বিদেশ ডেস্ক।।
ভারতে হিন্দুরা এবার দাবি করছে, বারানসিতে কাশী বিশ্বনাথ মন্দির লাগোয়া জ্ঞানবাপী মসজিদস্থলে আগে হিন্দুদের মন্দির ছিল। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার (এএসআই) জরিপের প্রতিবেদনে এমনই তথ্য উঠে এসেছে বলে হিন্দুদের পক্ষে এই দাবি জানানো হয়েছে।
জ্ঞানবাপী মসজিদ চত্বরে নিত্য পূজা–অর্চনার দাবি নিয়ে নিম্ন আদালতে একাধিক মামলা রুজু হয়েছে। মসজিদ চত্বরে এএসআইকে দিয়ে জরিপ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বারানসি জেলা আদালত। সেই প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানা গেছে বলে হিন্দু পক্ষের আইনজীবী বিষ্ণুশঙ্কর জৈন গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন।
জৈনের দাবি অনুযায়ী, যে কাঠামোর ওপর মসজিদ তৈরি হয়েছে, তাতে হিন্দুদের মন্দিরের উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। বর্তমান মসজিদ ওই কাঠামোর ওপরই তৈরি। তাঁর দাবি, এএসআই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই কাঠামোয় মন্দির তৈরির সময় বেশ কিছু বদল ঘটানো হয়েছিল। হিন্দুদের মন্দিরের থামের চরিত্রে কিছুটা বদল ঘটানো হয়েছিল। তবে একই থাম ও প্লাস্টার মসজিদ তৈরিতেও ব্যবহার করা হয়েছে।
গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর বারানসি জেলা আদালতে মুখবন্ধ খামে এএসআই তাদের জরিপের প্রতিবেদন পেশ করেছিল। পরে আদালতের নির্দেশে হিন্দু ও মুসলমান দুপক্ষকেই সেই প্রতিবেদন জমা দিতে এএসআইকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
আইনজীবী জৈন দাবি করেছেন, জরিপের সময় কাঠামোতে যেসব লিপির সন্ধান পাওয়া গেছে, সেগুলো সাধারণত প্রাচীন হিন্দু মন্দিরে দেখা যায়। সে রকম মোট ৩৪টি লিপির সন্ধান পাওয়া গেছে বলে তিনি দাবি করেন। সেগুলো দেবনগরী, তেলুগু, কন্নড়ের মতো ভাষায় লেখা। তাতে জনার্দন, রুদ্র, উমেশ্বর (শিব) প্রভৃতি দেবতার নাম নাকি পাওয়া গেছে।
অযোধ্যায় রামমন্দির আন্দোলনের সময় থেকেই বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বিজেপির নজরে ছিল কাশীর জ্ঞানবাপী ও মথুরার শাহি ঈদগাহ। ওই দুই মসজিদের কবল থেকে বিশ্বনাথ মন্দির ও কৃষ্ণ জন্মভূমি উদ্ধারে হিন্দুত্ববাদী শক্তি বদ্ধপরিকর।
১৯৯১ সালের ধর্মস্থান আইন থাকা সত্ত্বেও আইনের আশ্রয় নিয়েই হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ও দল এই দুই ধর্মস্থান উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিজেপির সিদ্ধান্ত, আন্দোলন নয়, আইনের সাহায্যেই তারা উদ্দেশ্য হাসিল করবে। এএসআইয়ের জরিপ সেই লক্ষ্য পূরণের একটা বড় ধাপ বলে মনে করা হচ্ছে।
সম্প্রতি উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘জ্ঞানবাপীর দেয়ালগুলো কাঁপছে। ওটাকে মসজিদ বলা হলে তা বিতর্কের কারণ হয়ে উঠবে। দ্বন্দ্ব দেখা দেবে। মসজিদে ত্রিশূল কী করে থাকে? জ্যোতির্লিঙ্গ? দেব প্রতিমা? আমরা তো ওসব রাখিনি?’
যোগী বলেছিলেন, ওখানে একটা ঐতিহাসিক ভুল হয়ে গিয়েছিল। তা শোধরানো প্রয়োজন। সমাধান প্রয়োজন। সেই প্রস্তাব মুসলমান সমাজের দিক থেকেই আসা দরকার।
আরও পড়ুন: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে পরীক্ষার ৪০ বছর পর পেলেন যোগদানের চিঠি