ডেস্ক রিপোর্ট ।।
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে মুক্তি দেওয়ার দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের ভূমিকা নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে রিচার্ড গ্রেনেল এবং ম্যাট গেটজের মতো প্রভাবশালী ব্যক্তিরা সোচ্চার হওয়ায় বিষয়টি আন্তর্জাতিক পরিসরে গুরুত্ব পাচ্ছে। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর তাঁর বিশ্বস্ত মিত্ররা ইমরানের মুক্তির বিষয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে সমর্থন জুগিয়ে চলেছেন। পাকিস্তানের তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের নেতারা এটিকে ইমরানের মুক্তির জন্য আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করার সুযোগ হিসেবে দেখছেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের মিত্র রিচার্ড গ্রেনেল গত নভেম্বর মাসে একটি টুইট বার্তায় ইমরান খানের মুক্তির দাবি জানিয়ে বলেন, “পাকিস্তানের পরিস্থিতি নজিরবিহীন। মিথ্যা মামলায় ট্রাম্পের মতো একজন নেতা কারাগারে।” পোস্টটি সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্রুত ভাইরাল হয় এবং ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করে। এর পরও গ্রেনেলসহ রিপাবলিকান দলের বেশ কয়েকজন নেতা এ বিষয়ে আরও মন্তব্য করেন, যা পিটিআই কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ সৃষ্টি করে।
ইমরান খান ২০২২ সালে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে পাকিস্তানে রাজনৈতিক অস্থিরতা অব্যাহত রয়েছে। ইমরানের দাবি, তাঁর অপসারণের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা রয়েছে, যদিও ওয়াশিংটন বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বর্তমানে কারাবন্দী ইমরানকে নিয়ে ট্রাম্পের মিত্রদের এমন সক্রিয় ভূমিকা দুই দেশের মধ্যে নতুন সম্পর্কের ইঙ্গিত দিতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।
তবে পাকিস্তানের বর্তমান সরকার এবং কিছু বিশ্লেষক এ ধরনের উদ্যোগকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির অংশ বলেই মনে করছেন। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের মুখপাত্র রানা ইহসান আফজাল বলেছেন, “এটি কোনো রাষ্ট্রীয় অবস্থান নয়, বরং ব্যক্তিগত মতামত।” এদিকে পাকিস্তানের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইমরানের মুক্তির দাবিকে কেন্দ্র করে পিটিআইয়ের প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন। এর পর পাকিস্তান নিয়ে তাঁর প্রশাসনের অবস্থান কী হবে, তা নিয়ে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে ইমরান খানের মুক্তি ইস্যুতে ট্রাম্প প্রশাসনের কিছু ভূমিকা দেখা যেতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন।
ইমরান খানের মুক্তি নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠদের সক্রিয়তা পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের নতুন মাত্রা উন্মোচন করছে। এই উদ্যোগ একদিকে ইমরান খানের জন্য রাজনৈতিক সহায়তা তৈরি করতে পারে, অন্যদিকে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ককে জটিলও করতে পারে। এখন দেখার বিষয়, ট্রাম্প তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদে ইমরানের ইস্যুতে কী ধরনের ভূমিকা রাখবেন।