বিদেশ ডেস্ক।।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, ৭ই অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলা ছিল ভয়াবহ ও অযৌক্তিক। কিন্তু এটাও সত্য যে, (গাজায়) দখলদারিত্ব এবং ফিলিস্তিনে যা ঘটছে তা অগ্রহণযোগ্য। শনিবার প্রচারিত ‘পড সেভ আমেরিকা’র সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন। এর আগেও তিনি গাজায় নৃশংসতা নিয়ে সতর্কতা দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, গাজায় ইসরাইলের স্থল হামলা হিতে বিপরীত হতে পারে, যদিও আত্মরক্ষার অধিকার আছে ইসরাইলের। তিনি বলেছিলেন, সাধারণ মানুষের মৃত্যুতে কট্টরপন্থিদের প্রতি সমর্থন বৃদ্ধি করবে এবং দীর্ঘমেয়াদে দেশটির নিরাপত্তা ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিজনেস ইনসাইডার।
এতে বলা হয়, সাবেক এই প্রেসিডেন্ট ইসরাইল ও ফিলিস্তিন নিয়ে বিতর্কে সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুদ্ধের জটিলতা স্বীকার করে নিতে এবং সব পক্ষের বৈধ অভিযোগ স্বীকার করে নিতে। ওবামা বলেন, ইহুদি জনগোষ্ঠীর একটি ইতিহাস আছে। যদি ইহুদিবিদ্বেষের উন্মত্ততার বিষয়ে আপনাকে কোনো নিকটজন বলে না থাকেন, তাহলে সেই ইতিহাসকে উপেক্ষা করা হবে। এ কথাও সত্য যে, সেখানে এমন কিছু মানুষ আছেন, যারা এখন মারা যাচ্ছেন। হামাসের বিষয়ে তাদের কিছু করার নেই।
শনিবার প্রচারিত ওই ‘পড সেভ আমেরিকা’ বিষয়ক পডকাস্ট আয়োজন করেন ওবামার ক্ষমতার সময়ে হোয়াইট হাউসের কিছু সাবেক সহকর্মী। গাজায় ইসরাইলের সামরিক অপারেশনে যেভাবে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে তাতে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তাদের মধ্যে অস্বস্তি বাড়ছে বলেই ইঙ্গিত মেলে।
বর্তমানে হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, সেখানে নিহতের সংখ্যা ১০ হাজারের কাছাকাছি। ওবামা বলেন, আপনি সত্য বলার ভান ধরতে পারেন। সত্যের একদিক সম্পর্কে আপনি বলতে পারেন। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে আপনার উচিত নিজের নৈতিক নির্দোষ বজায় রাখার চেষ্টা করা। তবে তাতে সমস্যার সমাধান হবে না। যদি এই সমস্যার সমাধান করতে চান, তাহলে পুরো সত্যকে আপনার সামনে আনতে হবে। দেখবেন কারো হাত পরিষ্কার নয় (অর্থাৎ কেউই নির্দোষ নন)। দেখা যাবে কিছু ক্ষেত্রে আমরা সবাই জড়িত।
উল্লেখ্য, ক্ষমতায় থাকার সময়ে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের জন্য শান্তি আলোচনা সমর্থন করেছিলেন ওবামা। ২০১৩ সালের এক বক্তব্যে তিনি দখলদারিত্বের অধীনে পশ্চিমতীরের ফিলিস্তিনিদের বিষয় বিবেচনা করার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন ইসরাইলের প্রতি। ওই সময় ওবামা বলেছিলেন, তাদের চোখ দিয়ে বিশ্বকে দেখুন। এটা ঠিক নয় যে, ফিলিস্তিনি একটি শিশু তার নিজের রাষ্ট্রে বড় হতে পারবে না, সেই শিশুকে বিদেশি সেনাদের উপস্থিতিতে বসবাস করতে হবে, যারা প্রতিটি দিন তার পিতামাতার চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে।
কিন্তু গাজায় ‘অপারেশন প্রোটেকটিভ এজ’ সহ ইসরাইলের সামরিক অভিযানের সমর্থন করেছিলেন ওবামা। ওই অভিযানে কমপক্ষে ২২০০ ফিলিস্তিনি নিহত হন। শেষ পর্যন্ত তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অন্য প্রেসিডেন্টদের মতোই ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে একটি চুক্তি করাতে ব্যর্থ হন।
আরও পড়ুন: গাজায় আল আজহার ইউনিভার্সিটিতে বোমা হামলা