মানাম মায়মূন ।।
আরেফ বিল্লাহ শায়খ আহমাদ যাহেদ রহ. মেসওয়াকের ফযিলত বিষয়ে ‘তুহফাতুস সিলাক ফী ফাযায়েলুস সিওয়াক’ নামে একটি পুস্তিকা লিখেছেন। সে পুস্তিকায় আছে, হজরত আলী, ইবনে আব্বাস, আতা রাদিয়াল্লাহু আনহুম প্রমুখ জলিলুল কদর সাহাবীগণ বলেন, হে লোকসকল! তোমরা মেসওয়াককে আবশ্যক করে নাও। মেসওয়াকের ব্যাপারে গাফলত প্রদর্শন করো না। তোমরা নিয়মিত গুরুত্বের সাথে মেসওয়াক করো। এর কারণ হচ্ছে—
১. আল্লাহ তায়ালার খুশি হাসিল হয়।
২. নামাজের সওয়াব বহুগুণ বেড়ে যায়।
৩. চারশো দরজা পর্যন্ত বেড়ে যায়।
৪. দীর্ঘায়ু ও স্বচ্ছলতা হাসিল হয়।
৫. রিযিক আসান হয়ে যায়।
৬. মুখ খুশবুদার হয়।
৭. মাড়ি মজবুত হয়।
৮. মনে স্বস্তি বিরাজ করে।
৯. মাথার স্নায়ুসমূহকে সতেজ রাখে; মিসওয়াকের কারণে সতেজ স্নায়ুগুলো আগের মতোই সতেজ থাকে এবং কখনো তা বন্ধ হয়ে যায় না।
১০. মাথাব্যথা ও কফ দূর করে।
১১. দাঁত মজবুত করে।
১২. দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে।
১৩. পাকস্থলী ঠিক রাখে।
১৪. শরীরে শক্তিবৃদ্ধি করে।
১৫. পুরুষের মুখের তেজ বাড়ায়।
১৬. আক্কল বৃদ্ধি করে।
১৭. স্মৃতিশক্তি বাড়ায়।
১৮. অন্তর পবিত্র করে।
১৯. সওয়াব বৃদ্ধি করে।
২০. ফেরেশতারা খুশি থাকেন।
২১. তার চেহারায় নূরের কারণে ফেরেশতাগণ তার সাথে মুসাফাহা করেন।
২২. যখন কেউ মিসওয়াক করে নামাজে যায়, তখন ফেরেশতারা তার পেছনে পেছনে চলতে থাকে।
২৩. যখন সে মসজিদ থেকে বের হয়, তখন আরশ বহনকারী ফেরেশতারা তার জন্য এস্তেগফার করতে থাকেন।
২৪. সমস্ত নবী-রাসূল তার জন্য ইস্তেগফার করেন।
২৫. মেসওয়াক শয়তানকে অসন্তুষ্ট করে এবং
২৬. শয়তান তাকে ধিক্কার দিতে থাকে।
২৭. মিসওয়াক মেধা বৃদ্ধি করে।
২৮. খাবার হজমে সহায়ক।
২৯. সন্তান বৃদ্ধি পায়।
৩০. মিসওয়াক পুলসিরাতের উপর দিয়ে বিজলির মতো পার করবে।
৩১. অমঙ্গল দূর করে।
৩২. আমলনামা ডান হাতে আসবে।
৩৩. খোদার এবাদতে ধারাবাহিকতা ধরে রাখা সহজ হয়।
৩৪. শরীর থেকে গরম ভাব দূর করে।
৩৫. কোমরে শক্তি বাড়ায়।
৩৬. কালেমায়ে শাহাদাত পাঠ সহজ করে।
৩৭. ঝগড়া-দ্বন্দের ফলে সৃষ্টি ক্লান্তি ও মনোবেদনা দূর করে।
৩৮. দাঁত সাদা করে।
৩৯. মুখে খুশবু বৃদ্ধি করে।
৪০. কণ্ঠনালী পরিষ্কার করে।
৪১. যবানের ময়লা দূর করে।
৪২. চিন্তা ও অনুভূতি স্বচ্ছ করে।
৪৩. মুখের লালা ও থুথু দূর করে।
৪৪. দৃষ্টিশক্তি প্রখর ও তীক্ষ্ণ করে।
৪৫. সওয়াব বৃদ্ধি করে।
৪৬. সন্তান-সম্পদে বৃদ্ধি ঘটে।
৪৭. প্রয়োজন পূরণে সহায়ক হয়।
৪৮. কবরে প্রশস্ততার কারণ হবে।
৪৯. কবরে প্রশান্তির কারণ হবে।
৫০. নিয়মিত মিসওয়াককারী কোনো দিন মিসওয়াক করতে ভুলে গেলেও মিসওয়াকের সওয়াব মিলবে।
৫১. তার জন্য জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হবে এবং
৫২. ফেরেশতাদের বলা হবে, এই ব্যক্তি নবী-রাসূলের অনুসারী, সে নবী-রাসূলের সঙ্গে সঙ্গে চলবে।
৫৩. নিয়মিত তাকে হেদায়েতের পথনির্দেশ করা হবে।
৫৪. জাহান্নামের দরজা তার জন্য বন্ধ করে দেওয়া হবে।
৫৫. দুনিয়াবী পঙ্কিলতা থেকে তাকে পুরোপুরি মুক্ত করে দেওয়া হবে।
৫৬. মালাকুল মউত তার রূহ কবয করার সময় এমন সুরতে আগমন করবে, যে সুরতে নবী-রাসূল ও অলি-আউলিয়াদের কাছে আগমন করেন।
৫৭. ওই সময় পর্যন্ত তার মউত হবে না, যতক্ষণ না হাউজে কাউসারে পানি পানের ফায়সালা না হবে।
৫৮. সবচেয়ে বড় কথা, মেসওয়াকের অন্যতম ফযিলত হলো, মেসওয়াক সর্বদা মুখ পাক-পবিত্র রাখে এবং
৫৯. মহান আল্লাহ সন্তুষ্টি লাভে মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।
মেসওয়াকের এই সব ফযিলত ও মর্যাদা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। তন্মধ্যে কিছু হাদীস ‘মারফু’ তথা নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পর্যন্ত পৌছে, কিছু হাদীস ‘মাউকুফ’ তথা সাহাবী-তাবেঈ পর্যন্ত পৌছে। কিছু হাদীসের সনদ নিয়ে যদিও মুহাদ্দিসদের মধ্যে বিতর্ক আছে, তবে অসংখ্য হাদীস দ্বারা মেসওয়াকের ফযিলত প্রমাণিত। তাই নিয়মিত মেসওয়াক করা জরুরী ও উত্তম।