৪৬
স্টাফ রিপোর্টার ।।
সারাদেশে চলমান ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের আটক করে নির্যাতন ও জিম্মি করে গতকাল (২৮ জুলাই, ২০২৪) সন্ধ্যায় ডিবি কার্যালয়ে সমন্বয়কদের দিয়ে জোর করে আন্দোলন প্রত্যাহারের বিবৃতি আদায় করা হয়েছে। ছাত্র সমাজ জবরদস্তিমূলক এই বিবৃতি প্রত্যাখান করেছে বলে গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা এবং সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন শুভ এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রসমাজ এবং দেশবাসীর প্রতি যুথবদ্ধ লড়াইয়ে শামিল হওয়ার আহ্বান জানান। নেতৃবৃন্দ শুরুতেই আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসী ও সরকারের নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর আক্রমণে ছাত্র ইউনিয়ন কর্মী মাহমুদুল হাসান রিজভীসহ শত শত শহিদের আত্মত্যাগের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে ডিবি কার্যালয়ে জিম্মি করে জোরপূর্বক বিবৃতি আদায়ের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
নেতৃবৃন্দ বলেন, “ছাত্র অভ্যুত্থান দমাতে শেখ হাসিনার সরকারের নৃশংস হত্যাযজ্ঞ ইতোমধ্যে দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছে। হত্যা করে শিক্ষার্থীদের দমাতে না পেরে হাসিনা সরকার শিক্ষার্থী এবং আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারীদের আটক করতে শুরু করেছে।
গণমাধ্যমের তথ্যমতে, বিগত এগারো দিনে নয় হাজার শিক্ষার্থী গণ গ্রেফতারের শিকার। এরইমধ্যে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের দ্বিতীয় দফায় তুলে নিয়ে গিয়ে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা কার্যালয়ে নির্যাতন ও ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে জিম্মি করে স্ক্রিপ্টেড বিবৃতির মাধ্যমে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিতে বাধ্য করেছে।
অসংখ্য শিক্ষার্থীর পরিবারকে হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি করে আটক করা হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের। এ অবস্থা দেশে চলতে দেওয়া যায় না। গত পনেরো বছরের স্বৈরাচারী শাসনে জনগণের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। এই আন্দোলন এখন শুধু কোটা পদ্ধতির সংস্কারে সীমাবদ্ধ নেই। পচে যাওয়া রাষ্ট্র সংস্কারের লড়াইয়ে আমরা ছাত্র ইউনিয়নের পক্ষ থেকে দেশের আপামর শিক্ষার্থী, বিবেকবান জনতা এবং প্রগতিশীল ধারার রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যুগপৎ লড়াইয়ের আহ্বান জানাই। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন তার স্বৈরাচারবিরোধী সংগ্রামী অতীতের দায়বদ্ধতা থেকে কখনোই পিছু হটবে না এবং দেশ ও দেশের মানুষের পক্ষে প্রাণান্ত সংগ্রাম অব্যাহত রাখবে।”