেশি ক্ষতিকারকও নয়।
অন্তত দুইজন বিশেষজ্ঞ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, জেএন.১ দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এড়িয়ে গিয়ে অন্যান্য উপধরনগুলোর তুলনায় অনেক সহজেই সংক্রমণ ঘটাতে পারলেও এতে রোগ গুরুতর হওয়ার কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি। কোভিড প্রতিরোধে বর্তমানে যেসব টিকা চালু আছে সেটি দিয়েই এই উপধরনের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা মিলবে বলে জানিয়েছে ডব্লিউএইচও।
তবে সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, দেহে অন্যান্য ভাইরাল বা ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ বাড়তে থাকার মধ্যে জেএন.১ উপধরন সার্স-কোভ-২ সংক্রমণ বাড়িয়ে তুলতে পারে, বিশেষ করে শীতের এই সময়ে। কোভিডের পাশাপাশি এই সময়ে উত্তর গোলার্ধের দেশগুলোতে ফ্লু এর মতো ভাইরাস, আরএসভি এবং নিউমোনিয়াও বাড়ছে। আর করোনাভাইরাস সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনবরতই রূপ বদলাচ্ছে। সেকারণে নতুন নতুন উপধরনেরও উদ্ভব ঘটছে।
করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরনটি বেশ কিছুদিন যাবত বিশ্বে দাপুটে হয়েছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখন ওমিক্রন-সংশ্লিষ্ট বেশ কিছু সংখ্যক ‘ভ্যারিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট’ শনাক্ত করার চেষ্টা করছে। এর মধ্যে আছে জেএন.১। তবে এই উপধরনগুলোর কোনওটিই উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন না বিশেষজ্ঞরা। জেএন.১ সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি দ্রুত ছড়াচ্ছে বলে জানিয়েছে দেশটির রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি)। ডিসেম্বরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সেখানে আনুমানিক প্রায় ১৫ শতাংশ থেকে ২৯ শতাংশ মানুষ এই উপধরনে সংক্রমিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে সেপ্টেম্বরে প্রথম জেএন.১ শনাক্ত হয়।
ওদিকে, যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা সংস্থা বলেছে, ল্যাব পরীক্ষায় ‘পজিটিভ’ ফল আসা প্রায় ৭ শতাংশ কোভিড সংক্রমণের মূল আছে জেএন.১ উপধরন। সব অঞ্চলেই জেএন.১ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। চীনে গত সপ্তাহে ৭ জন এই উপধরনে সংক্রমিত হয়েছে। ভারতের কেরালা রাজ্যেও ছড়িয়ে পড়ছে জেএন.১ সংক্রমণ এবং এতে মানুষের মৃত্যু হওয়ার খবর জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আগে করোনাভাইরাসের এই উপধরনটিকে বিএ.২.৮৬ উপধরনের অংশ হিসাবে ‘ভ্যারিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট’ বা (ভিওআই) শ্রেণিভুক্ত করেছিল। কিন্তু পরে এটিকে আলাদাভাবে ‘ভ্যারিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট’ হিসাবে শ্রেণিভুক্ত করা হয়।
আরও পড়ুন: চীনের ১৩ কোম্পানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ