স্টাফ রিপোর্টার ।।
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম বলেছেন, বাংলাদেশ টেলিভিশনে শুরু হতে যাওয়া ‘নতুন কুঁড়ি’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির চর্চায় উদ্বুদ্ধ করা এবং জাতীয় পর্যায়ে প্রতিনিধিত্বের সুযোগ করে দেওয়াই সরকারের মূল লক্ষ্য।
রোববার শিশু-কিশোরদের প্রতিভা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা ‘নতুন কুঁড়ি–২০২৫’–এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। প্রায় দুই দশক পর বিটিভিতে এ প্রতিযোগিতা ফিরছে।
মাহফুজ আলম বলেন, “শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সময়ে (১৯৭৬ সালে) এ অনুষ্ঠান চালু হয়েছিল। পরে শেখ হাসিনা সরকার রাজনৈতিক কারণে তা বন্ধ করে দেয়। বর্তমান সরকার রাজনৈতিক বিবেচনার ঊর্ধ্বে উঠে শিশু-কিশোর ও তরুণদের প্রতিভা বিকাশে সুযোগ তৈরি করছে। এর মধ্য দিয়ে নতুন প্রজন্মের শিল্পী, গায়ক ও সংস্কৃতিকর্মী তৈরি হবে, যারা জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
আগামী তিন মাসের মধ্যে প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। অক্টোবরের শেষ বা নভেম্বর নাগাদ ফাইনাল আয়োজন করা হবে।
তথ্য উপদেষ্টা জানান, প্রতিযোগিতার কাঠামোয় বড় পরিবর্তন আনা হয়নি। আগের মতো গান, নৃত্য, বক্তৃতা, উপস্থাপনা ও গল্প বলাসহ বিভিন্ন বিভাগ থাকবে। পুরোনো থিম সং ঐতিহ্য হিসেবে রাখা হবে, পাশাপাশি প্রতিবছর নতুন থিম সং প্রকাশ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, মেধা ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে তৃণমূল থেকে প্রতিভা বাছাই করা হবে। “কাউকে বিশেষভাবে সুযোগ দেওয়া বা বঞ্চিত করার কোনো উদ্দেশ্য সরকারের নেই। প্রতিভাবান ও যোগ্য শিশুই সামনে আসবে। বিচারপ্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সাংস্কৃতিক অঙ্গন একপেশে হয়ে পড়েছিল উল্লেখ করে মাহফুজ আলম বলেন, “তখন শিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মীদের সঙ্গে একধরনের ক্লায়েন্ট-প্যাট্রন সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। বর্তমান সরকার সে প্রথা ভেঙে দিয়ে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নতুন প্রজন্মকে সামনে আনার উদ্যোগ নিয়েছে।”
বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক মো. মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা। এ সময় মন্ত্রণালয় ও বিটিভির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা শিশুদের সঙ্গে ‘নতুন কুঁড়ি’র গান শোনেন ও কণ্ঠ মেলান। পরে তিনি পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে এবং কেক কেটে প্রতিযোগিতার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। একই সঙ্গে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রমও শুরু হয়।
১৯৭৬ সালে বিটিভিতে যাত্রা শুরু করে ‘নতুন কুঁড়ি’। শিশু-কিশোরদের প্রতিভা বিকাশ ও জাতীয় পর্যায়ে প্রতিনিধিত্বের সুযোগ করে দেওয়ার কারণে অনুষ্ঠানটি একসময় ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়।