ডেস্ক রিপোর্ট ।।
ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতের্তেকে (৭৯) মঙ্গলবার ম্যানিলা বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ। হংকং থেকে দেশে ফেরার পরই তাকে আটক করা হয়। মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে তার শাসনকালের নৃশংসতাকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করেছে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত (আইসিসি)।
কেন গ্রেপ্তার?
দুতের্তে ২০১৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তার “ওয়ার অন ড্রাগস” (War on Drugs) নীতির আওতায় হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়।
সরকারি হিসাব: প্রায় ৬,২৫২ জন নিহত।
মানবাধিকার সংস্থার হিসাব: ২০,০০০-৩০,০০০ জন পর্যন্ত হতে পারে।
অভিযোগ, শুধুমাত্র সন্দেহের ভিত্তিতে শহরাঞ্চলের গরিব জনগোষ্ঠীকে হত্যা করা হয়েছে, যেখানে প্রকৃত মাদক পাচারকারী ও মাফিয়ারা রয়ে গেছে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।
জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশের হাতে খুন হওয়া অধিকাংশ মানুষ দরিদ্র ও প্রান্তিক গোষ্ঠীর সদস্য।
আইসিসির ভূমিকা ও আইনি জটিলতা
ফিলিপাইনের সরকার ২০১৯ সালে আইসিসি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়।
তবে আইসিসি জানিয়েছে, দুতের্তের বিরুদ্ধে ২০১৯-এর আগের অভিযোগের ভিত্তিতেই বিচার চলবে।
সাবেক প্রেসিডেন্সিয়াল মুখপাত্র সালভাদোর প্যানেলো এই গ্রেপ্তারকে “আইনবিরুদ্ধ” বলেছেন।
মানবাধিকার কর্মীদের প্রতিক্রিয়া
এই গ্রেপ্তারকে “ঐতিহাসিক” বলে আখ্যা দিয়েছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো।
আইসিএইচআরপির (International Coalition for Human Rights in the Philippines) চেয়ারম্যান পিটার মার্ফি বলেছেন, “দুতের্তেকে তার শাসনামলের নৃশংসতার জন্য জবাব দিতে হবে।”
দুতের্তের প্রতিক্রিয়া
গ্রেপ্তারের পর তিনি দাবি করেন, “আমি দেশের মানুষের শান্তির জন্য কাজ করেছি। আমার অপরাধ কী?”
তিনি জানান, ক্ষমা চাইবেন না এবং তার নীতি নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দেবেন না।
২২ বছর দাভাওয়ের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময়েও তিনি একইভাবে কঠোর নীতি অনুসরণ করেছিলেন।
পরবর্তী কী?
আইসিসির বিচারে দুতের্তের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হবে।
এই গ্রেপ্তার বিশ্বজুড়ে ক্ষমতাধর নেতাদের জন্য একটি নজির হতে পারে, যারা কঠোর নীতির নামে মানবাধিকারের লঙ্ঘন করেন।
দুতের্তের শাসনামল ছিল ফিলিপাইনের ইতিহাসে অন্যতম রক্তক্ষয়ী অধ্যায়। তার মাদকবিরোধী নীতির জেরে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়, যা আজ তাকে আন্তর্জাতিক বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে।