স্টাফ রিপোর্টার ।।
জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী সবাইকে গণপরিষদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বাহাত্তরের সংবিধানকে ‘মুজিববাদী একদলীয় সংবিধান’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, এই সংবিধান থেকে বের হয়ে বহুদলীয় সংবিধান রচনার দিকে এগিয়ে যেতে হবে। কেউ বিচার ও সংস্কারের প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করতে চাইলে তার বিরুদ্ধে প্রস্তুত থাকতে হবে। তিনি বলেন, ‘রক্ত আমরা দিয়েছি, আরও দেব, বাংলাদেশের যাত্রা অব্যাহত থাকবে ইনশা আল্লাহ।’
আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘মার্চ ফর ইউনিটি অ্যান্ড জাস্টিস’ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। কর্মসূচিটি আয়োজন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। তারা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গণহত্যার বিচার, রাষ্ট্রসংস্কার ও নাগরিক অধিকারের দাবিতে এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর দীর্ঘ লড়াই ও ত্যাগকে সম্মান করলেও, গত ৫৩ বছরে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস হওয়ার বিষয়টি এড়ানো যায় না। করের টাকা বিদেশে পাচার এবং মাতৃভূমিকে বিদেশি শক্তির প্রভাব থেকে রক্ষা করতে বহুদলীয় সংবিধানের বিকল্প নেই। তিনি আরও বলেন, ‘চব্বিশের বাঘ ও বাঘিনীদের হাত ধরেই নতুন যাত্রা ও সূর্যোদয় হবে।’
তিনি বলেন, বাহাত্তরের সংবিধানের মাধ্যমে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা অসম্ভব। গণপরিষদের মাধ্যমে নতুন সংবিধান রচনার যে সুযোগ এসেছে, সেটি কাজে লাগাতে হবে। যারা এতে বাধা দেবে, তাদের শেখ হাসিনার পরিণতির দিকে লক্ষ্য রাখার আহ্বান জানান তিনি।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, আগামীর বাংলাদেশের সংকট সমাধানের জন্য গণপরিষদ নির্বাচনের দিকে যেতে হবে। তিনি বলেন, এমন একটি সংবিধান চাই, যা বিদেশি শক্তির হস্তক্ষেপ মুক্ত হবে এবং কোনো ফ্যাসিস্ট শক্তি মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না।
কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য তারিকুল ইসলাম বলেন, জুলাই বিপ্লবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে শেখ হাসিনার মসনদ কেঁপে উঠেছিল। এখনো কেন ছাত্ররা রাজপথে আছে, সেই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা শেখ হাসিনার পতনের পাশাপাশি ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ চাই। শেখ হাসিনার পতনের পর আংশিক বিজয় অর্জিত হয়েছে, চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়নি।’
এই কর্মসূচিতে বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বক্তব্য দেন। তারা জুলাই অভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার পরও তাদের যথাযথ মূল্যায়ন না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।