সাগর ইসলাম ।।
২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল ছিল শেখ হাসিনার (Sheikh Hasina) ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন। কিন্তু, এর চেয়েও মূল্যবান এক প্রাপ্তি হলো তরুণ সমাজের মধ্যে জেগে ওঠা দেশপ্রেম ও সচেতনতা। এই বিপ্লব যেন পুরো জাতির চিন্তাধারায় একটি নতুন অধ্যায় সূচনা করেছে, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের জন্য। আগেও কিছু যুবক দেশ নিয়ে ভাবতো, কিন্তু এখন সেই সংখ্যাটা একেবারে আকাশচুম্বী।
জুলাই বিপ্লবের পর দেখা গেছে, তরুণ-তরুণীরা কেবল চিন্তায় সীমাবদ্ধ থাকেনি; তারা নেমেছে মাঠে, দেশের উন্নয়নে হাত লাগিয়েছে। দেশের সমস্যা সমাধানে তরুণদের এমন আত্মনিবেদিত উদ্যোগ অভূতপূর্ব।
ট্রাফিক সমস্যা: ট্রাফিক ব্যবস্থার বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে তারা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে নেমে পড়ছে। কোনো কিছুর পরোয়া না করে, রোদ-বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে শহরের ব্যস্ততম সড়কগুলোতে শৃঙ্খলা ফেরাতে সাহায্য করছে।
বন্যার ত্রাণ কার্যক্রম: বন্যার সময় দেখা গেছে, তরুণরা মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রাণ সংগ্রহ করে বিপর্যস্ত অঞ্চলে পৌঁছে দিচ্ছে। তাদের আন্তরিকতা ও উদ্যম দেখে অনেকেই উৎসাহিত হয়ে পাশে দাঁড়াচ্ছে, ত্রাণের কাজে যুক্ত হচ্ছে।
বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ: নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়লে, তরুণদের একটি দল স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজেদের টাকা দিয়ে পণ্য কিনে সাধ্যের মধ্যে মানুষের কাছে বিক্রি করছে। তাদের মধ্যে কারো কোনো লাভের চিন্তা নেই, বরং মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আনন্দই তাদের বড় পুরস্কার।
এই নতুন প্রজন্মের দেশপ্রেম ও আত্মনিবেদন একদিন বাংলাদেশকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে। যারা দেশের দায়িত্বে আছেন, তাদের উচিত এই তরুণদের চেতনা, তাদের আকাঙ্ক্ষা এবং তাদের শক্তিকে দেশের পুনর্গঠনে কাজে লাগানো। তরুণদের এই আশা-আকাঙ্ক্ষা যদি রাজনৈতিক কিংবা সামাজিক স্বার্থে ভেস্তে যায়, তবে তা হবে জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।
লেখক : সমাজকর্মী ও সংগঠক