রবিবার, ডিসেম্বর ৮, ২০২৪

বাবা-ছেলেকে তুলে নিয়ে পুলিশের এসআইয়ের ‘চাঁদা দাবি’

অভিযোগকারী মোসলেম মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের বাসিন্দা। পুত্র আব্দুল্লাহ বিন লাদেন বরিশাল নগরীর সরকারি আলেকান্দা কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র।

by ঢাকাবার্তা ডেস্ক
বাবা-ছেলেকে তুলে নিয়ে পুলিশের এসআইয়ের ‘চাঁদা দাবি’

স্টাফ রিপোর্টার।।

ইয়াবা পাওয়ার মিথ্যা অভিযোগ এনে বরিশাল নৌবন্দর থেকে বাবা ও ছেলেকে তুলে নিয়ে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (কাউনিয়া থানা) এসআই রেদোয়ান হোসেন রিয়াদ। দাবিকৃত টাকা না দেওয়ায় ছেলেকে তিন পিস ইয়াবা দিয়ে কাউনিয়া থানা হাজতে আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বাবা মোসলেম জমাদ্দার।

অভিযোগকারী মোসলেম মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের বাসিন্দা। পুত্র আব্দুল্লাহ বিন লাদেন বরিশাল নগরীর সরকারি আলেকান্দা কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র।

মোসেলম জানান, জমিজমা সংক্রান্ত মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে শ্রীপুর থেকে লঞ্চযোগে মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) সকাল সোয়া ১০টায় বরিশাল নৌবন্দর এসে পৌঁছান। পন্টুনে নামার সঙ্গে সঙ্গে এসআই রিয়াদ তার সহযোগীসহ তাকে ও তার ছেলে লাদেনকে আটকে শরীরে তল্লাশি চালায়। একপর্যায়ে লাদেনের পাশে ফেলে রাখা নীল রঙের একটি প্যাকেট দেখিয়ে বলে পাওয়া গেছে। ইয়াবা পাওয়ার নাটক সাজিয়ে এক লাখ টাকা দাবি করেন। দাবিকৃত টাকা না দেওয়ায় ওই স্থানে বসে লাদেনকে মারধরও করেন রিয়াদ। এ সময় রিয়াদের কোমরে এক জোড়া হ্যান্ডকাফ ছিল। ওই হ্যান্ডকাফ দেখে মোসলেম অনুমান করেন তিনি ডিবির সদস্য।

মোসলেম আরও জানান, একপর্যায়ে লাদেনকে এসআই রিয়াদ তার মোটরসাইকেলে তুলে নেয় এবং তাকে (মোসলেম) রিয়াদের সহযোগী একটি ব্যাটারিচালিত রিকশায় তোলেন। এরপর অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। কিন্তু তাদের নিকট ওই পরিমাণ টাকা না থাকার বিষয়টি বারবার অবহিত করলেও রিয়াদ ও তার সহযোগী কোনোভাবেই মানতে নারাজ। এভাবে চলার পর বিষয়টি মোসলেমের বাড়ির লোকজন জেনে ফেলে। কোনোভাবে টাকা না পেয়ে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে মোসলেমকে নগরীর চরকাউয়া খেয়াঘাট এলাকায় রেখে যায় রিয়াদ। আর ছেলেকে তিন পিস ইয়াবাসহ কাউনিয়া থানায় সোপর্দ করে।

মোসলেমের ভাইয়ের ছেলে আব্দুর রহিম বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর শ্রীপুর থেকে চাচার (মোসলেম) মোবাইলে বারবার কল দিচ্ছিলাম। কিন্তু কথা শুরু করলেই লাইনটি কেটে দেয়। এভাবে কিছুক্ষণ চলার পর কে একজন মোবাইল রিসিভ করেন। তিনি এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। ওই টাকা কোনোভাবেই দেওয়া সম্ভব না বলে জানালে দরদাম করতে থাকে। একপর্যায়ে ৪০ হাজার টাকায় নামেন। ওই টাকা দিলে তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।’

রহিম আরও বলেন, ‘পরবর্তীতে আবারও চাচার মোবাইলে কল দেওয়া হলে তিনি জানান চরকাউয়া খেয়াঘাটে আছেন। লাদেন কোথায় জিজ্ঞাসা করলে জানান তাকে পুলিশ নিয়ে গেছে। এরপর বিষয়টি ট্রিপল নাইনে অবহিত করি। সেখান থেকে ঘটনাস্থল কোতোয়ালি মডেল থানার অধীন হওয়ায় সেখানকার কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হয়। তাদেরকে বিষয়টি জানানো হলে তারা লাদেনের অবস্থান নিশ্চিত করে আমাদের অবহিত করেন। এরপর আমরা কাউনিয়া থানায় এসে লাদেনের অবস্থান নিশ্চিত হই।’

অভিযুক্ত এসআই রেদোয়ান হোসেনের ব্যবহৃত মোবাইলে কল দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেন। এরপর তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘এ ব্যাপারে কিছুই বলতে পারবো না। যা কিছু জানার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জেনে নেবেন।’

বরিশাল মেট্রোপলিটন কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘এসআই রিয়াদ তিন পিস ইয়াবাসহ একজনকে থানায় নিয়ে এসেছেন। আর রিয়াদের বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ পাওয়া গেছে তা তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 

আরও পড়ুন: ঢাবির সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের জন্য ‘আনোয়ার হোসেন ফাউন্ডেশন’-এর চেক হস্তান্তর

You may also like

প্রকাশক : মানজুর এলাহী

সম্পাদক : হামীম কেফায়েত

ব‌ইচিত্র পাবলিশার্স
প্যারিদাস রোড, বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০
যোগাযোগ : +8801712813999
ইমেইল : news@dhakabarta.net