বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ২৫, ২০২৫

রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও প্রার্থীদের জন্য আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স নীতিমালা জারি

নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা ও সহিংসতা প্রতিরোধে আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স ও সশস্ত্র রক্ষী নিয়োগে ‘নীতিমালা–২০২৫’ প্রকাশ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

by ঢাকাবার্তা
বাংলাদেশ সরকারের দাপ্তরিক সীলমোহর

স্টাফ রিপোর্টার ।। 

জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীদের জন্য আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স এবং সশস্ত্র রক্ষী (রিটেইনার) নিয়োগসংক্রান্ত একটি নীতিমালা প্রণয়ন করেছে সরকার। ‘রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও জাতীয় সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীদের অনুকূলে আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স ও রিটেইনার নিয়োগ নীতিমালা–২০২৫’ শীর্ষক নীতিমালাটি আজ সোমবার প্রকাশ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা এবং নির্বাচনকালীন সহিংসতা প্রতিরোধের লক্ষ্যে এই নীতিমালা প্রণয়ন ও জারি করা হয়েছে।

  • জাতীয় নির্বাচন ঘিরে আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স ও রিটেইনার নিয়োগে নতুন নীতিমালা
  • সরকার স্বীকৃত রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীরা সুবিধা পাবেন
  • নির্বাচন ফল ঘোষণার পর ১৫ দিন পর্যন্ত লাইসেন্স কার্যকর থাকবে
  • কেবল প্রকৃত নিরাপত্তাঝুঁকি থাকলেই রিটেইনার নিয়োগের অনুমতি
  • ভয়ভীতি বা রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারে অস্ত্র ও রিটেইনার ব্যবহার নিষিদ্ধ
  • একজন প্রার্থী বা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির জন্য সর্বোচ্চ একজন রিটেইনার নিয়োগ

নীতিমালা অনুযায়ী, রিটেইনার বলতে রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষায় নিয়োজিত ও অনুমোদিত সশস্ত্র ব্যক্তিকে বোঝানো হয়েছে।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, ‘রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ বলতে সরকার স্বীকৃত বর্তমান বা সাবেক উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক ব্যক্তিকে বোঝানো হয়েছে। আর ‘পদপ্রার্থী’ বলতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে মনোনয়নপত্র দাখিলকারী ব্যক্তিকে বোঝানো হয়েছে। এসব ব্যক্তি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ও রিটেইনার নিয়োগের সুবিধা পাবেন।

লাইসেন্স পেতে হলে আবেদনকারীকে সরকার স্বীকৃত রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হতে হবে অথবা ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পদপ্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হবে। পাশাপাশি উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ, প্রয়োজনে গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে যাচাইকৃত নিরাপত্তাঝুঁকি থাকতে হবে। আবেদনকারীর শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা এবং অস্ত্র সংরক্ষণের নিরাপদ ব্যবস্থা থাকতে হবে।
এই নীতিমালার আওতায় লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিদ্যমান নীতিমালা ও বিধান প্রযোজ্য হবে। তবে ব্যক্তিগত আয়কর প্রদানের শর্ত শিথিলযোগ্য থাকবে।

নীতিমালার আওতায় ইস্যু করা লাইসেন্সের মেয়াদ হবে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার তারিখ থেকে পরবর্তী ১৫ দিন পর্যন্ত। নির্ধারিত সময় শেষে লাইসেন্সটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল বলে গণ্য হবে।
তবে আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্সসংক্রান্ত অন্যান্য শর্ত পূরণ হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই সাময়িক লাইসেন্সকে সাধারণ লাইসেন্সে রূপান্তর করতে পারবে। মেয়াদোত্তীর্ণ বা বাতিল হওয়া লাইসেন্সের আওতায় কোনো আগ্নেয়াস্ত্র দখলে রাখলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, কেবল প্রকৃত নিরাপত্তাঝুঁকি থাকলেই রিটেইনার নিয়োগ অনুমোদন করা হবে। রাজনৈতিক কার্যক্রমে প্রভাব বিস্তার বা ভীতি প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে রিটেইনার নিয়োগ বা অনুমোদন দেওয়া যাবে না।
কোনো রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা পদপ্রার্থী লাইসেন্স পাওয়ার যোগ্য হলেও আগ্নেয়াস্ত্র ক্রয়ে অসমর্থ বা অনিচ্ছুক হলে, বৈধ লাইসেন্সধারী ও অস্ত্র পরিচালনায় সক্ষম এমন ব্যক্তিকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ রিটেইনার হিসেবে নিয়োগ দিতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে লাইসেন্স প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের অনুমোদন বাধ্যতামূলক।

রিটেইনার হতে হলে বাংলাদেশি নাগরিক হতে হবে এবং ন্যূনতম বয়স ২৫ বছর হতে হবে। তাকে অপরাধমুক্ত হতে হবে এবং পুলিশ ক্লিয়ারেন্স থাকতে হবে। আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হতে হবে—এ ক্ষেত্রে সশস্ত্র বাহিনী বা বাংলাদেশ পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত সদস্যরা অগ্রাধিকার পাবেন। পাশাপাশি সরকারি হাসপাতাল থেকে প্রদত্ত মেডিকেল ফিটনেস সনদ থাকতে হবে।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, একজন রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা পদপ্রার্থীর জন্য সর্বোচ্চ একজন রিটেইনার নিয়োগ দেওয়া যাবে। নির্ধারিত সময় শেষে রিটেইনারের মেয়াদও শেষ হবে।

এতে আরও বলা হয়েছে, রিটেইনারের অনুকূলে কোনো আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ইস্যু করা হবে না। রিটেইনার কেবল অস্ত্র বহন করবেন; অস্ত্রসংক্রান্ত সব দায়দায়িত্ব লাইসেন্সধারীর ওপর বর্তাবে।

নীতিমালার আওতায় আগ্নেয়াস্ত্র বহনের ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। অস্ত্র বহনের সময় সর্বদা লাইসেন্স ও অনুমোদনপত্র সঙ্গে রাখতে হবে। কাউকে ভয়ভীতি প্রদর্শন বা হয়রানির উদ্দেশ্যে অস্ত্র ব্যবহার করা যাবে না। নিরাপত্তার প্রয়োজন ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্যে লাইসেন্সপ্রাপ্ত অস্ত্র ব্যবহার নিষিদ্ধ।
লাইসেন্স বা লাইসেন্সভুক্ত অস্ত্র হস্তান্তর করা যাবে না এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্দেশ তাৎক্ষণিকভাবে পালন করা প্রত্যেক লাইসেন্সধারীর জন্য বাধ্যতামূলক।

You may also like

Publisher : Khaled Saifullah Jewel
Editor : Hamim Kefayat
15/1, Paridas Road, Banglabazar, Dhaka 1100, Bangladesh
Contact : +8801712813999,
Mail : news@dhakabarta.net