ডেস্ক রিপোর্ট ।।
টেসলার সিইও এবং বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব ইলন মাস্ক সম্প্রতি টুইটারে মন্তব্য করেছেন, “The Labour minister for child welfare shields the predators and their anti-corruption minister is corrupt.” তার এই মন্তব্য ব্রিটিশ লেবার পার্টি এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ব্রিটেনের ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক দুর্নীতির অভিযোগে পদত্যাগ করেছেন, যা ইলন মাস্কের টুইটকে আরও তাৎপর্যপূর্ণ করেছে।
টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তিনি তার পরিবার, বিশেষত তার খালা শেখ হাসিনার সঙ্গে আর্থিক লেনদেনে জড়িত ছিলেন। শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, যার মধ্যে রয়েছে বড় অবকাঠামো প্রকল্পে আর্থিক অনিয়ম। সমালোচকরা আরও অভিযোগ করেছেন যে টিউলিপ সিদ্দিক এবং তার পরিবারের নাম যুক্ত সম্পত্তি এবং আর্থিক অনিয়মের বিষয়গুলো ব্রিটিশ রাজনীতিতেও প্রভাব ফেলছে।

ইলন মাস্ক
টিউলিপ সিদ্দিক নিজেকে নির্দোষ দাবি করলেও তিনি পদত্যাগ করেছেন, উল্লেখ করে যে তার ভূমিকা সরকারে একটি “বাধা” সৃষ্টি করছিল। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার তার স্থলাভিষিক্ত হিসেবে এমা রেনল্ডসকে নিযুক্ত করেছেন।
শেখ হাসিনা, যিনি দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। তার পরিবার, বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উত্তরাধিকারীদের বিরুদ্ধে বিপুল অঙ্কের দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশ সরকার বর্তমানে শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা এবং শেখ পরিবারের অন্যান্য সদস্যের বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছে। এসব অভিযোগের মধ্যে রয়েছে সরকারি প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ এবং বিলিয়ন ডলারের বিদেশি সম্পদ অর্জনের অভিযোগ।

টিউলিপ সিদ্দিক
এই পুরো ঘটনাটি আন্তর্জাতিক মহলে আলোড়ন তুলেছে। ইলন মাস্কের টুইট সরাসরি ব্রিটেনের লেবার পার্টির কার্যক্রম সমালোচনা করেছে। তার মন্তব্যে উঠে এসেছে লেবার পার্টির নীতিনির্ধারণী ব্যবস্থায় দুর্নীতি এবং দ্বিচারিতা নিয়ে প্রশ্ন।
টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগ ব্রিটিশ রাজনীতিতে লেবার পার্টির ওপর চাপ বাড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের জনপ্রিয়তা এমনিতেই নিম্নমুখী ছিল, যা এই ঘটনা আরও অবনতির দিকে নিয়ে যেতে পারে। অন্যদিকে, বাংলাদেশের রাজনীতি আরও অস্থির হয়ে উঠছে। শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে উঠা দুর্নীতির অভিযোগ বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।
টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগ এবং শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বাংলাদেশের অবস্থান এবং ব্রিটেনের লেবার পার্টির নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এই ঘটনাগুলো ভবিষ্যতে কেমন প্রভাব ফেলবে তা সময়ই বলে দেবে।