রাজনীতি ডেস্ক।।
নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপির সাবেক নেতারা আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে ধর্না দিচ্ছেন বলে দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি এও বলেছেন, কাউকে চাপ দিয়ে নির্বাচনে আনার চেষ্টা আওয়ামী লীগ করছে না।
সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইসের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নে এসব কথা বলেন আসাদুজ্জামান খান।
৭ জানুয়ারি ভোটের তারিখ রেখে নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের যে তফসিল ঘোষণা করেছে, তা প্রত্যাখ্যান করে অবরোধ-হরতালের মত কর্মসূচিতে রয়েছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো।
তবে এর মধ্যেই বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা তিনটি দল সরকার পতনের ‘এক দফা’ ছেড়ে ভোটের লড়াইয়ে নেমেছে। বিএনপির সাবেকদের নিয়ে আরো দুটি দল ভোটের প্রস্তুতিতে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
সরকার চাপ দিয়ে বিএনপির সাবেক নেতাদের নির্বাচনে আনছে কিনা, এ প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “এখানে চাপের কোনো প্রশ্নই আসে না। এরা স্বপ্রণোদিত হয়ে আসছে।
“এরা (বিএনপির সাবেক নেতা) সবসময় আমাদের নেতাদের বাড়ি বাড়িও যাচ্ছেন। তারা ইলেকশন করবেন, করতে চান। আমাদের কথা একটাই- নির্বাচন ডিক্লেয়ার হয়ে গেছে, আপনারা যেভাবে দল ভেঙে যে নতুন দল করেছেন, সেভাবেও আসুন বা আপনারা যেভাবে আসতে পারেন, আসুন। আমাদের তরফ থেকে আপনাদেরকে আমরা স্বাগত জানাই।”
সরকারের ‘প্রভাবে’ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির নেতাদের জামিন দেওয়া হচ্ছে না বলে যে অভিযোগ তাদের আইনজীবীরা করছেন, সে বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। জবাবে তিনি বলেন, বিচার বিভাগ ‘সম্পূর্ণ স্বাধীন’।
“সরকারের কোনো প্রভাব সেখানে নেই। কেইস টু কেইস দেখে তারা (বিচারক) জামিন দিচ্ছেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এখানে কোনো কিছুতে প্রভাবান্বিত হয়ে বিচারকরা সিদ্ধান্ত দেননি। আমাদের চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত নয় এটা।”
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সিদ্ধান্ত ‘মানতে পারেননি; বলেই দলটির নেতারা নতুন জোট করে নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভাষ্য।
তিনি বলেন, “এরা (যারা দল ছেড়েছে) সবাই বিএনপির প্রমিনেন্ট নেতা, তারাই ভাগ হচ্ছেন। এখানে কাউকে জোর করতে হয়নি, তাদের কেন্দ্রীয় কমিটি যে সিদ্ধান্ত দিচ্ছে, তাদের মনপুত হচ্ছে না।
“তারা নির্বাচনমুখী, সেজন্যই তারা নির্বাচনে চলে আসছেন। তারা তাদের সেন্ট্রাল কমিটির নির্দেশের বাইরে চলে আসছেন। আমাদের দল থেকে তাদের জোর করার কিংবা আহ্বান জানানোর কোনো প্রশ্নই আসে না।”
২৮ অক্টোবরের পর ‘মামলা কমেছে’
গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশঘিরে সহিংসতার পর সারা দেশে মামলার সঙ্গে গ্রেপ্তারের সংখ্যাও কমেছে বলে দাবি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। তিনি বলেন, “২৮ অক্টোবরের আগে সারা দেশে প্রতিদিন দুই হাজারের কাছাকাছি বিভিন্ন অভিযোগে জেলখানায় যেত, গ্রেপ্তার করা হত। আবার দুই হাজারের কাছাকাছি রিলিজ হত। আর ২৮ অক্টোবরের পরে এ সংখ্যা কমে আসছে।
“এখন গড়ে প্রতিদিন এক হাজার ৮১৬ জন জেলে যাচ্ছে। এর নানাবিধ কারণ হতে পারে। আমরা বলছি, আপনাদেরকে যারা ভুয়া সংবাদ দিচ্ছে, যে আমরা যাকে পাই তাকে ধরছি। সেটি কিন্তু সঠিক নয়।”
মন্ত্রী বলেন, “২৮ অক্টোবরের আগে সারাদেশে প্রতিদিন ৫৬৫টি মামলা হত। আর ২৮ অক্টোবরের পরে এখন পর্যন্ত প্রতিদিন ৪৩৮টি মামলা হয়েছে। ১২৭টির মত মামলা কমেছে। আমি আপনাদের ধারণাটা দিলাম, তারা যে বলছে রাজনৈতিক মামলায় যাকে পাচ্ছি বিএনপির নেতাদের ধরছি, মামলা করছি, এটা কিন্তু সঠিক নয়।”
আরও পড়ুন: ইবরাহিমকে তাঁর নির্বাচনী এলাকা হাটহাজারীতে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে বিএনপি