কৌশিক দত্ত ।।
ইলিশ মাছ ধরা এবং বিক্রি করার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এই সময়ে কেউ ইলিশ মাছ ধরলে বা বিক্রি করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল মৎস্য দফতর। কিন্তু সেই হুঁশিয়ারিকে উপেক্ষা করেই অবাধে চলছে ইলিশ মাছ ধরা এবং বিক্রি বলে অভিযোগ। রাতের বেলায় ওই মাছ ধরে, নদীর পাড়ে বসে বা গ্রামে ফেরি করে সেই ইলিশ বিক্রি করা হচ্ছে। একই রকম চিত্র দেখা দিয়েছে পাবনার বেড়া এলাকায়। সেখানে পদ্মা এবং যমুনা নদী থেকে ইলিশ মাছ ধরা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা
ইলিশ মাছ রক্ষা এবং নিরাপদ প্রজননের লক্ষ্যে আগামী ২ নভেম্বর পর্যন্ত মাছ ধরা ও বিক্রির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞার সময় পার হলেই শেষ হবে ইলিশের মরশুম। এরপর নভেম্বর থেকে আট মাসের জাটকা ধরার নিষেধাজ্ঞা শুরু হবে। এখন দিনের বেলায় নদীতে থাকছে প্রশাসনের নজরদারি। তাই রাতে পদ্মা এবং যমুনা নদীতে নেমে মাছ ধরছেন মৎস্যজীবীরা। সেই মাছ বিক্রি করা হচ্ছে বাজারে ঘুরে। অনেকেই আবার, মৎস্যজীবীরা ফিরে এলে নৌকা থেকেই মাছ কিনছেন।
মাছ বিক্রি মৎস্যজীবীদের
এখন যে তারা মাছ ধরছেন তা মেনে নিয়েছেন ওই মৎস্যজীবীরা। তারা জানিয়েছেন, নিষেধাজ্ঞার প্রথম দিকে নদীতে তেমন ইলিশ পাওয়া যায়নি। কিন্তু সপ্তাহখানেক ধরে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। পদ্মা ও যমুনার পাড়ে একরকম হাট বসিয়ে ইলিশ বিক্রি করা হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর বিক্রির জন্য গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে রেফ্রিজারেটর ভর্তি করে ইলিশ রাখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে তারা জানিয়েছেন, গ্রামে গিয়ে দরদাম করে ইলিশ বিক্রি করাও হচ্ছে। ৭০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৮০০-৯০০ টাকা কেজি দরে, ছোট ইলিশ ৪০০-৫০০ টাকা কেজি দরে। এবং ১ থেকে দেড়কেজি ওজনের ইলিশ ১২০০-১৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
পেটের তাগিদে নদীতে
অনেকেই যে এই সময়ে মাছ ধরছেন তা স্বীকার করেন রঘুনাথপুর মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি আবদুল মালেক। তিনি বলেন, ‘সব মৎস্যজীবীদের ২৫ করে চাল দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সবাই এই চাল পাননি। এই চালে একটা পরিবারের কদিন চলবে? শুধু অভিযান করলেই হবে না। জেলেদের সহায়তার ব্যবস্থাও করতে হবে। ঘরে অভাব থাকায় অনেক মৎস্যজীবী পেটের তাগিদে নদীতে নামছেন।’
চলছে অভিযানও
মৎস্য এবং প্রশাসনের আধিকারিকরা জানান, নিষেধাজ্ঞা জারির পর থেকেই অভিযান চলছে। নির্দেশ অমান্য করে মাছ ধরার কারণে অনেককে গ্রেফতার করাও হয়েছে। তাদের কাছে থেকে মাছ এবং জাল বাজেয়াপ্ত করাও হয়েছে।