বুধবার, আগস্ট ৬, ২০২৫

‘সুন্দরবনের আগুন সম্পর্কে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না’

by ঢাকাবার্তা
সুন্দরবনে আগুন নেভানোর কাজ চলছে।

বাগেরহাট প্রতিনিধি ।। 

সুন্দরবনের আমোরবুনিয়া টহল ফাঁড়ির লতিফের ছিলা এলাকায় লাগা আগুন এরই মধ্যে অন্তত চার একর বনভূমিতে ছড়িয়ে পড়েছে। আগুন যাতে নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে না পারে, এ জন্য ফায়ার লাইন কাটা হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের খুলনা কার্যালয়ের ইন্সপেক্টর মো. হাবিবুল্লাহ ঘটনাস্থলে আছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ভোর ৫টা ৪৫ মিনিট থেকে কাজ শুরু করেছি। এখন যাতে নতুন করে আগুন ছড়িয়ে পড়তে না পারে, এ জন্য ফায়ার লাইন কাটা হয়েছে। পানি দিয়ে আমরা পুরো এলাকা ভিজিয়ে দিচ্ছি। তিনটি পাম্প মেশিনের সাহায্যে সকাল থেকে পানি দেওয়া হচ্ছে। এখন বিস্তৃত বড় আগুন কোথাও নেই। বিক্ষিপ্তভাবে যেসব জায়গায় ধোঁয়া আছে, সেখানে পানি দেওয়া হচ্ছে।’

আগুন নিয়ন্ত্রণে থাকার কথা বলেছেন খুলনা অঞ্চল বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো। তিনি বলেন, ‘আসলে বনের আগুন নিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি হচ্ছে ফায়ার লাইন কাটা। অর্থাৎ আগুনের কেন্দ্রবিন্দু থেকে চারদিকে একটি শুরু নালা কাটা, যাতে করে আগুন একটা নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ করা যায়। ভোর থেকে সেই কাজ শুরু হয়। সকালে আমরা ফায়ার লাইন কাটা শেষ করেছি। এরপর ভেতরে যেসব জায়গায় আগুন আছে, তা নেভানো হচ্ছে। এখন আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আছে। নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা নেই। যেহেতু এখানে অনেক শুকনা পাতা, তাই পানি দেওয়ার কাজ চলতে থাকবে।’

এই কর্মকর্তা বলেন, আজ সূর্যোদয় থেকে আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়। বন বিভাগের স্থানীয় দুই শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। চার একরের মতো এলাকাজুড়ে ফায়ার লাইন কাটা হয়েছে। ইতিমধ্যে আগুন বেশ নিয়ন্ত্রণে আছে। আজকের মধ্যেই এটা ভালো অবস্থানে যাবে, এমনটা আশা করা যাচ্ছে।

বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক মো. সাইদুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের ভেতরে ও বাইরে কয়েক ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে কাজ করতে হচ্ছে। বনের মধ্যে সাপসহ বিভিন্ন বন্য প্রাণী থাকায় সূর্যাস্তের পর এখানে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। পানির উৎস থেকে ঘটনাস্থলের দূরত্ব অনেক বেশি। মাটির ওপরে শুকনা পাতার স্তর। এখানে এক জায়গায় আগুন নিভিয়ে দেওয়ার পর আবার নতুন করে অন্য জায়গায় ছড়াচ্ছে। ঘটনাস্থলে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পৌঁছানো বেশ কঠিন। সবকিছু মোকাবিলা করে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এখন প্রায় ৬২ জন ফায়ার ফাইটার কাজ করছেন। বনের আগুন সম্পর্কে এখনই পরিষ্কার করে কিছু বলা যাচ্ছে না।’

জিউধারায় বনজীবীদের পারমিট বন্ধ

সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় একটি স্টেশন এলাকায় সব ধরনের পাস-পারমিট (বনে প্রবেশের অনুমতি) স্থগিত করা হয়েছে। আজ থেকে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের জিউধারা স্টেশনের অন্তর্গত পুরো বনাঞ্চলে জেলে-বনজীবীদের পাস পারমিট বন্ধ করা হয়েছে।

জিউধারা স্টেশনের আমোরবুনিয়া টহল ফাঁড়ির লতিফের ছিলা এলাকায় গতকাল থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ার ঘটনাকে ‘বিপর্যয়’ বিবেচনা করে ব্যবস্থা নিয়েছে বন বিভাগ। সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এখানকার যে পাস–পারমিট আছে, এটা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে এই বিপদ না কাটা পর্যন্ত।

You may also like

প্রকাশক : মানজুর এলাহী

সম্পাদক : হামীম কেফায়েত

ব‌ইচিত্র পাবলিশার্স
প্যারিদাস রোড, বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০
যোগাযোগ : +8801712813999
ইমেইল : news@dhakabarta.net