বিদেশ ডেস্ক।।
বেতন চাওয়ায় একজন শ্রমিককে প্রহার এবং তার মুখের ভিতর জুতা ঢুকিয়ে দিয়ে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করার অভিযোগে ভারতের গুজরাটে এক ব্যবসায়ী নারী ও কমপক্ষে অন্য ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন নির্যাতিত দলিত সম্প্রদায়ের ২১ বছরের শ্রমিক। অভিযুক্ত ব্যবসায়ী নারী মরবি সিটিতে রনিবা ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক।
তার পুরো নাম বিভূতি প্যাটেল ওরফে রনিবা। তার কারখানায় এক পক্ষকাল ধরে কাজ করছিলেন নীলেশ ডালসানিয়া নামের ওই যুবক। ঘটনাটি ঘটে গত বুধবার। এ বিষয়ে মামলা করেছেন নীলেশ। তিনি বৃহস্পতিবার মরবি সিটির ‘এ’ ডিভিশন পুলিশ স্টেশনে এফআইআর করেন। এতে অভিযোগ করা হয় রনিবা, তার ভাই ওম প্যাটেল, ম্যানেজার পরীক্ষিত সহ মোট আটজনের বিরুদ্ধে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা পিটিআই।
রনিবা ইন্ডাস্ট্রিজের একটি অফিস আছে রাভাপার ক্রসরোডে একটি বাণিজ্যিক কমপ্লেক্সে। অক্টোবরের শুরুতে রনিবা কাজে নেন নীলেশকে। মাসে ১২ হাজার রুপি বেতনে টাইলস মার্কেটিংয়ের কাজ দেয়া হয় তাকে।
কিন্তু ১৮ই অক্টোবর আকস্মিকভাবে নীলেশকে বরখাস্ত করেন রনিবা। ১৬ দিনের বেতন দানি করেন নীলেশ। কিন্তু রনিবা প্যাটেল তার এ দাবির পক্ষে কোনো পরিষ্কার জবাব দেননি। এরপর তার ফোনকলের জবাব দেয়া বন্ধ করে দেন। ডিএসপি প্রতিপালসিন জালা বলেন- এক পর্যায়ে নীলেশ, তার ভাই মেহুল এবং প্রতিবেশী ভবেশ বুধবার সন্ধ্যার দিকে রনিবার অফিসে যান। এ সময় রনিবার ভাই ওম প্যাটেল সেখানে উপস্থিত হয়ে ওই তিনজনকেই প্রহার করা শুরু করেন।
এফআইআরে বলা হয়েছে, নীলেশকে থাপড়াতে থাকেন রনিবা প্যাটেল এবং তাকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যান বাণিজ্যিক ভবনটিতে। পরীক্ষিত প্যাটেল, ওম প্যাটেল এবং ৬ থেকে ৭ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিসহ রনিবা তাকে বেল্ট দিয়ে প্রহার শুরু করেন। লাথি মারেন। ঘুষি মারেন। নীলেশ অভিযোগ করেন যে, রনিবা প্যাটেল তার মুখের ভিতর নিজের জুতা ঢুকিয়ে দেন এবং তাকে বেতন চাওয়ার কারণে ক্ষমা চাইতে বলেন। যদি তিনি রাভাপার ক্রসরোড এলাকায় আবার যান তাহলে তাকে হত্যার হুমকি দেন রনিবা। এক পর্যায়ে তারা একটি ভিডিও ধারণ করেন। তাতে নীলেশকে বলতে বাধ্য করা হয় যে, তিনি রনিবার অফিসে চাঁদা দাবি করতে গিয়েছিলেন। ভিডিওতে দেখা যায়, অভিযুক্ত রনিবা দলিত সম্প্রদায়ের নীলেশকে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করছেন।
সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পর নীলেশকে নেয়া হয় মরবি সরকারি হাসপাতালে। সেখানে তিনি এখনও চিকিৎসা নিচ্ছেন। পুলিশ কর্মকর্তা জালা বলেছেন, অভিযুক্ত সবাইকে নির্যাতন, ভীতি প্রদর্শন, দাঙ্গা পরিস্থিতি সৃষ্টি সহ দণ্ডবিধির বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। তবে এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করা হযনি।
আরও পড়ুন: ৬০০ দিন পর কারামুক্ত কাশ্মীরের সাংবাদিক ফাহাদ শাহ