বাণিজ্য ডেস্ক।।
রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে প্রবাসীদের জন্য চালু করা হয়েছিল সঞ্চয় প্রকল্প ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড। আকর্ষণীয় মুনাফার কারণে প্রচুর প্রবাসী এতে বিনিয়োগ করেন। কিন্তু হঠাৎ সরকার ২০২০ সাল থেকে এ খাতে বিনিয়োগে লাগাম টানতে শুরু করে। এর ফলে ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ড থেকেও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন প্রবাসীরা। এতে রিজার্ভে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এই পরিস্থিতির উত্তরণে সরকার ইউএস ডলার প্রিমিয়াম ও ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ডের সুদহার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে রবিবার (১৪ জানুয়ারি) এ তথ্য জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ডে এখন ৩ দশমিক ৫ শতাংশ সুদ দেওয়া হয়, আগে সুদ দেওয়া হতো ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। আর ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ডে এখন ৩ শতাংশ সুদ পাওয়া যায়, আগে পাওয়া যেতো ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। রবিবারের নতুন প্রজ্ঞাপনের তথ্যানুসারে, ইউএস ডলার প্রিমিয়ার বন্ডের সুদহার পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে— ১ লাখ ডলার পর্যন্ত বিনিয়োগে প্রথম বছরান্তে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরান্তে ৭ ও তৃতীয় বছরান্তে ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ। ১ লাখ ১ ডলার থেকে ৫ লাখ ডলার পর্যন্ত প্রথম বছরান্তে ৫ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরান্তে ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ ও তৃতীয় বছরান্তে ৬ শতাংশ। এরপর ৫ লাখ ১ ডলার থেকে তদূর্ধ্ব বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রথম বছরান্তে ৪ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরান্তে ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ ও তৃতীয় বছরান্তে ৫ শতাংশ সুদ নির্ধারণ করা হয়েছে।
ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ডের সুদহার হবে ১ লাখ ডলার পর্যন্ত বিনিয়োগে প্রথম বছরান্তে ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরান্তে ৬ শতাংশ ও তৃতীয় বছরান্তে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ সুদ পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। ১ লাখ ১ ডলার থেকে ৫ লাখ ডলার পর্যন্ত বিনিয়োগে প্রথম বছরান্তে ৪ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরান্তে ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ ও তৃতীয় বছরান্তে ৫ শতাংশ সুদ পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। এরপর ৫ লাখ ডলার থেকে তদূর্ধ্ব বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রথম বছরান্তে ৩ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরান্তে ৩ দশমিক ৫০ শতাংশ ও তৃতীয় বছরান্তে ৪ শতাংশ সুদ পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বেশ কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে, যেমন নতুন স্ল্যাব-ভিত্তিক মুনাফা প্রদানের ক্ষেত্রে বর্ণিত স্কিম দুটির আগের বিনিয়োগের সঙ্গে একত্র করে মোট বিনিয়োগ নির্ধারণ করা হবে। নতুন স্ল্যাব নির্ধারণের আগে ইস্যুকৃত সঞ্চয় স্কিম দুটির মুনাফার হার ক্রয়কাল হারে প্রযোজ্য হবে। বর্ণিত স্কিম দুটির বিনিয়োগের পরিমাণ অন্যান্য সঞ্চয় স্কিম থেকে আলাদা হিসাবায়ন হবে এবং স্কিম দুটির লেনদেনসংক্রান্ত সব রিপোর্ট-রিটার্ন মার্কিন ডলারের পাশাপাশি বাংলাদেশি মুদ্রায় পাওয়ার ব্যবস্থা থাকবে।
প্রসঙ্গত, একসময় প্রবাসী বন্ডে বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা ছিল না। তবে ২০২০ সালের ৩ ডিসেম্বর এক নির্দেশনার মাধ্যমে তিন ধরনের বন্ড মিলে সমন্বিত বিনিয়োগের সীমা নির্ধারণ করা হয় এক কোটি টাকা। পরে গত বছর সব ধরনের বন্ডে সুদহার কমানো হয়। একই নির্দেশনায় ইউএস ডলার প্রিমিয়াম ও ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ডে বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা প্রত্যাহার করা হয়। তবে সুদহার বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় কম ছিল বলে এসব বন্ড বিক্রি কমে যায়। এরপর রবিবার তা বাড়ানো হলো।
আরও পড়ুন: আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান মঞ্জুর গ্রেপ্তার