স্টাফ রিপোর্টার।।
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ডাল খেতে বিষ প্রয়োগের ফলে কয়েকশত কবুতর ও বেশ কিছু বন্যপাখির মৃত্যু হয়েছে। এতে ওই এলাকার কয়েকজন কবুতর খামারি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শনিবার (২৩ মার্চ) ও রোববার (২৪ মার্চ) উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম হাজিপুর গ্রামে কবুতরগুলোর মৃত্যু হয়। ওই এলাকার কৃষক মেহেদী শেখ তার খেতে বিষ প্রয়োগের ফলে এ সব পাখির মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। গত বছরও ওই এলাকার খেতে বিষ প্রয়োগের ফলে বেশ কিছু কবুতর মারা যায়। এ ঘটনার পর এনিমেল লাভার্স অফ পটুয়াখালীর কলাপাড়া শাখার সদস্য ও বন বিভাগের সদস্যরা ওই এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
ভূক্তভোগী খামারি মেসকাত মিয়া বলেন, ‘আমি সরকারি মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস ডিগ্রি কলেজে অনার্সে পড়ি। পাশাপাশি বেশ কিছু কবুতর পালন করি। শনিবার সকালে ৪২টা কবুতর আমার খামার থেকে ছেড়ে দেই। দুপুর ১২টার দিকে বাড়ি এসে দেখি ২২টা কবুতর মারা গেছে। আমার বাড়ির পেছনে ডাল চাষ করেছেন মেহেদী শেখ৷ তিনি খেতে বিষ স্প্রে করেছেন। যাতে কোনো পাখি বা কবুতর খেতে না বসে। তার খেত থেকে কবুতর বাড়িতে আসার পরই মৃত্যু হয়।’
মেসকাত মিয়া আরও বলেন, ‘শুধু আমার কবুতর নয়, এ এলাকার অনেকের কবুতর ও বিভিন্ন প্রজাতির পাখির মৃত্যু হয়েছে।’
একই এলাকার অপর কবুতর খামারি ইব্রাহিম শিকার বলেন, ‘গতকাল (শনিবার) আমার খামারের ১০টি কবুতর মারা গেছে। মারা যাওয়া অনেক কবুতরের ছোট ছোট বাচ্চা রয়েছে। এখন এই বাচ্চা কবুতরের অবস্থাও কাহিল। আমি অনেক লোকসানে পরে গেলাম। মেহেদীর খেতের ডাল খেয়ে এসব কবুতরের মৃত্যু হয়েছে। খেতে বিষ দেয়ার বিষয় আগে আমাদের জানালে আমরা কবুতর আটকে রাখতাম।’একই কথা জানিয়েছেন মনির, সবুজ ও ছালেকসহ কয়েকজন কবুতর খামারি। এ ছাড়া ঘুঘু ও শালিকসহ বিভিন্ন পাখিরও মৃত্যু হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেহেদী শেখ তার খেতে বিষ প্রয়োগের সব অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং তিনি নিজেও কবুতর পালন করেন বলে জানান।
এনিমেল লাভার্স অফ পটুয়াখালীর কলাপাড়া শাখার টিম লিডার রাকায়েত আহসান বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বন্যপাখি ও কবুতরের মৃত্যুর সত্যতা পেয়েছি। বন বিভাগকে খবর দিয়ে স্থানীয় কৃষকদের সচেতন করেছি। আশা করছি, তারা খেতে বিষ প্রয়োগের বিষয়ে সচেতন হবে।’ কলাপাড়া বন বিভাগের সদস্য নীলগঞ্জ ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা কামরুল আলম বলেন, ‘আমরা এখানে এসে জানতে পেরেছি বেশ কয়েকজন খামারির কবুতর মারা গেছে। এ ছাড়া কিছু বন্য পাখিরও মৃত্যু হয়েছে। ডাল খেতে বিষ প্রয়োগের ফলে এসব পাখির মৃত্যু হয়েছে এবং একজন কৃষককে অভিযুক্ত করেছেন এলাকার খামারিরা।’
আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ভোলায় অজ্ঞাত রোগে অসুস্থ ৩৫ শিক্ষার্থী, স্কুল ছুটি ঘোষণা