বাণিজ্য ডেস্ক।।
মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান বিকাশের অ্যাপ ব্যবহারকারীরা ছোট অঙ্কের ঋণ নিতে পারেন সিটি ব্যাংক থেকে। ‘ন্যানো লোন’ নামের এই ঋণ প্রকল্পের আওতায় এখন পর্যন্ত ৭০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ পেয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহকরা।
এই প্রকল্প চালুর দুই বছরেরও কম সময়ে ২ লাখ ৪৫ হাজারের বেশি বিকাশ গ্রাহক ঋণ পেয়েছেন। ২০২৩ সালের হিসাব অনুযায়ী, এই ঋণের গ্রাহকদের ২৪ শতাংশ নারী ও ৫৫ শতাংশ গ্রামে বসবাস করেন।
মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায় সিটি ব্যাংক। এতে বলা হয়, ডিজিটাল লেনদেনের ইকোসিস্টেম উন্নয়নের অংশ হিসেবে জামানতবিহীন এই ঋণ চালু করে সিটি ব্যাংক ও বিকাশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে এক বছরের পাইলট প্রকল্প শেষে ২০২১ সালে বাণিজ্যিকভাবে এই ঋণ প্রকল্প চালু হয়।
সিটি ব্যাংক বলছে, এই প্রকল্প চালুর মূল উদ্দেশ্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে নারী এবং গ্রামে বাস করা গ্রাহকদের তাৎক্ষণিক ঝামেলাহীন এবং সাশ্রয়ী ঋণ দিয়ে দেশের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকে ত্বরান্বিত করা।
সিটি ব্যাংকের হেড অব রিটেইল ব্যাংকিং অরূপ হায়দার বলেন, ‘‘গতানুগতিক পদ্ধতিতে আমরা যেখানে ১৫ বছরে মাত্র ৩ লাখ বার ঋণ দিতে পেরেছি, সেখানে ন্যানো লোনের আওতায় ২ বছরেরও কম সময়ে দিতে পেরেছি ৭ লাখ বার।’’
বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে এই ঋণ নেওয়া যায় ও পরিশোধও করা যায়। গ্রাহকের লেনদেনের ওপর ভিত্তি করে ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ মেলে। এজন্য যেতে হবে না কোনও অফিসে, কোনও নথিতে লাগছে না স্বাক্ষরও, এমনকি প্রয়োজন হচ্ছে না কোনও নমিনি বা জামিনদারের। এই ঋণের মেয়াদ সর্বোচ্চ তিন মাস এবং প্রযুক্তির সহায়তায় দৈনিক হারে সুদ নির্ধারিত হয়।
এই ঋণ যেভাবে মেলে
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী বায়োমেট্রিক পদ্ধতির মাধ্যমে বিকাশের যে গ্রাহকরা ই-কেওয়াইসি সম্পন্ন করেছেন এবং বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করছেন কেবল তারাই সিটি ব্যাংকের এই ঋণ পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচ্য হচ্ছেন।
বিকাশ অ্যাকাউন্টে গ্রাহকের লেনদেন পর্যালোচনা এবং সিটি ব্যাংকের ঋণ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার নীতিমালার উপর ভিত্তি করে স্বয়ংক্রিয় ঋণ মূল্যয়ানের মাধ্যমে গ্রাহকের ঋণ পাওয়ার উপযুক্ততা ও ঋণের পরিমাণ নির্ধারিত হয়।
ঋণের জন্য বিবেচ্য গ্রাহক তার বিকাশ অ্যাপের ‘লোন’ আইকনে ট্যাপ করে কত টাকা ঋণ পাবেন তা দেখতে পারবেন। পরবর্তী ধাপে সিটি ব্যাংক অনুমোদিত সীমার মধ্যে কাঙ্ক্ষিত ঋণের পরিমাণ লিখতে হবে ও শর্তাবলীতে সম্মতি দিতে হবে।
এরপর বিকাশ পিন দিলে সঙ্গে সঙ্গেই বিকাশ অ্যাকাউন্টে ঋণের টাকা পেয়ে যাবেন, যা গ্রাহককে তিনটি মাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে।
ঋণ নেওয়ার পর নির্ধারিত তারিখে বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঋণের কিস্তি পরিশোধ হয়ে যাবে। অথবা, ঋণ গ্রহীতা মেয়াদপুর্তির আগেও ঋণ পরিশোধ করতে পারেন। সেক্ষেত্রে তাকে শুধু সেই কদিনের জন্যই সুদ বহন করতে হবে। অগ্রিম নিষ্পত্তির জন্য দিতে হবে না কোনও বাড়তি খরচ।