স্টাফ রিপোর্টার ।।
লেখক, কবি ও মানবাধিকারকর্মীদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ‘পেন বাংলাদেশ’-এর ২০২৫-২০২৭ মেয়াদের জন্য নতুন নির্বাহী কমিটি গঠিত হয়েছে। শনিবার, ১২ জুলাই, সংগঠনটির বার্ষিক সাধারণ সভা ও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত নতুন কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সাহিত্যিক অধ্যাপক ড. সামসাদ মোর্তুজা এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন খ্যাতনামা কবি জাহানারা পারভীন।
নতুন কমিটিতে সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন পারভেজ হোসেন, মুহম্মদ মুহসিন ও শামীম রেজা। যুগ্ম সম্পাদক হয়েছেন হামিম কামরুল হক ও মহসিন হাবীব। কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন লাভলী তালুকদার। প্রচার সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন শরাফত হোসেন এবং অফিস সম্পাদক হয়েছেন জাহিদ সোহাগ।
কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন সাকিরা পারভীন, মুহাম্মদ মহিউদ্দিন, ড. সুরাইয়া ফারজানা হাসান, শাহেদ কায়েস এবং ওয়াসীম পলাশ।
পেন ইন্টারন্যাশনালের এই বাংলাদেশ শাখাটি মূলত গড়ে উঠেছে ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতায়। দেশভাগের পর ১৯৪৮ সালে পাকিস্তান পেন নামে উপমহাদেশে এর যাত্রা শুরু হয়, যার সভাপতি ছিলেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ এবং সাধারণ সম্পাদক ছিলেন সৈয়দ আলী আহসান।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭১ সালে সংগঠনটির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘পেন বাংলাদেশ’। এরপর থেকে এটি দেশের লেখক, কবি ও মানবাধিকারকর্মীদের মধ্যে সাহিত্যিক আদান-প্রদান, মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা এবং মানবিক মূল্যবোধ জাগিয়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
পেন ইন্টারন্যাশনাল হলো একটি বেসরকারি বৈশ্বিক সংগঠন, যার পূর্ণরূপ হলো Poets, Essayists, Novelists। এটি ১৯২১ সালে ইংল্যান্ডের লন্ডনে নোবেলজয়ী কবি জন গ্যালসওয়ার্দির নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্যদের মধ্যে ছিলেন জোসেফ কনরাড, জর্জ বার্নার্ড শ’ এবং এইচজি ওয়েলস-এর মতো খ্যাতিমান সাহিত্যিকরা।
পেন ইন্টারন্যাশনালের লক্ষ্য হলো বিশ্বব্যাপী সাহিত্যচর্চা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা এবং লেখকদের পারস্পরিক সহযোগিতা ও বৌদ্ধিক সংযোগ বৃদ্ধি। বর্তমানে বিশ্বের ১০০টিরও বেশি দেশে এর শাখা রয়েছে।
পেন ইন্টারন্যাশনাল বিশ্বজুড়ে লেখকদের ওপর ঘটে যাওয়া নিপীড়ন, গ্রেপ্তার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়া এটি পারস্পরিক সাহিত্যিক সংযোগ ও বিশ্ব সংস্কৃতির বিকাশে নিরলস কাজ করছে।
পেন বাংলাদেশের নতুন কমিটি এই ঐতিহ্য ও দায়িত্ববোধের ধারাবাহিকতায় দেশের সাহিত্যের মুক্ত ও স্বাধীন বিকাশে কাজ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।