বিনোদন ডেস্ক।।
কয়েক দিন ধরে অভিনয়শিল্পী তানজিন তিশা ও বিনোদন সাংবাদিকদের দ্বন্দ্ব চলছিল। সাংবাদিকেরা তিশার অপেশাদার আচরণের জন্য ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে গত মঙ্গলবার মানববন্ধন করেন। আলটিমেটাম দেন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যেন ক্ষমা চান তানজিন তিশা। তবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা না হলেও আজ শনিবার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা কার্যালয়ে দুই পক্ষের উপস্থিতিতে তিশা তাঁর আচরণের জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন। একই সঙ্গে ডিবি অফিসে সাংবাদিক মাজহারুল ইসলাম তামিমের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছিলেন, তা প্রত্যাহার করেন।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে তানজিন তিশা বলেন, ‘আপনাদের সকলের ভালোবাসা ও সহযোগিতায় আজ আমি অভিনয়শিল্পী তানজিন তিশা। আমি কয়েক দিন আগে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ছিলাম। সেখান থেকে বাসায় ফেরার পর দেখলাম, দু-একটি নিউজ পোর্টালে আমার আত্মহত্যার চেষ্টা শিরোনামে নিউজ করা হয়েছে। এ সময় সাংবাদিক তামিম, যার সঙ্গে আমার পূর্বপরিচয় নেই, সে আমাকে একটি টেক্সট করে, যেটি পড়ে আমার কাছে মনে হয়েছে, প্রশ্নটি এ সময়ের জন্য যৌক্তিক ছিল না। আমি ভাবতেই পারিনি এই সময়ে আমাকে কেউ এমন বিষয়ে টেক্সট করতে পারে বা একজন নারীকে এমন প্রশ্ন করতে পারে। আমি নিজেকে সামলাতে না পেরে উত্তেজিত হয়ে তাকে কল দিয়ে টেক্সটের বিষয় নিয়ে নিউজ করলে আমি সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলি। আমি তার সঙ্গে ফোনে যে শব্দ উচ্চারণ করেছি, তা সঠিক নয়। পরবর্তীতে আমি আমার ভুল বুঝতে পেরে সকলের কাছেই দুঃখপ্রকাশ করেছি।’
তানজিন তিশা এ-ও বলেন, ‘আমার ফোনের রেকর্ড শুনে অন্য সাংবাদিকেরা রেগে যান, প্রতিবাদ করেন—যা খুবই যৌক্তিক। তবে আমাকে ও আমার পরিবারকে ঘিরে অনেকেই অসত্য, মনগড়া আজেবাজে সংবাদ ও লেখা সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, যা একজন নারী হিসেবে, একজন শিল্পী হিসেবে ভীষণ অসম্মানজনক। এমনকি অনেকে আমি ছাড়াও অন্য শিল্পীদের সাইবার বুলিং, হুমকি ও নানা কুৎসা রটনা করতে থাকেন। এসব দেখে আমি ডিবি ডিএমপিতে অভিযোগ করতে আসি। সেখানেও গণমাধ্যম আমাকে প্রশ্ন করলে আমি তামিমের সাথে তার প্রতিষ্ঠানের কথাও উল্লেখ করি, যা একদমই উদ্দেশ্যমূলক ছিল না। সে জন্যও আমি প্রতিষ্ঠানের সকলের প্রতি দুঃখপ্রকাশ করছি।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশে তানজিন তিশা বলেন, ‘যারা আমার ও আমার পরিবার ঘিরে অসত্য ও অসম্মানজনক নিউজ ও লেখা প্রকাশ করেছেন, তারাও তাদের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হবেন এবং লেখাগুলো সরিয়ে নেবেন, সেটাও আমি প্রত্যাশা করি। আমি এটাও চাই, মূলধারার সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিক যাঁরা আছেন, তাঁরাও সাংবাদিকতার নামে যে সকল অপসাংবাদিক আছে, পোর্টাল আছে, যারা শিল্পীদের অসম্মান করে ফায়দা লুটতে চায়, তাদের প্রতিহত করতে আমার পাশে, শিল্পীদের পাশে সব সময় যেভাবে ছিলেন, সেভাবে থাকবেন।’
প্রসঙ্গত, তানজিন তিশার ‘আত্মহত্যাচেষ্টা’র খবর প্রকাশের মধ্য দিয়ে ঘটনার সূত্রপাত। ১৫ নভেম্বর মধ্যরাতে অচেতন অবস্থায় তিশাকে তাঁর বোন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়ার পর খবরটি গণমাধ্যমে চলে আসে। মূলত এরপরই তানজিন তিশা ঘটনাটিকে নানাভাবে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন।
সবশেষ ২০ নভেম্বর ডিবি অফিসে গিয়ে চ্যানেল ২৪-এর সাংবাদিক মাজহারুল ইসলাম তামিমের বিরুদ্ধে সাইবার বুলিংয়ের অভিযোগ তোলেন তিশা। এর আগে তিশা সাংবাদিকদের ‘উড়িয়ে’ দেওয়ার হুমকি দেন, আবার সোশ্যাল হ্যান্ডলে এর জন্য ক্ষমাও প্রার্থনা করেন। পরে তানজিন তিশার অপেশাদার বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে ২১ নভেম্বর এক প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেন বিনোদন সাংবাদিকেরা। সেখান থেকে তাঁকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানানো হয়।