বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫

ঢাকা থেকে ভাঙ্গায় ট্রেনভাড়া প্রস্তাব করা হয়েছে বাসের চেয়ে বেশি

আন্তনগর ট্রেনে (নন-এসি) ভাড়া গুনতে হতে পারে ৩৫০ টাকা। এসি চেয়ারে গেলে ৬৬৭ টাকা

by ঢাকাবার্তা ডেস্ক
ঢাকা থেকে ভাঙ্গায় ট্রেনভাড়া প্রস্তাব করা হয়েছে বাসের চেয়ে বেশি

আন্তনগর তূর্ণা এক্সপ্রেস ট্রেনের শোভন চেয়ারে বসে (নন-এসি) ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যেতে ভাড়া লাগে ৩৪৫ টাকা। এসি চেয়ারে ভাড়া ৬৫৬ টাকা। এই পথের দূরত্ব ৩২১ কিলোমিটার।

অন্যদিকে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গার দূরত্ব ৭৭ কিলোমিটার। এই গন্তব্যে যেতে আন্তনগর ট্রেনে (নন-এসি) ভাড়া গুনতে হতে পারে ৩৫০ টাকা। এসি চেয়ারে গেলে ৬৬৭ টাকা।

পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা থেকে যেসব ট্রেন চলাচল করবে, সেগুলোর জন্য এমনই ভাড়া প্রস্তাব করেছে রেলওয়ের কমিটি। এখন প্রস্তাবটি রেল মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। রেলওয়ে সূত্র বলছে, প্রস্তাবিত ভাড়া হারই অনুমোদিত হতে পারে। এমনটা হলে বাসের চেয়ে এই পথে ট্রেনের যাত্রীদের বেশি ভাড়া গুনতে হবে।

রেল কর্তৃপক্ষের বিশ্লেষণে এসেছে, ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত নন-এসি বাসের ভাড়া ২৫০ টাকা। আর এসি বাসের ভাড়া ৫০০ টাকা।

ভাড়া প্রস্তাবের ক্ষেত্রে ঢাকা থেকে প্রতিটি গন্তব্যের বাস্তব দূরত্বের সঙ্গে পদ্মা সেতু ও গেন্ডারিয়া-কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত উড়ালপথের জন্য বাড়তি দূরত্ব যোগ করেছে রেলওয়ের কমিটি। এর ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট বা ঢাকা-রাজশাহী পথের তুলনায় ঢাকা-ভাঙ্গা পথে যাত্রীদের বাড়তি ভাড়া গুনতে হবে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, পদ্মা সেতুর প্রতি কিলোমিটারকে ২৫ কিলোমিটার দূরত্ব ধরা হয়েছে। একে রেলওয়ে পন্টেজ চার্জের জন্য বাড়তি দূরত্ব বলছে। আর গেন্ডারিয়া থেকে কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত উড়ালপথের প্রতি কিলোমিটারকে ধরা হয়েছে ৫ কিলোমিটার। এ জন্যই ঢাকা থেকে ভাঙ্গার প্রকৃত দূরত্ব ৭৭ কিলোমিটার হলেও রেলওয়ে আদায় করতে চায় ৩৫৩ কিলোমিটার দূরত্বের ভাড়া।

পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত নতুন রেলপথ চালু হতে যাচ্ছে। কাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই রেলপথের উদ্বোধন করবেন।

রেলের কর্মকর্তারা বলছেন, এই রেলপথে আগামী নভেম্বর থেকে যাত্রী নিয়ে পুরোদমে ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে। শুরুতে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে তিনটি ট্রেন চলাচল করতে পারে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা থেকে খুলনাগামী আন্তনগর ট্রেন সুন্দরবন এক্সপ্রেস পদ্মা সেতু হয়ে যাবে। ভাঙ্গা থেকে ট্রেনটি রাজবাড়ী, পাটুরিয়া, কুষ্টিয়ার পোড়াদহ ও যশোর হয়ে খুলনায় যাবে। বর্তমানে ট্রেনটি বঙ্গবন্ধু সেতু, ঈশ্বরদী, কুষ্টিয়া হয়ে চলাচল করে।

অন্যদিকে রাজশাহী থেকে ঢাকা পর্যন্ত একটি ট্রেন চালানোর প্রস্তাব রয়েছে। বর্তমানে রাজশাহী থেকে মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনটি ভাঙ্গা পর্যন্ত চলাচল করে। পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেনটি ঢাকা পর্যন্ত সম্প্রসারণের পরিকল্পনা আছে। এ ছাড়া ঢাকা-পদ্মা সেতু-রাজবাড়ী রুটে একটি কমিউটার ট্রেন চালানোর কথাও ভাবছে রেলওয়ে।

পদ্মা সেতু রেল লিংক প্রকল্পের অধীন ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার নতুন রেলপথ নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা।

কাল ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত রেলপথের উদ্বোধন করা হবে। এর মধ্যে ঢাকার গেন্ডারিয়া থেকে কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত প্রায় ২৩ কিলোমিটার রেললাইন উড়ালপথে। আর আগামী বছর যশোর পর্যন্ত রেলপথ চালুর পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে রেলওয়ে।

পুরো রেলপথ চালু হলে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, নড়াইল, যশোর দিয়ে ট্রেন খুলনায় যেতে পারবে। একইভাবে রাজবাড়ী হয়ে উত্তরবঙ্গের পথেও ট্রেন চলতে পারবে। ভবিষ্যতে বরিশাল হয়ে পটুয়াখালীর পায়রা পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা আছে।

পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছে সরকারের সেতু বিভাগ। এই সেতুর ওপর রেললাইন বসিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। ফলে ট্রেন চলাচলের জন্য সেতু কর্তৃপক্ষকে টোল দিতে হবে। তবে এখনো এই টোল হার নিয়ে একমত হতে পারেনি সরকারি প্রতিষ্ঠান দুটি।

ভাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন কবীর গণমাধ্যমকে বলেন, এই পথে লোকাল ও কমিউটার ট্রেন চলাচল করবে। সেগুলোর ভাড়া অনেক কম হবে। আন্তনগর ট্রেনের ভাড়া কিছুটা বেশিই। তবে যশোর পর্যন্ত পুরো রেলপথ চালু হয়ে গেলে ভাড়া কমে যাবে।

 

আরও পড়ুনঃ ট্রেনে চড়ে পদ্মা সেতু পাড়ি দেবেন প্রধানমন্ত্রী, অপেক্ষায় মুন্সীগঞ্জবাসী

You may also like

প্রকাশক : মানজুর এলাহী

সম্পাদক : হামীম কেফায়েত

ব‌ইচিত্র পাবলিশার্স
প্যারিদাস রোড, বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০
যোগাযোগ : +8801712813999
ইমেইল : news@dhakabarta.net