স্টাফ রিপোর্টার ।।
দেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির পেছনে ইন্ধনদাতাদের সক্রিয় ভূমিকার কথা তুলে ধরেছেন সেনা সদরের মিলিটারি অপারেশনস ডিরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ ইন্তেখাব হায়দার খান। বৃহস্পতিবার ঢাকার সেনানিবাসে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ইন্ধনদাতাদের পরিচয় এখনই প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তবে তাদের উদ্দেশ্য ব্যক্তিগত কিংবা অন্য কোনো স্বার্থের হতে পারে। এরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইন্ধন ছড়িয়ে অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, যুগে যুগে ইন্ধনদাতারা ছিল এবং থাকবে। সাধারণ মানুষকে এদের প্রভাব থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানান তিনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো পোস্ট না বুঝে শেয়ার না করার পরামর্শ দেন এবং বলেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
চট্টগ্রাম আদালতের বিশৃঙ্খলা: সেনাবাহিনীর ভূমিকা প্রসঙ্গে
চট্টগ্রাম আদালতে আইনজীবী হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রশ্নের জবাবে কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান বলেন, এ ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্রিয়তার কারণে আরও বড় কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে আদালত প্রাঙ্গণে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি আরও ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়েছে।
মাতুয়াইলের ঘটনার প্রতিক্রিয়া
সম্প্রতি মাতুয়াইলের মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে হামলা, লুটপাট এবং ভাঙচুর নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কর্নেল ইন্তেখাব বলেন, প্রতিটি ঘটনা আলাদাভাবে বিচার করা উচিত। অপরাধীদের পাশাপাশি ইন্ধনদাতারাও সক্রিয় ছিল। তাদের উদ্দেশ্য দেশকে অস্থিতিশীল করা। তবে ছাত্রদের আচরণ এবং ইন্ধনের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
গোয়েন্দা তথ্যের ঘাটতি নেই
দেশে সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্যের ঘাটতি নেই বলে জানান ইন্তেখাব। তিনি বলেন, সেনাবাহিনী এবং অন্যান্য বাহিনী যৌথভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। অনেক ঘটনা আগেভাগেই গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছে।
অবৈধ কার্যক্রম রোধে সেনাবাহিনীর কার্যক্রম
ব্রিফিংয়ে কর্নেল ইন্তেখাব জানান, গত দুই সপ্তাহে সেনাবাহিনী ২৪টি অবৈধ অস্ত্র ও ৩৬৫টি গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। এ ছাড়া মাদক-সংশ্লিষ্ট অপরাধে ২২৮ জন এবং বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ১,৩২৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আহতদের চিকিৎসা ও সহযোগিতা
আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালনকালে আহত ৩,৪৩০ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানান ইন্তেখাব। গুরুতর আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হয়েছে।
সেনাবাহিনীর ত্যাগ ও দায়িত্ব
গত জুলাই থেকে দায়িত্ব পালনের সময় ১ জন সেনা কর্মকর্তা নিহত এবং ১২২ জন সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানান ইন্তেখাব। তিনি বলেন, দেশের স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় রাখতে সেনাবাহিনী দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।