স্টাফ রিপোর্টার।।
গাজীপুরে কোনাবাড়ির জরুন এলাকায় চার দিন আগে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্যে গুলিবিদ্ধ পোশাক শ্রমিক জালাল উদ্দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। ৪২ বছর বয়সী জালাল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শনিবার রাতে সেখানেই তার মৃত্যু হয় বলে মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া জানান।
তার মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিদর্শক বাচ্চু। গত বুধবারের ওই সংঘর্ষের ঘটনায় এ নিয়ে দুজনের মৃত্যু হল। আঞ্জুয়ারা খাতুন নামের ২৪ বছর বয়সী এক পোশাক শ্রমিক সেদিনই এ হাসপাতালে মারা যান।
নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার চাঁন মিয়ার ছেলে জালাল গাজীপুরের ইসলাম গার্মেন্টেসের এর সুপারভাইজার ছিলেন। তিনি সপরিবারে জরুন এলাকার ফজল মোল্লার বাড়িতে ভাড়া থেকে ওই কারখানায় কাজ করতেন।
আর আঞ্জুয়ারা একই কারখানার সেলাই মেশিন অপারেটর ছিলেন। মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই গাজীপুর, সাভার, আশুলিয়া ও ঢাকার গার্মেন্ট কারখানা অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে শ্রমিক বিক্ষোভ চলছিল। এর মধ্যে সরকার ন্যূনতম মজুরি আট হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ১২ হাজার টাকা করার ঘোষণা দিলেও শ্রমিকদের কয়েকটি অংশ মজুরি ২৩ থেকে ২৫ হাজার টাকা করার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যায়।

গাজীপুরে শ্রমিকের মৃত্যুতে পরিবারের আহাজারি
এর অংশ হিসেবে গত বুধবারও গাজীপুরের কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভে নামলে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাঁধে। ওই সংঘর্ষের মধ্যে গুলিতে আহত হন ইসলাম গার্মেন্টসের সুপারভাইজার জালাল।
নিহতের সহকর্মী সফিকুল ইসলাম বলেন, “বুধবার আমি এবং জালাল একসঙ্গে কারখানায় কাজে যাই। কারখানায় বিক্ষোভ শুরু হওয়ায় ছুটি ঘোষণা করা হলে আমরা বাড়ি ফিরে যাচ্ছিলাম।
“পথে পুলিশের ছোড়া গুলি জালালের উরু থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থানে লাগে। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।”
ওই ঘটনার পর থেকে ইসলাম গার্মেন্টেসের কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
কোনাবাড়ী থানার ওসি একেএম আশরাফ উদ্দিন বলেন, “আমরা শুনেছি তিনি মারা গেছেন। তবে এখনও নিশ্চিত নই। থানা থেকে একজন অফিসারকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তিনি পৌঁছালে বিস্তারিত জানা যাবে।”
আরও পড়ুন: অবরোধের আগের রাতে ঢাকায় ৩ বাসে আগুন