কলকাতা প্রতিনিধি ।।
জার্মানির বার্লিনে বিয়ে করলেন পশ্চিমঙ্গের জনপ্রিয় তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র এবং ওড়িশার প্রাক্তন সংসদ সদস্য পিনাকী মিশ্র। শুক্রবার বার্লিন প্রাসাদের ছাদে এই দুই রাজনীতিবিদের চার হাত এক হয়। এটি দুজনেরই দ্বিতীয় বিয়ে।
৫১ বছর বয়সী মহুয়া এবং ৬৫ বছর বয়সী পিনাকীর বিয়েটি ‘ডেস্টিনেশন ওয়েডিং’ হিসেবে গণ্য না হলেও তা নজর কেড়েছে দুই দেশের রাজনৈতিক মহলে। যুগলের ঘনিষ্ঠজনদের দাবি, গণমাধ্যম ও জনসমাগম এড়াতেই বেছে নেওয়া হয়েছে বার্লিনকে।
মহুয়া মৈত্র একসময় আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ‘জেপি মর্গ্যান অ্যান্ড চেস’-এ ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে কর্মরত ছিলেন। ওই সময়েই তাঁর বিয়ে হয়েছিল ডেনিশ ফিনান্সার লার্স ব্রর্সনের সঙ্গে, যা পরবর্তীতে বিচ্ছেদে গড়ায়। পিনাকী মিশ্রেরও প্রথম স্ত্রী ছিলেন সঙ্গীতা মিশ্র, যাঁদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।

মহুয়া মৈত্র
মহুয়ার জীবনে এক সময় ঘনিষ্ঠ ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জয় অনন্ত দেহাদ্রাই। কিন্তু সম্পর্কের অবনতির পর তা থানা-পুলিশ পর্যন্ত গড়ায়, বিশেষ করে একটি পোষ্যকে কেন্দ্র করে। পরবর্তীতে জয়ই লোকসভায় মহুয়ার বিরুদ্ধে উপঢৌকন গ্রহণের অভিযোগ তোলেন, যার ফলে মহুয়াকে সংসদ থেকে সাময়িক বহিষ্কৃত হতে হয়েছিল।
মহুয়া ও পিনাকী দুজনেই রাজনীতির সূচনা করেন কংগ্রেস থেকে। মহুয়া কংগ্রেসে স্বল্প সময় থাকলেও পরে তৃণমূলে যোগ দেন এবং ২০১৬ সালে করিমপুর থেকে প্রথমবার বিধায়ক নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৯ ও ২০২৪—পরপর দুইবার কৃষ্ণনগর থেকে সংসদ সদস্য হন।

মহুয়া মৈত্র
অন্যদিকে, পিনাকী মিশ্র কংগ্রেসের টিকিটে ১৯৯৬ সালে প্রথম পুরী থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন। পরে যোগ দেন বিজু জনতা দলে (বিজেডি)। তিনি ২০০৯, ২০১৪ ও ২০১৯ সালে বিজেডির প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন। তবে ২০২৪ সালের নির্বাচনে তাঁকে দলীয় প্রার্থী করা হয়নি। ওড়িশায় রাজনৈতিক মহলে জোর গুঞ্জন রয়েছে, মহুয়ার সঙ্গে সম্পর্কই এর পেছনে কারণ হতে পারে।
যদিও ক্রীড়াবিদ ও অভিনেতা-অভিনেত্রীদের ‘ডেস্টিনেশন ওয়েডিং’ নতুন নয়, দুই দেশি রাজনীতিকের এই বিয়ে বিরল বলেই মত বিশ্লেষকদের। গত বছর মহুয়া ও পিনাকী ইউরোপ ভ্রমণেও গিয়েছিলেন, তখন থেকেই তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে জল্পনা চলছিল।