স্টাফ রিপোর্টার ।।
ভারতের অভ্যন্তরে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ভবিষ্যৎ ক্রমেই অনিশ্চিত হয়ে উঠছে। দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে, যার প্রভাবে চাপে পড়েছেন বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া ক্ষমতাচ্যুত দলের নেতারাও।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী তাদের স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে—দেশত্যাগ করতে হবে অথবা আইনগত পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। এতে পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, মেঘালয় ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য রাজ্যে আশ্রয় নেওয়া আওয়ামী লীগের বিপুলসংখ্যক নেতার মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
কেন্দ্রীয় সূত্র বলছে, আগস্ট মাস থেকে ভারতের গ্রেপ্তার অভিযান আরও জোরদার হবে। ফলে এই সময়ের মধ্যেই পালিয়ে থাকা আওয়ামী লীগ নেতাদের অন্য কোনও দেশে যাওয়ার পরিকল্পনা করতে বলা হয়েছে। তবে দেশটিতে অবস্থানরত বহু নেতা এখনো নিশ্চিত নন তারা কোথায় যাবেন বা কী করবেন।
ভারতের অবস্থান কেবল প্রশাসনিক নয়, রাজনৈতিকও বটে। দেশটির সংসদে ‘অনুপ্রবেশ আইন’ আরও কঠোর করার পর থেকেই নাগরিকত্ব না থাকা অবস্থায় বসবাসের ওপর জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে। এর প্রেক্ষিতে ভারতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখন নির্বিচারে অবৈধদের ‘পুশব্যাক’ করছে।
একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা জানিয়েছেন, ভারতে থাকার সুযোগ ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে। গত ৯ মাসে তারা স্ব relatively নিরাপদে থাকলেও এখন তাদের অবস্থান আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। কেউ কেউ ইতিমধ্যে দেশ ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে চলে গেছেন। তবে অধিকাংশেরই এখনও গন্তব্য অনিশ্চিত।
পালিয়ে থাকা এক নেতা বলেন, “ভারতে থাকাও এখন ঝুঁকিপূর্ণ, আর বাংলাদেশে ফিরলে জীবনহানির ভয় রয়েছে। আমরা দোটানায় রয়েছি।” তার ভাষ্য মতে, অন্তর্বর্তী সরকারের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে দেশে ফিরে রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়া প্রায় অসম্ভব।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য জানান, ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে নেতাদের ‘দেশ ছাড়ার’ পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সংবাদমাধ্যমেও অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে প্রচার বাড়ায় আতঙ্ক বেড়েছে। শেখ হাসিনা নিজেও ভারতে অবস্থানরত নেতাদের দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে বলেছেন বলে জানা গেছে।
সূত্র অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ভারতজুড়ে প্রায় ১ লাখ ৪৩ হাজার আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী আশ্রয় নিয়েছেন, যাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক মন্ত্রী, এমপি, জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নেতা ও সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
ভারতের সাবেক কূটনীতিক হুমায়ুন কবির বিষয়টিকে আরও পরিশীলিতভাবে দেখার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, “পুশব্যাকের প্রক্রিয়া যথাযথ নীতি মেনে হওয়া উচিত। জোর করে ধাক্কা দিয়ে কাউকে বের করে দেওয়া মানবিক নয়।
দেশ-রূপান্তরে প্রকাশিত পাভেল হায়দার চৌধুরীর প্রতিবেদন অবলম্বনে