রবিবার, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৫

বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে ২০ বিলিয়ন ডলার পাচ্ছে পাকিস্তান

by ঢাকাবার্তা
বিশ্বব্যাংক

ডেস্ক রিপোর্ট ।। 

বিশ্বব্যাংক পাকিস্তানের জন্য ২০ বিলিয়ন ডলারের একটি ঋণ প্যাকেজ অনুমোদনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এটি বিশ্বব্যাপী প্রথম ১০ বছরের বৃহৎ কর্মসূচি, যা রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রভাব থেকে প্রকল্পগুলোকে সুরক্ষা দেবে এবং শুধুমাত্র ছয়টি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে মনোযোগ দেবে।

এই ক্ষেত্রগুলোতে পাকিস্তানের রাজনৈতিক মহল থেকে ব্যাপক সমর্থন রয়েছে এবং ২০২৫ থেকে ২০৩৫ সালের মধ্যে অন্তত তিনটি সাধারণ নির্বাচনের সময়কালেও সরকারের পরিবর্তনে প্রভাবিত হবে না বলে আশা করা হচ্ছে।

‘পাকিস্তান কান্ট্রি পার্টনারশিপ ফ্রেমওয়ার্ক ২০২৫-৩৫’ শিরোনামের এই কর্মসূচি মূলত স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো অবহেলিত কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোর সামাজিক সূচক উন্নত করার লক্ষ্য নিয়ে পরিচালিত হবে। পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার পর এই কর্মসূচি তৈরি করা হয়েছে।

একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পাকিস্তান হলো প্রথম দেশ যেখানে বিশ্বব্যাংক ১০ বছরের অংশীদারিত্ব কৌশল প্রয়োগ করতে যাচ্ছে।

বিশ্বব্যাংকের খসড়া নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, “২০২৫ থেকে ২০৩৫ অর্থবছরের জন্য মোট ঋণের পরিমাণ প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার।” এই ‘কান্ট্রি পার্টনারশিপ ফ্রেমওয়ার্ক’ আগামী ১৪ জানুয়ারি বিশ্বব্যাংকের বোর্ডে অনুমোদিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অনুমোদনের পর দক্ষিণ এশিয়ার জন্য বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজার ইসলামাবাদ সফর করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

১০ বছরের এই পরিকল্পনার লক্ষ্য ছয়টি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে উন্নতি করা। এর মধ্যে শিশুর অপুষ্টি ৩০% হ্রাস এবং শিক্ষার অভাব ৬০%-এর নিচে নামানো অন্তর্ভুক্ত।

২০ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে, ১৪ বিলিয়ন ডলার আসবে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সমিতি (আইডিএ) থেকে এবং বাকি ৬ বিলিয়ন ডলার আসবে আন্তর্জাতিক পুনর্গঠন ও উন্নয়ন ব্যাংক (আইবিআরডি) থেকে। তবে এই ঋণগুলোর প্রাপ্তি পাকিস্তানের পারফরম্যান্স এবং আর্থিক স্থিতিশীলতার ওপর নির্ভর করবে।

নতুন কাঠামোটি বড় প্রকল্পগুলোর জন্য পরিকল্পিত, যেখানে ছোট আকারের পাইলট প্রকল্প কম থাকবে।

বিশ্বব্যাংক ছয়টি ক্ষেত্রে মনোযোগ দেবে, কিন্তু পরিবহন, বিদ্যুৎ সংযোগ, টেলিকম, খনি এবং নগর অবকাঠামোর মতো কম প্রভাবশালী ক্ষেত্র থেকে সরে আসবে। এসব ক্ষেত্রে বিনিয়োগ সহায়তা দেবে আইএফসি এবং এমআইজিএ।

বিশ্বব্যাংকের নতুন কৌশল সংক্ষিপ্তমেয়াদি আর্থিক সমন্বয়ের পরিবর্তে দীর্ঘমেয়াদি এবং টেকসই প্রকল্পে বিনিয়োগকে অগ্রাধিকার দেবে।

পাকিস্তানের আর্থিক স্থিতিশীলতার অভাব এবং স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও জনসেবায় বিনিয়োগের নিম্ন স্তরের কারণে শিশু মৃত্যু, অপুষ্টি এবং শিক্ষার অভাবের মতো সমস্যা এখনও প্রকট।

ছয়টি ক্ষেত্র:

১. শিশুর অপুষ্টি হ্রাস: মায়েদের ও শিশুদের পুষ্টি ও স্বাস্থ্য সেবা উন্নয়নের মাধ্যমে শিশুর অপুষ্টি কমানো।
২. শিক্ষার অভাব হ্রাস: বিশেষ করে মেয়েদের জন্য স্কুলে ভর্তি ও উপস্থিতি নিশ্চিত করা।
৩. জলবায়ু প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলা ও কৃষি ক্ষেত্রে নিরাপত্তা।
৪. বায়ু দূষণ হ্রাস: নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদন এবং কার্বন নিঃসরণ কমানো।
৫. আর্থিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি: রাজস্ব সংগ্রহ ও ব্যয় পরিকল্পনা উন্নত করা।
৬. বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি: উৎপাদনশীলতা উন্নত করতে বেসরকারি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করা।

এই কর্মসূচি ১০ বছরের মধ্যে পাকিস্তানে আর্থসামাজিক উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

You may also like

প্রকাশক : মানজুর এলাহী

সম্পাদক : হামীম কেফায়েত

ব‌ইচিত্র পাবলিশার্স
প্যারিদাস রোড, বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০
যোগাযোগ : +8801712813999
ইমেইল : news@dhakabarta.net