মহাকাশ ডেস্ক।।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে মহাকাশে প্রথম সামরিক গুপ্তচর উপগ্রহ উৎক্ষেপণের পর “মহাকাশ শক্তির নতুন যুগ” উদযাপন করেছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। পিয়ংইয়ং বলেছে, ‘মালিগিয়ং-১’ নামের কৃত্রিম উপগ্রহটি গত মঙ্গলবার রাতে উৎক্ষেপণ করা হয়। কৃত্রিম উপগ্রহটি সঠিকভাবে মহাকাশের কক্ষপথে প্রবেশ করেছে। এটি কয়েক ঘণ্টার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটির ছবি পর্যালোচনা করছে বলে দাবি করে দেশটি।
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, কিম তার মেয়ের সাথে, ন্যাশনাল অ্যারোস্পেস টেকনোলজি অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (NATA) বিজ্ঞানী এবং মহাকাশ কর্মসূচির কর্মীদের প্রশংসা করছেন।
কিমকে নাটা কর্মী, শীর্ষ সামরিক ও রাজনৈতিক কর্মকর্তা এবং তার পরিবারের সাথে একটি সংবর্ধনা উপভোগ করতেও দেখা গেছে। কিমের পরিবারসহ উপস্থিতরা, নাটা-এর লোগো সম্বলিত টি-শার্ট পরে উৎসাহপূর্ণভাবে উল্লাস প্রকাশ করতেও দেখা যায়।
সরকারি কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) জানিয়েছে, জাতীয় মহাকাশ সংস্থার পরিদর্শনের সময় কিম বলেছেন, উৎক্ষেপণটি ছিল আত্মরক্ষার অধিকারের একটি পূর্ণাঙ্গ অনুশীলন।
কিম বলেন, উৎক্ষেপণটি উত্তর কোরিয়াকে শত্রু শক্তির বিপজ্জনক এবং আক্রমনাত্মক পদক্ষেপ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করবে। এটি একটি মহাকাশ শক্তির একটি নতুন যুগের সূচনা।
উপগ্রহটির উৎক্ষেপণ প্রত্যাশিত সময়ের আগেই করা হয়েছে। এই উৎক্ষেপণ বুধবার শুরু হয়ে ৩০ নভেম্বর স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে শেষ হওয়ার কথা ছিল। এর আগে মে ও আগস্টে এই উৎক্ষেপণ প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
পারমাণবিক সশস্ত্র দেশের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে লাগাম টানতে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার অধীনে নিষিদ্ধ করা এই উৎক্ষেপণটি উপদ্বীপে উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এ ঘটনার পর সিউল আংশিকভাবে সামরিক চুক্তি স্থগিত করার পর পিয়ংইয়ং ২০১৮ সালের যৌথ সামরিক চুক্তি সম্পূর্ণরূপে স্থগিত করে। এই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে সিউল উত্তর কোরিয়ার সীমান্তে নজরদারি আবার শুরু করবে।
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) সিউলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান এবং চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ২০১৯ সালের পর তাদের প্রথম ত্রিপক্ষীয় আলোচনায় বসবেন।
সিউলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, শীর্ষ সম্মেলনে, পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা “ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতা, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির উন্নয়নের দিকনির্দেশনা নিয়ে ব্যাপকভাবে মতামত বিনিময় করার পরিকল্পনা করেছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ইতিমধ্যেই সতর্ক করে বলেছেন, কিম সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে দেখা করতে রাশিয়া সফরের পর থেকে উত্তর কোরিয়া এবং রাশিয়ার মধ্যে সামরিক সম্পর্ক ক্রমবর্ধমান এবং বিপজ্জনক হয়ে উঠছে।
ব্লিঙ্কেন পিয়ংইয়ংয়ের প্রধান মিত্র বেইজিংকে সংযম করার আহ্বান জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: নাসার মহাকাশ মিশনের লক্ষ্য ‘স্নেক রোবট’