ডেস্ক রিপোর্ট ।।
ক্রিকেটপ্রেমীরা আবারও দেখলেন সেই চিরচেনা দৃশ্য—একজন ফিল্ডার বাজপাখির মতো ডাইভ দিয়ে বাউন্ডারি থেকে বল ঠেকাচ্ছেন। প্রথম নজরে অনেকেই চিনতে পারেননি, কিন্তু ক্যামেরা যখন ক্লোজ-আপ নিল, তখন স্পষ্ট হলো—এ যে জন্টি রোডস! ৫৫ বছর বয়সেও সেই ক্ষিপ্রতা, সেই আগ্রাসন, সেই নিখুঁত ল্যান্ডিং! ঘটনাটি ঘটেছে ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার্স লিগে দক্ষিণ আফ্রিকা-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে।

জন্টি রোডস
জন্টির এই ফিল্ডিং দেখে নব্বইয়ের দশকের ক্রিকেটপ্রেমীদের স্মৃতির ঝাঁপি যেন খুলে গেল। বিশ্ব ক্রিকেটের ইতিহাসে ফিল্ডিংয়ের এক অবিচ্ছেদ্য নাম জন্টি রোডস। নব্বইয়ের দশকে তাঁকে বলা হতো ‘ফ্লাইং বার্ড’। শেন ওয়াটসনের জোরালো শটে বল বাউন্ডারির দিকে গড়াচ্ছিল, ঠিক তখনই রোডস লং অফ থেকে দৌড়ে এসে বাজপাখির মতো ডাইভ দিয়ে বল লুফে নিলেন। ক্ষিপ্রতায় কিছুটা ভাটা পড়লেও সেই সাবলীলতা রয়ে গেছে অটুট।
ক্রিকেট ইতিহাসের পাতায় রোডসের নাম চিরস্মরণীয় হয়ে আছে মূলত ১৯৯২ বিশ্বকাপের সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তের জন্য। পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে ইনজামাম-উল-হককে রান আউট করতে জন্টি যে ডাইভ দিয়েছিলেন, তা আজও ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা ফিল্ডিং মুহূর্তগুলোর একটি। তখনই বিশ্ব প্রথম বুঝেছিল—এই খেলোয়াড় শুধুমাত্র ব্যাট বা বলেই নন, ফিল্ডিং দিয়েও কিংবদন্তি হয়ে উঠতে পারেন!

ইনজামামকে রান আউট করার সেই অপার্থিব মুহূর্ত
প্রশ্ন জাগতে পারে, ৫৫ বছর বয়সে এসেও কীভাবে এমন ফিটনেস ধরে রেখেছেন জন্টি? অন্য অনেক তারকার মতো অবসর নিয়ে আরামে জীবন না কাটিয়ে তিনি ফিটনেস ধরে রেখেছেন, মাঠে নেমেছেন, এমনকি ডাইভও দিচ্ছেন! ফিল্ডিং তাঁর রক্তে মিশে আছে, মাঠ তাঁর জন্য শুধু খেলার স্থান নয়, বরং তা এক শিল্পগ্যালারির মতো।

ইনজামামকে রান আউট করার সেই অপার্থিব মুহূর্ত
এই বয়সেও জন্টির এমন পারফরম্যান্স নতুন প্রজন্মের খেলোয়াড়দের জন্য এক অনুপ্রেরণা। ফিল্ডিং শুধু প্রতিভার ওপর নির্ভরশীল নয়, কঠোর পরিশ্রম, নিষ্ঠা ও আত্মনিবেদনও প্রয়োজন। জন্টির এই ফিল্ডিং দেখে বোঝা যায়, খেলা ছেড়ে দিলেও প্রকৃত খেলোয়াড়দের স্পিরিট কখনোই হারিয়ে যায় না। তিনি আজও প্রমাণ করছেন—বয়স শুধুই একটি সংখ্যা!
ক্রিকেট বিশ্বে জন্টির নাম চিরকাল থাকবে একজন ফিল্ডিং লিজেন্ড হিসেবে। আর তাঁর ডাইভ? সেটি থেকে যাবে চিরসবুজ এক কবিতার মতো, যা ক্রিকেটপ্রেমীদের মন ছুঁয়ে যাবে যুগে যুগে!