স্টাফ রিপোর্টার ।।
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থানের মেয়াদ আরও বাড়ানোর খবর পাওয়া গেছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যায়, মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত শেখ হাসিনা গত বছরের ৫ আগস্ট কূটনৈতিক পাসপোর্ট নিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। তবে, কূটনৈতিক পাসপোর্টের আওতায় বিনা ভিসায় বাংলাদেশি নাগরিকদের ভারতে অবস্থানের সীমা আইনত ৯০ দিন, যা ২০২৪ সালের নভেম্বরের শুরুতে শেষ হয়। এর পর থেকেই ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর ব্যবস্থা নেয় ভারত।
গণ-অভ্যুত্থানের পর ভারত পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যা, গুম, এবং অন্যান্য মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলা চলছে। অন্তর্বর্তী সরকার তাঁকে দেশে ফিরিয়ে বিচারের মুখোমুখি করতে ভারত সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানিয়েছে।
ভারতের হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত সরাসরি ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিয়েছে। স্থানীয় ফরেনার্স রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিসের (এফআরআরও) মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য না এলেও, তাদের এই পদক্ষেপের মাধ্যমে হাসিনার ভারতে অবস্থানের পথ আরও সুগম হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল বলেছেন, “শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ বিষয়ে বাংলাদেশের অনুরোধ পেয়েছি, তবে এ বিষয়ে এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।” বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একাধিকবার অনুরোধ করা হলেও ভারত বিষয়টি নিয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট বিভাগ গতকাল শেখ হাসিনার কূটনৈতিক পাসপোর্টসহ মোট ৯৭টি পাসপোর্ট বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের মুখপাত্র জানিয়েছেন, ক্ষমতাচ্যুত সরকার ও এর ঘনিষ্ঠদের বিচারের মুখোমুখি আনতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্তকে নিয়ে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েন বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারত হয়তো বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে নিজেকে দূরে রাখতে চাইছে, তাই প্রত্যর্পণের অনুরোধে সাড়া দিচ্ছে না।
উল্লেখ্য, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। তাঁকে দেশে ফিরিয়ে বিচারের সম্মুখীন করতে অন্তর্বর্তী সরকার ভারতের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।