ডেস্ক রিপোর্ট ।।
উত্তর-পূর্ব ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে বাংলাদেশের অর্থে বড় বাঁধ পুনর্নির্মাণ হচ্ছে—এ নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহাকে সতর্ক করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। বিলোনিয়া আসনের সিপিআইএম বিধায়ক দীপঙ্কর সেন এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন। এরপর গত রোববার রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধিরা সীমান্ত পরিদর্শন করেন।
বিধায়ক দীপঙ্কর সেন জানান, বিলোনিয়ার উল্টো দিকে বাংলাদেশের কালিকাপুর এলাকায় শক্তিশালী ও দ্বিগুণ উচ্চতার বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। তাঁর দাবি, আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী এত উচ্চতাসম্পন্ন বাঁধ সীমান্তের এত কাছাকাছি নির্মাণ করা যায় না। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, নতুন বাঁধে দক্ষিণ ত্রিপুরার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তিনি বলেন, সমস্যার সমাধানে জলপ্রবাহের জন্য বিকল্প খাল কাটার প্রস্তাব থাকলেও প্রশাসন এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।
ত্রিপুরার সরকারি হিসাব অনুযায়ী, গত বছরের বন্যায় রাজ্যে ১৭ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হন এবং ৩৮ জনের মৃত্যু হয়। এই প্রেক্ষাপটে পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্টের সচিব কিরণ গীত্বর নেতৃত্বে একটি দল ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পরিদর্শন করে। গীত্ব জানান, দক্ষিণ ত্রিপুরায় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছিল এবং বাঁধ সংস্কারের কাজ চলছে, যা দুই মাসের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য রয়েছে। তবে তিনি বাংলাদেশের বাঁধ নির্মাণ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
বিলোনিয়া পৌরসভার প্রধান নিখিল চন্দ্র গোপ বলেন, শহর রক্ষায় ভারতের অংশে বাঁধের উচ্চতা ১ থেকে ২ মিটার বাড়ানো প্রয়োজন। গত বছরের বন্যায় বিলোনিয়ায় ৩০-৩৫টি ঘর ধসে পড়েছিল বলেও জানান বিধায়ক দীপঙ্কর সেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বাংলাদেশের বাঁধ নির্মাণের বিষয়ে আগেই প্রশাসনকে সতর্ক করা হয়েছিল, কিন্তু কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এখন নির্মাণ শেষের পর প্রশাসন তৎপর হয়েছে।
এর আগে জানুয়ারিতে উত্তর ত্রিপুরার উনকোটি জেলার বিধায়ক বীরজিৎ সিনহাও একই ধরনের উদ্বেগ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন।
বাংলাদেশের ফেনী সংবাদদাতার তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের আগস্টের বন্যায় ফেনীসহ সীমান্তবর্তী ১০টিরও বেশি জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং ৬০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটে। বর্তমানে ফেনীর বল্লামুখা বাঁধ পুনর্নির্মাণের কাজ বিজিবির তত্ত্বাবধানে চলছে, যেখানে ১ হাজার ৩৯০ মিটার বাঁধের মধ্যে ইতিমধ্যে ৪০ শতাংশ মেরামত সম্পন্ন হয়েছে।