স্টাফ রিপোর্টার।।
জলদস্যুরা ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় নিয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) সন্ধ্যায় জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূল থেকে প্রায় ৭ নটিক্যাল মাইল দূরে ‘গ্যারাকাড’ নামক এলাকায় নিজেদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় নোঙর করেছে দস্যুরা। তবে সুস্থ আছেন জাহাজটিতে থাকা ২৩ নাবিক। আগের দস্যুদের সঙ্গে জাহাজটিতে নতুন করে যোগ দিয়েছে আরও ১৫-২০ জন সশস্ত্র দস্যু।
সোমালিয়া উপকূলে অর্থাৎ নিজেদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটিকে নিয়ে যাওয়ার পর নাবিকদের নিজ নিজ কেবিনে থাকার সুযোগ করে দিয়েছে জলদস্যুরা। এর আগে সবাই জাহাজটির ডেকের কক্ষে জিম্মি অবস্থায় ছিল। সব নাবিক সুস্থ আছেন। বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) সন্ধ্যায় কবির গ্রুপের কর্মকর্তাদের ফোন করে এ তথ্য জানান জিম্মি জাহাজের প্রধান কর্মকর্তা আতিক উল্লাহ খান। গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন গ্রুপটির গণমাধ্যম কর্মকর্তা মিজানুল ইসলাম। তিনি বলেন, জলদস্যুরা জাহাজটিকে সোমালিয়ায় তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় নিয়ে গেছে। নাবিকরা সকলে সুস্থ আছেন। জাহাজসহ জিম্মি নাবিকদের ফিরিয়ে আনতে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
আরও একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘এমভি আবদুল্লাহ’ জাহাজ সোমালিয়ান কোস্ট থেকে ৭ মাইল দূরে নোঙর করেছে। জাহাজের নাবিকরাই সব দায়িত্ব পালন করেছে, জলদস্যুরা শুধু অস্ত্র হাতে পাহারা দিচ্ছে। জাহাজে সোমালিয়া থেকে অস্ত্রশস্ত্রসহ ১৫-২০ জনের নতুন দস্যু দল এসে পুরানোদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে। জাহাজের নাবিকরা সেহরি, ইফতার করছে এবং জাহাজের ব্রিজে জামায়াতে নামাজ আদায় করছে। গতকাল সবাই ব্রিজে থাকলেও আজ সবাইকে দিনের বেলায় কেবিনে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’
বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএমওএ) সাধারণ সম্পাদক মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমরা সর্বশেষ এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের অবস্থান শনাক্ত করেছি। জাহাজটিকে জলদস্যুরা তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় সোমালিয়া উপকূল থেকে ৭ নটিক্যাল মাইল দূরে নিয়ে নোঙর করেছে। এখন পর্যন্ত জলদস্যুরা জাহাজ মালিক পক্ষকে ফোন করে কোনও দাবি-দাওয়া জানায়নি।’
এর আগে, ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর আরবসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল একই প্রতিষ্ঠানের জাহাজ ‘এমভি জাহান মণি’। ওই জাহাজের ২৫ বাংলাদেশি নাবিকের পাশাপাশি এক ক্যাপ্টেনের স্ত্রীসহ ২৬ জনকে ১০০ দিন জিম্মি করে রাখা হয়েছিল। সরকারি উদ্যোগসহ নানা প্রক্রিয়ায় ২০১১ সালের ১৪ মার্চ জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হয়। ১৫ মার্চ তারা বাংলাদেশে ফিরে আসেন।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে কবির গ্রুপের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়ার খবর জানতে পারে গ্রুপের কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: এমভি আবদুল্লাহকে সোমালিয়া উপকূলের দিকে নিয়ে যাচ্ছে দস্যুরা