স্টাফ রিপোর্টার।।
জলদস্যুদের কবলে পড়া বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ’র সব নাবিক সুস্থ আছেন। দস্যুরা গত ছয় দিনেও জাহাজের মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোনও দাবি-দাওয়া জানায়নি। তবে মালিকপক্ষ নিজ থেকে মধ্যস্থতার জন্য বেশ কিছু মাধ্যমের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। যাতে জাহাজসহ নাবিকদের অক্ষত অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়। রবিবার (১৭ মার্চ) দুপুরে এ তথ্য জানান কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মো. মিজানুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘জাহাজে জিম্মি সব নাবিক সুস্থ আছেন। শনিবার রাতেও এক নাবিক জাহাজ থেকে ফোন করে মালিকদের জানিয়েছে তাদের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে। তবে তাদের যে খাবার মজুত আছে তা দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। কেননা, নাবিকদের সঙ্গে খাবার খাচ্ছে দস্যুরাও। আমরা চেষ্টা করছি, নাবিকদের যাতে সুস্থভাবে দেশে ফিরিয়ে আনা যায়। এ জন্য আমরা প্রক্রিয়া শুরু করেছি। ইতোমধ্যে মধ্যস্থতার জন্য বিভিন্ন মাধ্যমের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তবে এখন পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত সাড়া পাওয়া যায়নি।’
এদিকে, গত ছয় দিন ধরে জিম্মি জাহাজের ২৩ নাবিকের পরিবারের সদস্যরা চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছে। নাবিকদের দুশ্চিন্তায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন স্বজনরা। জাহাজটিতে থাকা বেশ কয়েকজন নাবিক হচ্ছে তাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তি। এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের প্রধান কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মো. আতিক উল্লাহ খানের মা শাহানুর বেগম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার পরিবারে একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তিই হচ্ছে আতিক। দস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়ার পর থেকে তার পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাকে একপর্যায়ে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে। তিন মেয়ে সবসময় বাবার কথা বলছে। ছেলেকে নিয়ে আমরা খুব চিন্তিত। আশা করছি তাদের দ্রুত ফিরিয়ে আনতে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’
গত মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে কবির গ্রুপের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়ার খবর জানতে পারেন গ্রুপের কর্মকর্তারা। জাহাজটি আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে সোমালিয়ার অফকোস্ট থেকে ৪৫০ নটিক্যাল মাইল দূরে জলদস্যুর কবলে পড়ে। জাহাজটিতে মোট ২৩ বাংলাদেশি নাবিক আছেন। এর আগে, ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর আরব সাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল একই প্রতিষ্ঠানের জাহাজ ‘এমভি জাহান মণি’। ওই জাহাজের ২৫ বাংলাদেশি নাবিকের পাশাপাশি এক ক্যাপ্টেনের স্ত্রীসহ ২৬ জনকে ১০০ দিন জিম্মি করে রাখা হয়েছিল। সরকারি উদ্যোগসহ নানা প্রক্রিয়ায় ২০১১ সালের ১৪ মার্চ জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হয়। ১৫ মার্চ তারা বাংলাদেশে ফিরে আসেন।
আরও পড়ুন: সোমালিয়ায় নেওয়ার পর নাবিকদের কেবিনে রেখেছে দস্যুরা