রওশন এরশাদকে নিয়ে জাতীয় পার্টিতে নতুন চিন্তা শুরু হয়েছে। নির্বাচন সামনে রেখে তাকে আর দলীয় কোন কার্যক্রমে না রাখার মতো কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। বৃহস্পতিবার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ সদস্যদের যৌথ সভা থেকে এমন বার্তা এসেছে।
দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব মো. মুজিবুল হক, কো-চেয়ারম্যান রুহুল আমিন হাওলাদার ও কাজী ফিরোজ রশীদসহ ৩৯ জন। সভায় দলটির রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের একক ক্ষমতা দেয়া হয় জিএম কাদেরকে। এছাড়াও রাজধানীসহ বিভাগীয় শহরে কর্মীসভা আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয় বৈঠকে।
সভায় অংশ নেয়া নেতারা জানান, বিরোধী দলীয় নেতা ও পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। কি আলোচনা হয়েছে নাম প্রকাশ করে তারা তা বলতে চাননি। তিনজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের সঙ্গে কথা হয় মানবজমিন এর। তাদের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে মানবজমিনকে বলেন, এই যৌথ সভায় রওশন এরশাদের নানা বিষয়ে আলোচনা হয়। তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন জিএম কাদের ভারত থাকার সময়ে, এমনকি চেয়ারম্যান হিসেবেও নিজেকে ঘোষণা করেন সেসময়। বিষয়টি কেউই ভালোভাবে নেননি।
দলের কো–চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ একটি গণমাধ্যমকে বলেন, এখন একটা কঠিন সময় যাচ্ছে। দলের ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ওপর। ওনাকে এই সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।
বৈঠক সূত্র জানায়, কয়েকজন সংসদ সদস্য নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়া নিয়ে কথা বলেন। তারা বলেন, অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে সরকার একটি নির্বাচন করে ফেলবে। এ অবস্থায় জাতীয় পার্টি কি করবে তার সিদ্ধান্ত নেয়া জরুরি।
দলীয় নেতাকর্মীরাও সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন। তাদের কেউ কেউ বলেন, সরকার আরেকটি নির্বাচন করে নিলেও কতদিন থাকতে পারবে এই নিয়ে নানা আলোচনা আছে। তাই কিছুদিন পর্যবেক্ষণ করে দলীয় সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত।
ওদিকে গত বুধবার বনানীতে ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার প্রতিনিধি সভায় জিএম কাদের বলেন, বর্তমান সরকার রওশন এরশাদকে জাতীয় পার্টির ভেতর একটা পয়জন হিসেবে ব্যবহার করছে। পার্টিকে ধ্বংস করতে তাকে আর ব্যবহার করতে দেয়া হবে না।
রওশন এরশাদকে মাতৃতুল্য উল্লেখ করে জি এম কাদের বলেন, ওনাকে আমরা সম্মান করি। উনি আমাকে অনেকবার বলেছেন তোমার নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি ভালো চলছে। তুমি কোনো সময় মনে করবে না, আমি এর বাইরে কিছু করব। কিন্তু এখন বুঝতে পারছি, উনি শারীরিকভাবে সক্ষম নন এবং অনেক ক্ষেত্রে জিম্মি হয়ে গেছেন। অনেকের কাছে অসহায়, কিছু করার নেই।
জি এম কাদের বলেন, বারবার এই পয়জন ঢুকিয়ে দিচ্ছে আওয়ামী লীগ এবং আমাদের ব্লিডিং করা হচ্ছে, আমাদের গৃহপালিত বিরোধী দল করছে। তার একমাত্র কারণ ওনাকে ব্যবহার করা হচ্ছে।