চট্টগ্রাম প্রতিনিধি ।।
বাংলাদেশে পেঁয়াজের চাহিদা প্রতি বছর প্রায় ৩৮ লাখ টন। এর মধ্যে উৎপাদন হয় ৩৫ লাখ টন, তবে বাজারে আসে মাত্র ২৬ থেকে ২৭ লাখ টন। এ ঘাটতি পূরণে ১০ থেকে ১১ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। এতদিন ৯০ শতাংশ আমদানিই হতো ভারত থেকে। তবে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা উন্মুক্ত পদ্ধতিতে বাজার অনুসন্ধান শুরু করেন এবং নতুন উৎস হিসেবে পাকিস্তানকে বেছে নেন।
গত ৬ মাসে পাকিস্তানসহ ৮টি দেশ থেকে মোট ১৩ হাজার ৫৯৬ দশমিক ৬৩ টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে। এর মধ্যে পাকিস্তান থেকে এসেছে ৬ হাজার ২৯১ টন, যা মোট আমদানির ৪৭ শতাংশ। সহজলভ্য দাম এবং স্থিতিশীল জাহাজ পরিবহনের কারণে পাকিস্তান হয়ে উঠেছে অন্যতম নির্ভরযোগ্য উৎস।
বিগত সময়ে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন অজুহাতে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করতেন। ফলে বিকল্প উৎস খোঁজার চেষ্টা চালান ব্যবসায়ীরা। তবে পূর্ববর্তী সরকারের নীতিগত অনাগ্রহের কারণে পাকিস্তানের মতো কাছের দেশগুলো থেকে আমদানি সম্ভব হয়নি।
মিয়ানমার থেকেও পেঁয়াজ আমদানির সুযোগ রয়েছে, তবে দেশটির অভ্যন্তরীণ গৃহযুদ্ধের কারণে তা সীমিত। বর্তমানে পাকিস্তানের পাশাপাশি মিসর, চীন, নিউজিল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস এবং থাইল্যান্ড থেকেও পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে।
পাকিস্তানি পেঁয়াজের কেজি ৪৫ টাকা, যা ভারতীয় পেঁয়াজের তুলনায় সস্তা। সহজলভ্য এই বাজার স্থায়ী হলে দেশি বাজারে পেঁয়াজের দামে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বর্তমানে ফরিদপুর, পাবনা, রাজবাড়ী, এবং রাজশাহী থেকে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ শুরু হয়েছে। তবে কৃত্রিম সংকট এড়াতে এবং আমদানি নির্ভরতা কমাতে সরকার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করছে।
নতুন উৎস হিসেবে পাকিস্তান থেকে পেঁয়াজ আমদানি দেশের বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তবে দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য স্থানীয় উৎপাদন বাড়ানো ও সংরক্ষণ ব্যবস্থা উন্নত করা অত্যন্ত জরুরি।