সবজান্তা সমশের ।।
সরিষা তেল বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রান্নার প্রধান উপাদান হিসেবে ব্যবহার হলেও, যুক্তরাষ্ট্রে এটি খাদ্যতালিকায় নিষিদ্ধ। এর মূল কারণ তেলের মধ্যে থাকা একটি রাসায়নিক উপাদান, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
১৯৫০-এর দশকে সরিষা তেলের উপাদান নিয়ে গবেষণা শুরু হয়। পরবর্তীতে ১৯৮৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের Food and Drug Administration (FDA) সরিষা তেলকে “unsafe for human consumption” ঘোষণা করে। এর পর থেকে এটি খাদ্যতালিকার বাইরে রাখা হয়েছে।
নিষিদ্ধের কারণ:
১. এরুকিক অ্যাসিডের উপস্থিতি:
সরিষা তেলে এরুকিক অ্যাসিড নামক একধরনের ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে।
গবেষণায় দেখা গেছে, এরুকিক অ্যাসিডের উচ্চমাত্রা হৃদযন্ত্রে ফ্যাটি জমা তৈরি করে, যা কার্ডিওমায়োপ্যাথি (হৃদপেশীর দুর্বলতা) এবং অন্যান্য হৃদরোগ সৃষ্টি করতে পারে।
২. স্বাস্থ্যঝুঁকি:
সরিষার তেল নিয়মিত বা অতিরিক্ত গ্রহণের ফলে লিভার ও হার্টের কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে।
শিশুদের জন্য এটি বিশেষত ক্ষতিকর, কারণ তাদের শরীরে এই অ্যাসিডের বিপাক ঘটানোর ক্ষমতা কম।
৩. ভেজালের আশঙ্কা:
গবেষণায় দেখা গেছে, বাজারে বিক্রি হওয়া সরিষার তেলে প্রায়শই ভেজাল মিশ্রিত থাকে। এতে বিষাক্ত উপাদান থাকার আশঙ্কা থাকে, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি আরও বাড়ায়।
ব্যবহারের সীমাবদ্ধতা:
যুক্তরাষ্ট্রে সরিষা তেল শুধুমাত্র ম্যাসাজ তেল, চিকিৎসা কার্যক্রম, বা ধর্মীয় উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার জন্য অনুমোদিত। খাদ্যতালিকায় এর ব্যবহার আইনত দণ্ডনীয়।
বিকল্প প্রস্তাবনা:
যুক্তরাষ্ট্রে ক্যানোলা তেল সরিষার তেলের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি মূলত সরিষার প্রজাতির ফসল থেকে তৈরি এবং এতে এরুকিক অ্যাসিডের মাত্রা অনেক কম।
উপসংহার:
যুক্তরাষ্ট্রে সরিষার তেল নিষিদ্ধ করার মূল কারণ জনস্বাস্থ্যের প্রতি সুরক্ষা নিশ্চিত করা। যদিও এটি অনেক দেশের খাদ্যসংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ, স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণে এর বিকল্প পণ্য ব্যবহারে জোর দেওয়া হয়।