ঢাকাবার্তা ডেস্ক।।
আগামী ১লা নভেম্বর পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচল শুরু হবে। এদিন যাত্রীবাহী দু’টি ট্রেন পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে চলাচল করবে। সম্প্রতি ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে চলাচল করা ট্রেনের যে ভাড়া প্রস্তাব করা হয়েছে তা কমানোর কথাও ভাবছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ট্রেন চলাচলের আগেই প্রস্তাবিত ভাড়া কমিয়ে ‘সমন্বয়’ করে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হতে পারে।
ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু দিয়ে ভাঙ্গা জংশন পর্যন্ত রেলপথে দূরত্ব ৭৭ কিলোমিটার। সম্প্রতি রেলের ভাড়া নির্ধারণের ‘স্ট্যান্ডার্ড রীতি’ মেনে এই অংশের ভাড়া প্রস্তাব করেছে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে চলাচলকারী ট্রেনের ভাড়া নির্ধারণে গঠিত রেলওয়ের কমিটি। এই পথে আন্তঃনগর শোভন চেয়ারেই ভাড়া প্রস্তাব করা হয়েছে ৩৫০ টাকা। আর এসি চেয়ার সিটের ভাড়া ৬৬৭ টাকা, এসি সিট ৮০৫ টাকা এবং এসি বার্থের ভাড়া আসবে ১২০১ টাকা। তবে প্রস্তাবিত ভাড়া নিয়ে মানুষের মধ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে রেল চলাচল শুরু করায় তারা যেমন খুশি হয়েছিলেন ঠিক তেমনি ভাড়া নিয়ে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে জনমনে। এ ছাড়া ঢাকা-ভাঙ্গা জংশন পর্যন্ত ট্রেন চলাচলের প্রস্তাবিত ভাড়া অন্তত ৪০ শতাংশ কমানোর দাবিও করেছিল নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি। এসব বিভিন্ন বিষয় মাথায় রেখে প্রস্তাবিত ভাড়া কমানোর কথা ভাবছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
রেলওয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ভাড়া নিয়ে অনেকের আপত্তি আছে।
সেটা কমানো যায় কিনা বিবেচনা করা হচ্ছে। যারা ভাঙ্গা থেকে ঢাকা যাবে তাদের জন্য ভাড়া বেশি হয়ে যায়। আবার যারা ভাঙ্গা থেকে খুলনা যাবে তাদের এরচেয়ে ভাড়া কম। তাই এটা কীভাবে সমন্বয় করা যায় সেটা দেখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিঃ মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী বলেন, ভাড়া যাচাই-বাছাই করে সমন্বয় করে ট্রেন চালুর আগে চূড়ান্ত করা হবে। এটা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রথমদিন পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে দুটি ট্রেন চলাচল করবে। এই ট্রেনে ১৬টি করে কোচ চালানো হবে। ট্রেনগুলোর একটি ঢাকা থেকে পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে ভাঙ্গা হয়ে খুলনা যাবে। আরেকটি বেনাপোল থেকে ভাঙ্গা হয়ে পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে ঢাকায় চলাচল করবে। ভাড়া নির্ধারণের পর থেকেই অফলাইনসহ অনলাইনেও টিকিট কাটা যাবে।
এদিকে গত ১০ই অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করেন। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় ঢাকার কমলাপুর থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত দীর্ঘ ১৬৯ কিলোমিটার রেললাইন নির্মিত হচ্ছে। এরমধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে ঢাকা-মাওয়া ৪০ কি.মি. ও মাওয়া-ভাঙ্গা ৪২ কিলোমিটার রেলপথ উদ্বোধন করা হয়েছে। আর প্রকল্পের তৃতীয় অংশের ভাঙ্গা-যশোর ৮৭ কি.মি. রেললাইন নির্মাণকাজ ২০২৪ সালের জুনে শেষ হবে। এ অংশের কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৭৮ ভাগ। ২০১৬ সালের ১লা জানুয়ারি এই প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে ২০১৮ সালের ২৭শে এপ্রিল। ওই বছরের ১৪ই অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেললাইন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
আরও পড়ুনঃ আবারও অস্থির ডিমের বাজার