আফগানিস্তানকে উড়িয়ে নিজেদের বিশ্বকাপ শুরু করেছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে নিজেদের প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে বিধ্বস্ত হয়েছে ইংল্যান্ড। এমন অবস্থান থেকে আজ ধর্মশালায় মুখোমুখি দুই দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: ইংল্যান্ড ৫০ ওভারে ৩৬৪/৯
উড়তে থাকা ইংল্যান্ডকে ৩৬৪ রানে ‘আটকাল’ বাংলাদেশ
৪০তম ওভার জস বাটলারকে বোল্ড করেছিলেন শরীফুল। সে ওভারশেষে ৩ উইকেটে ২৯৮ রান ছিল ইংল্যান্ডের। ৪০০ রান নাগালে ছিল ভালোভাবেই। জনি বেয়ারস্টো ও জো রুটের ফিফটির মাঝে ডেভিড ম্যালানের সেঞ্চুরিতে দারুণ ভিত পেয়েছিল বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
তবে ডেথ ওভারে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। শরীফুলের পর সাহসী বোলিং করেছেন মেহেদী। গতির বৈচিত্র ব্যবহার করে পেয়েছেন উইকেটের দেখা। তাতেই ইংল্যান্ডের ঝোড়ো গতি কমে এসেছে ভালোভাবে।
মোস্তাফিজকে আজ নতুন বলে ব্যবহার করা হয়েছে বলে ডেথ ওভার নিয়ে একটা চিন্তা ছিলই। তার ওপর মাঝের ওভারগুলোতে ইংলিশদের ঝোড়ো ব্যাটিং আরও চাপে ফেলে দেয়। তবে শরীফুল ও মেহেদীকে কৃতিত্ব দিতেই হবে। সঙ্গে ফিল্ডিংয়েও বেশ ভালো ছিল বাংলাদেশ।
শেষ ওভারের প্রথম বলে ক্রিস ওকস শুরু করেছিলেন চার মেরে, কিন্তু তাসকিনের দ্বিতীয় বলেই তোলেন ক্যাচ। সব মিলিয়ে ওভারে আসে ৬ রান। শেষ ১০ ওভারে ৬৬ রান তুলতে পেরেছে ইংল্যান্ড, ৬ উইকেট হারিয়ে। আগের ১০ ওভারেও তারা তুলেছিল ১১০ রান। ৩০৭/৩ থেকে ৩৬২/৯—ধস নেমেছে ভালোভাবেই।
তবে এত কিছুর পরও কিন্তু বাংলাদেশের লক্ষ্য ৩৬৫ রান। শেষ ১০ ওভারের বোলিং কতটুকু পার্থক্য গড়তে পারবে, সেটি দেখা যাবে বাংলাদেশ এ লক্ষ্যে কীভাবে এগোয়, তারপরই।
শরীফুল-মেহেদী লাগাম টেনে ধরছেন ইংল্যান্ডের
ম্যালানের বিপক্ষে এমন ডেলিভারিতে সফল হয়েছিলেন। ব্রুকের বিপক্ষে গতি কমিয়ে আনা ডেলিভারিতে সফল হলেন মেহেদী। আগের বলে ফুলটসে চার মেরেছিলেন ব্রুক। এবার গতি কমিয়ে অফ স্টাম্পের বাইরে করলেন মেহেদী। তুলে মারতে গিয়ে লং অফে লিটনের হাতে ধরা পড়েছেন ১৫ বলে ২০ রান করে।
২ বলে রুট ও লিভিংস্টোনের উইকেট শরীফুলের
শরীফুলের আরেকটি নাকল বল। আরেকটি উইকেট। এবার তাঁর শিকার জো রুট। স্টাম্প লাইন থেকে আড়াআড়ি তুলে মারতে গিয়ে খাড়া ওপরে তোলেন রুট। সময় পেয়ে কাজে লাগিয়েছেন মুশফিকুর রহিম, ভুল করেননি কোনো। রুট আউট ৮২ রানে। সর্বশেষ ১৫ বলে ছিল না বাউন্ডারি। সে চাপেই এল রুটের উইকেট।
এবং ঠিক পরের বলেই বোল্ড লিয়াম লিভিংস্টোনও! এবার সিমের ওপর আঙুল ঘুরিয়ে করেছিলেন। ডিফেন্ড করতে গিয়ে পুরো মিস করে গেছেন লিভিংস্টোন। গোল্ডেন ডাক তাঁর। হুট করেই ইংল্যান্ডের লাগাম টেনে ধরার ইঙ্গিত বাংলাদেশের। ২৯৬ রানে ২ উইকেট থেকে ৩০৫ রানে ৫ উইকেট।
থামলেন ম্যালান
প্রথম বলে চার। পরের বলে গতির পরিবর্তন, অনেকটাই কমিয়ে এনেছিলেন মেহেদী। টসড আপ ডেলিভারিতে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে মিস করে অবশেষে বোল্ড হয়েছেন ম্যালান। ১০৭ বলে করেছেন ১৪০ রান। সেঞ্চুরির পর ১৬ বলে তিনি করেছেন ৪০ রান। রুটের সঙ্গে তাঁর দ্বিতীয় উইকেট জুটি থেমেছে ১৫১ রানে।
মালানের সেঞ্চুরি, রুটের হাফ সেঞ্চুরিতে অস্বস্তিতে বাংলাদেশ
১১৫ রানে বাংলাদেশ প্রথম উইকেট পায়। তবে ডেভিড মালান শক্ত হাতে দাঁড়িযে গেছেন। জো রুট তার সঙ্গে পঞ্চাশ রানের জুটি গড়ে ফেলেছেন। ৩৯ বলে হাফ সেঞ্চুরিকে সেঞ্চুরি বানাতে মালান খেলেছেন আরও ৫২ বল। ৯১ বলে ১২ চার ও ২ ছয়ে শতক হাঁকান তিনি। এই বছর এটি তার চতুর্থ সেঞ্চুরি। এক বর্ষপঞ্জিকায় ইংল্যান্ডের জার্সিতে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরি হাঁকানোর তালিকায় ডেভিড গাওয়ার (১৯৮৩) ও জনি বেয়ারস্টোর (২০১৮) সঙ্গে যৌথভাবে শীর্ষে বসলেন তিনি। ২৩ ইনিংস খেলে সবচেয়ে দ্রুততম ছয় সেঞ্চুরির কীর্তি গড়লেন মালান। ৩৩তম ওভারের পঞ্চম বলে ছক্কা মেরে দ্বিতীয় উইকেটে শতরানের জুটি অতিক্রম করেন তিনি। তার দুটি করে চার ও ছয়ে মেহেদী হাসান মিরাজের এই ওভারে ২২ রান তোলে ইংল্যান্ড।
পরের ওভারে শরিফুল ইসলামের তৃতীয় বলে স্কয়ার লেগ দিয়ে চার মেরে হাফ সেঞ্চুরি করেন রুট। ৪৪ বলে চারটি চার ও একটি ছয়ে ফিফটি করেন তিনি। পরের ওভারে তাওহীদ হৃদয়ের হাত ফসকে জীবন পান রুট।
সাকিবের হাত ধরে এলো প্রথম সাফল্য
অবশেষে বাংলাদেশ পেয়ে গেলো অতি প্রয়োজনীয় উইকেট। ১৮তম ওভারে সাকিব আল হাসান ভেঙে দিলেন ১১৫ রানের উদ্বোধনী জুটি। জনি বেয়ারস্টো ফ্লিক করতে গিয়ে বল ইনসাইড এজ হয়ে লেগস্টাম্পে আঘাত করে। ৪৯ বলে ৮ চারে ৫২ রানে বিদায় নেন ইংলিশ ব্যাটার।
টস
টসে টেলস ডেকেছেন সাকিব আল হাসান। টসে জিতেছেন তিনি। আগের দিনের মতোই নিয়েছেন ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত।
দুই দলেই আছে একটি করে পরিবর্তন। বাংলাদেশ দলে মাহমুদউল্লাহ জায়গা করে দিয়েছেন মেহেদী হাসানকে। ইংল্যান্ড রিস টপলিকে এনেছে মঈন আলীর জায়গায়। মঈন কিন্তু দলের সহ-অধিনায়কও।
বাংলাদেশ একাদশ
লিটন দাস, তানজিদ হাসান, নাজমুল হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম (উইকেটকিপার), তাওহিদ হৃদয়, মেহেদী হাসান, তাসকিন আহমেদ, শরীফুল ইসলাম ও মোস্তাফিজুর রহমান।
ইংল্যান্ড একাদশ
জনি বেয়ারস্টো, ডেভিড ম্যালান, জো রুট, হ্যারি ব্রুক, জস বাটলার (অধিনায়ক ও উইকেটকিপার), লিয়াম লিভিংস্টোন, স্যাম কারেন, ক্রিস ওকস, মার্ক উড, আদিল রশিদ ও রিস টপলি।