পরীক্ষা
জীবনের তালপাতা জুড়ে পরীক্ষার ঘনঘটা। প্রশ্নের পদে পদে নিষিন্দা ফুলের মত ফুটে আছে বিষাদের নিম।
তাই দেখে দেখে অসীম আনন্দে গড়ায় নিমফুল। অভিধান খুলে বসে।
দেখে খুব অষ্পষ্ট খোড়ল আর মুছে ফেলার বিবিধ ব্যাকরণ লিখিত অবস্থায় পড়ে আছে।
বহুকাল।
তারপর তারা যাত্রা শুরু করে ডাক্তারের দরজায়। তারপর কবিরাজ। তারপর মাওলানা।
তারপর পুরোহিত। আর তারা সকলেই সুস্থ সমাধান দিতে অপারগতা জানায়।
এদিকে প্রবল শীতের আগেও পিছু ছাড়তে চাইছে না আবহাওয়া। টপ শট থেকে পরিপক্ক টক
বরইয়ের গাছের মতন চেহারা। তুখর রসালো নাছোড় বৃষ্টি ও নিমফুল।
কারণ দর্শানোর নোটিশে পরিষ্কার জানিয়ে দেয়া হয় আমার একটা উঠোন দরকার। একটা সূর্য।
একটা চাঁদ। আর একটা বটগাছ।
নদীও দরকার। দরকার বসন্ত বাউরি পাখি। কেঁচো। উজ্জ্বল খয়েরী তেলাপোকা।
কমিটির সম্মতিক্রমে বাতিল ঘোষিত হয় রোল
রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার। বাতিল ঘোষিত হয় নিমফুল
বাতিল হতে থাকে সর্বজনবিদিত আর্তনাদ।
নিমফুল ও মাথাকাটা প্রজাপতি
নীল গভীর সমুদ্রের তলায় দেখো কিভাবে সাঁতরাচ্ছে প্রজাপতির মুন্ডুরা ।
তাদের পাখা গুলো ছিঁড়ে গিয়েছিল প্রথম স্তরেই। তবুও তাহারা থামে নাই।
থামে নাই বিধায় তাহারা ক্রমান্বয়ে হারাতে বসিয়াছে তাহাদের তুলোর মতন শরীর।
তথাপিও তাহারা থামে নাই।
কেননা নীল সমুদ্রের সঙ্গে জীবন যাপন তাহাদের বহু সাধনার ফসল।
হোক সে মৃত্যুর ঠিকানা লেখা একমাত্র ডাকবাক্স, যেখানে ইতিপূর্বেও জমা হয়েছিল আরও কিছু মরিচুয়ারির বিষাদাগার।
তথপিও তাহারা নীল সমুদ্র্রের গভীরতর তলদেশকেই স্বাগত জানাইয়াছে।
তাহারা জানিত পৃথিবীর মানুষ একদিন ক্রমাগত গভীর সমুদ্রের দিকেই ধাবিত হইবে।
তাহারা জানিত দেরিদা অথবা ফুকোর বিবেচনা কার্যকরি হইবে না।
অতএব তাহারা নানাবিধ কোন্দল ও সীমানা নির্ধারনের খেলায় মাতিয়া উঠিল।
চিঠি বহন কারি ডাক পিওন বারংবার সতর্কতা সংকেত জারি করিলেও তাহারা তার মূল্যায়ন করে নাই।
বর্তমানে গভীর সমুদ্রের তলদেশে নীল এবং তদ্বেবীয় সম্প্রদায় প্রজাপতির খন্ডিত মস্তক লইয়া
গবেষণারত আছেন। বিষয়টি ভীষণ অপরিস্কার যে
কেমন করিয়া নিমফুল ঐসমস্ত আজব ঠিকানার নিশানা জানিতে পারিল।
সর্বশান্ত যোনিফুল
কয়েকটি মরদেহ মাখানো সকালের রূপালি রৌদ্রুর।
পায়েদের কাছে। রাত্রের সফেদ বিছানায়।
ছড়ানো ছিটানো ডানার হট্টগোল।
মাথার খুব নিকটেই।
মরেছিল কিনা।
কয়েকটি শব্দহীন কবুতর।
দৈনন্দিন দুপুরের খবরে আমিষের উপকরণ।
ফেসবুক লাইভ সম্প্রচারে যোগদান করেছেন দগ্ধ তাসনুভা।
গোলাপি মাস্তুল।
আশিভাগ।
পুড়ে যাওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে বার্ণ ইউনিট।
শোনা গেছে লাশ কাটা ঘরে
তদন্ত কমিটি প্রস্তুত। নিশ্চিন্তে থাকুন। পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে বালি।
বুকের মধ্যে এত খালি খালি লাগে কেন?
আবহাওয়া খবরে বলছে।
পর্যাপ্ত শিলাবৃষ্টি হবে।
ধুয়ে যাবে।
ভেতরে যদি কিছু থেকেও থাকে।
খুন। খোড়ল। বিভৎস্য যোণিফুল।
ক্ষত-বিক্ষত জান্নাতুল ফেরদৌস। হায়।
আজগুবি। ফালতু কোনো ফটফটানি, ফলস সংবাদ টেলিকাস্টের আগেই ফস করে ধরে ফেলবে।
ফরসেনিক বিভাগ।
আলামত পাওয়া গেলেই বিচার।
ধরা যাক দু’একটি ইঁদুর এবার…
আর কত ক্লান্ত হবে মধ্যরাত। আচ্ছা রাত তোমার শরম লাগে না।
এত যে অন্ধকার মাখায়ে রাখ নিজের চারধারে
কুয়োটার কথা মনে পড়ে না তোমার
কয়েকটি ঝিঝি
ঝিঁঝি পোকার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে জাঁহাপনা।
দূর্বল সংযোগে নিখুঁত ছবি দেখতে ব্যর্থ ইউনিয়ন
পারিষদগণও
ওর ছাদের চাল ছিদ্র।
চিৎপটাং যাদুকর।
তামাম বিশ্বজুড়ে। ক্রমাগত কান্নার রোল। ননলিনিয়ার অভিশাপ।
এপিটাফ জুড়ে লিখিত হয় কবিতার কলহ-কোন্দল।
এইমাত্র পাওয়া খবর। প্রতিধ্বণিদের আর্তচীৎকার। শায়েস্তা করা হোক।
স্বেচ্ছামৃত্যু বরণ করেছেন মুংঙ্খ।
জ্যাকসন পোলক
রাস্তার ওপরে ছাদ, ছাদের ওপরে মানুষ, মেঘের ওপাশে দেয়াল।
সাদা কালো দীর্ঘ বিস্তীর্ণ দেয়াল এবং দেয়ালের ওপরে আরও
কিছু দেয়ালের পরিবার…মহাশুণ্যে ওঠার মই ;
এইসব অতিক্রম এঁকেছিলেন ভ্যনগঘ অনেক আগেই
মহাশুন্যের ওপরে চিলেকোঠা, চিলেকোঠার ওপরে
চাতক, চেয়ে থাকা পথ, অপেক্ষা, অপেক্ষাকৃত কবুতরের
বাকবাকুম, ঝরে পড়া শেফালির বিরাট বসন্ত অথবা শীত বর্ষা হেমন্তের
পায়ের শব্দ আঁকতে ভুলে গিয়েছিলেন তিনি।
এইসব অনাকাক্সিক্ষত বাতাস বর্জ্যপাত আঁকতে
চেয়েছিলেন সেজান, পেরে ওঠেননি।
কেবল কয়েকশ যুবতী আপেলের গর্জিয়াস
পোড়া
আনন্দ এঁকেই ক্ষান্ত দিলেন।
দালির অবস্থা আরো শোচনীয়।
বোম্বে সাফায়ারের গেলাস সাজিয়ে
পাসপোর্টেই নেভালেন তৃষ্ণার্ত ক্যানভাস।
বলতে গেলে পেলেন না কিছুই।
টুটুটাং শব্দস্বরে লাফিয়ে নামল দালির বরফ।
আর সে কারণেই দূর্ঘটনা ঘটল।
অবসাদগ্রস্থ দালির অভিমান গলে পড়ল
হাত ঘড়ির অবয়বে।
লক্ষচ্যুত হল সময়ের তালাঘর।
তথাপি সত্যিকার অর্থে জ্যাকসন পোলাকেই পরিপূর্ণ আশ্রয়।
আলো শব্দ চীৎকার আর অসভ্য সভ্যতার ডাস্টবিনে
একমাত্র তিনিই ঘুরিয়ে মারলেন সুন্দরের বাড়ি
উড়িয়ে মারলেন কক্ষপথ
জন্ম নিল মাইলকে মাইল ডুমুরের ক্ষেত
বৃক্ষ মেহগণি
অবয়বের ক্ষিপ্রতম রকেটে
ঘোরালেন স্টিয়ারিং
এইবার চোখ বন্ধ কর পথিক
কল্পনা কর তোমার সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে একটি সাদা দেয়াল
একজন রঙমিস্ত্রির হাশর।
নাকবিতা
গলগল করে রক্ত পড়ছে কলকল করে জল
খলবল করে সময়ের দুর্দান্ত ডাক
চল মুসাফির চল
কোথায় যাবে মুসাফির
কোনো পথের ঠিকানা জানা আছে কিনা…
থাকলে সেসব পথকে আমার শ্রদ্ধা জানাইও
তাদেরকে বইলো চিঠি পত্র দিতে
কতদিন এক গ্লাস শরবতের চিঠি পাইনা
কলিজায় বরফের চাঁই
চাই মাঝে মাঝে। কেউ তা মানিনা। হয়ত জানি। জানিও না।
দেখেন ভাইসববোন এমন গণগনে রোইদের ভিতর মডেল টেস্টের উৎপাত
সহ্য হইতেসে না হরমুজের দাম কমিয়া আসিয়াছে মাঠে মাঠে লাল নীল হলুদ তরমুজ
র্সা , র্সা নি ধা পা মা গা রে সা, র্সা র্সা র্সা শান্তি আসিতেছে না
ঐ দেখ তুরাগের পানি শান্তির পতাকা হাতে কুজকাওয়াজ করিতেছে
কবি ও কাকেরা চুষিতেছে চন্দনের দানা
কেউ কিছু বলছেনা… নাকি শুনছেনা… নাকি দেখছেনা… নাকি বুনছেনা বীজ!
গিজগিজ
পলেথিন মুখমন্ডলহীন মাছ গোলাপী বাগদাশ বস্তা পোড়া হা হা-কার
প্রিয়ভাষিনীর হাড়
রক্তের ফোমে দমে দমে নর্থেন্ড কফি
পুরানো পেস্ট্রির জামা…চকলেট ফ্লেভারের আতর। সংঘবদ্ধ দাড়ি কমা।
গলগল
দুুপুরে ফুলের গোলমাল। থামানো যাচ্ছে না…
ময়লার ড্রামে সোনার বিজনেস কেইস কেইস হ্যানিক্যান
শ্রাবণ আকাশ জুড়ে চৈতী কলতান
এর ভেতরে রক্তাক্ত প্যাড আসতে পারে না
এইভাবে কবিতা হবে না
তাকে মিনিমাম মর্যাদা দিতে হবে
ভাবে ভাষায় অনুভবে একটা গভির উদাসীনতা
এইরকমের সা কা র ফিস অনুভূতি দিয়ে কবিতা হবে না
চলো সমবেত গাই ‘দেখিতে সোনার নাগর গো চান্দেরও সমান…’
কবিতার জন্য কমপক্ষে একটু সুর দরকার
নিদেন পক্ষে ভালোবাসা আর
একটা গণতান্ত্রিক সরকার।