স্টাফ রিপোর্টার ।।
পাকিস্তানের সঙ্গে দীর্ঘদিনের অচলাবস্থা কাটিয়ে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে বড় পদক্ষেপ নিচ্ছে ঢাকা ও ইসলামাবাদ। আগামী মাসে পাঁচ দিনের ব্যবধানে ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার এবং পররাষ্ট্রসচিব আমনা বেলুচ। প্রায় ১৫ বছর পর ১৭ এপ্রিল ঢাকায় দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
এরপর ২২ এপ্রিল পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে। সফরকালে পাকিস্তানি প্রতিনিধিদল অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন বলে প্রাথমিকভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছে।
আলোচনার মূল এজেন্ডা বৈঠকে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রতিরক্ষা, কৃষি, আকাশপথে সংযুক্তি এবং সাংস্কৃতিক বিনিময় নিয়ে আলোচনা হবে। বিশেষভাবে একটি সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচির প্রস্তাব দেওয়া হবে। এছাড়া, সরাসরি ফ্লাইট চালু এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়েও অগ্রগতি প্রত্যাশিত। পাকিস্তানের ফ্লাই জিন্নাহ এয়ারলাইন বাংলাদেশে যাত্রী পরিবহনের অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে সম্মতি দিয়েছে।
অনিষ্পন্ন বিষয়গুলোর ওপর জোর বাংলাদেশ স্পষ্ট করে দিয়েছে, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যার জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা, যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ, আটকে পড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসন, সম্পদের হিস্যা ও বৈদেশিক সহায়তার পাওনা পরিশোধের বিষয়গুলোর সমাধান জরুরি। কায়রোতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূসও একই বার্তা দিয়েছেন—এই ঐতিহাসিক বিষয়গুলোর নিষ্পত্তি ছাড়া সম্পর্ক এগোবে না।
পেছনের প্রেক্ষাপট ২০১০ সালের নভেম্বরে ইসলামাবাদে দুই দেশের শেষ সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান, সরকারের পরিবর্তনসহ নানা কারণে সম্পর্ক স্থবির ছিল। গত আগস্ট থেকে পাকিস্তান বিশেষভাবে সম্পর্ক উন্নয়নে মনোযোগী হলেও বাংলাদেশ ধীরভাবেই এগোচ্ছে। তবে ব্যবসা-বাণিজ্যের বাস্তবতা বিবেচনায় এবার বাংলাদেশও আলোচনায় বসছে।