স্টাফ রিপোর্টার।।
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে অপহরণ করে তিন দিন আটকে রেখে দলবদ্ধ ধর্ষণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মামলা করার পর চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাতে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। ওই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার চারজন হলেন দুদুল সরদার, তুসার মাঝি, শাকিব ও নাহিদ। তাঁদের বাড়ি নড়িয়ার ডিঙ্গামানিক ইউনিয়নের চণ্ডীপুর এলাকায়। আজ রোববার দুপুরে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ওই ছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা হয়েছে।
নড়িয়া থানা ও ওই কিশোরীর পরিবার জানায়, ওই স্কুলছাত্রীর বাড়ি নড়িয়ার ডিঙ্গামানিক ইউনিয়নে। ওই ছাত্রী ঈদের দিন সন্ধ্যায় একা বাড়ি থেকে নানার বাড়িতে যাচ্ছিল। পথে দুদুল সরদার ও তুসার মাঝি চণ্ডীপুরের ভিআইপি মোড় থেকে তাকে অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যান। পরে তাঁরা তাকে সুরেশ্বর দরবার শরিফের পাশের একটি টিনের ঘরে আটকে রাখেন। গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুদুল ও তুসার ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। এরপর গতকাল সকালে তাঁরা আরও তিন তরুণকে সেখানে ডেকে আনেন। ওই তিন তরুণও ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাঁরা তাকে একটি অটোরিকশায় উঠিয়ে দেন।
বাড়ি ফিরে ওই কিশোরী তার বোনদের কাছে ঘটনা খুলে বললে তাঁরা তাকে নড়িয়া থানায় নিয়ে যান। নড়িয়া থানার পুলিশ গতকাল রাতে ওই কিশোরীকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। আজ দুপুরে সদর হাসপাতালের এক নারী চিকিৎসক ওই ছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা করেন।
এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বড় বোন গতকাল বাদী হয়ে পাঁচ তরুণের বিরুদ্ধে অপহরণ ও দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে নড়িয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। পুলিশ ওই মামলার আসামি দুদুল সরদার, তুসার মাঝি, শাকিব ও নাহিদকে গ্রেপ্তার করেছে।
ওই ছাত্রী প্রথম আলোকে বলে, ‘ঈদের দিন হেঁটে নানার বাড়িতে যাচ্ছিলাম। তখন দুদুল ও তুসার মাঝি আমাকে মুখ চেপে ধরে অটোরিকশায় সুরেশ্বর দরবার শরিফের কাছে একটি ঘরে নিয়ে আটকে রাখে। একপর্যায়ে তারা আমাকে পদ্মার চরে নিয়ে পুড়িয়ে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করেছে। শনিবার সকালে তাঁরা আরও তিন ব্যক্তিকে আমার কাছে পাঠায়। ওই তিন ব্যক্তিও আমাকে ধর্ষণ করে। আমি অসুস্থ হয়ে পড়লে একটি অটোরিকশায় আমাকে পাঠিয়ে দেয়।’
এ বিষয়ে ওই কিশোরীর বড় বোন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ওরা আমার ছোট বোনটাকে নির্যাতন করেছে। আমি ওদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’ শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক লিমিয়া সাদিনা প্রথম আলোকে বলেন, ওই ছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে। ডাক্তারি পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়া গেলে ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ওই ছাত্রীকে আজ আদালতে পাঠানো হয়েছে। সেখানে এ ঘটনার বিষয়ে সে জবানবন্দি দিয়েছে।