স্টাফ রিপোর্টার ।।
আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ও ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ডা. এনামুর রহমানকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার (২৬ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান রেজাউল করিম মল্লিক।
গত সেপ্টেম্বরে ক্ষমতার অপব্যবহার ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। দুদকের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়, ডা. এনামুর রহমান বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে প্রায় ৬ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। তাঁর নামে নগদ জমা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ ছাড়াও এনাম মেডিকেল হসপিটাল প্রাইভেট লিমিটেড, এনাম এডুকেশন অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ভিলেজ (প্রাইভেট) লিমিটেড এবং এনাম ক্যান্সার হসপিটাল লিমিটেডে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে।
এর আগে গত আগস্টে কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্র নিহতের ঘটনায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানসহ আওয়ামী লীগের ৩২১ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।

রাষ্ট্রতির সঙ্গে করমর্দনরত এনামুর রহমান, সঙ্গে তৎকালীন সেনাপ্রধান। ফাইল ফটো।
ডা. এনামুর রহমান একজন চিকিৎসক এবং হাসপাতাল ব্যবসায়ী। তিনি ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৯ আসন থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই আসনে জয়লাভ করেন। ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি শেখ হাসিনার চতুর্থ মন্ত্রিসভায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।
২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে অংশগ্রহণ করেন, তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইফুল ইসলামের কাছে পরাজিত হন।

শেখ হাসিনার সঙ্গে এনামুর রহমান। ফাইল ফটো
ডা. এনামুর রহমান সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। ১৯৮৯ সালে তিনি এনাম ক্লিনিক নামে একটি ছয় শয্যার ছোট ক্লিনিক চালু করেন। এটি প্রথমে ভাড়া বাসায় পরিচালিত হতো। পরে সরকারি চাকরি ছেড়ে ২০০৩ সালে এটি মেডিকেল কলেজে রূপান্তরিত হয় এবং এর নামকরণ করা হয় এনাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। ২০০৩-২০০৪ শিক্ষাবর্ষে ৫০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে এর প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়।
২০১৩ সালের রানা প্লাজা ভবন ধসে আহত গার্মেন্টস শ্রমিকদের এই হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছিল, যা প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়।